বাংলাদেশ

মতামত

খেলা

বিনোদন

জীবনযাপন

তারুণ্য

কিড জোন

অন্যান্য

রেস-জেন্ডার

ফ্যাক্ট চেক

স্বাস্থ্য

আন্তর্জাতিক

শিক্ষা

অর্থ-বাণিজ্য

বিজ্ঞান-প্রযুক্তি

যুক্তরাষ্ট্রে এশীয়বিদ্বেষ ঠেকাতে ঐতিহাসিক আইন কার্যকর

  •    
  • ২১ মে, ২০২১ ১১:৪০

বিলটি স্বাক্ষরের সময় হোয়াইট হাউজে উপস্থিত ছিলেন ৬০ জনের বেশি আইনপ্রণেতা। করোনাভাইরাস মহামারির কারণে সামাজিক দূরত্ব ও স্বাস্থ্যবিধির নিয়ম বহাল থাকার মধ্যে এত আইনপ্রণেতা এই প্রথম বাইডেনের সঙ্গে হোয়াইট হাউজে কোনো আনুষ্ঠানিকতায় যোগ দিলেন।

যুক্তরাষ্ট্রে এশীয়দের বিরুদ্ধে বিদ্বেষ ঠেকানোর বিলে স্বাক্ষর করেছেন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন।

তার অনুমোদনের মধ্য দিয়ে স্থানীয় সময় বৃহস্পতিবার আইন হিসেবে কার্যকর হলো ‘অ্যান্টি-এশিয়ান অ্যান্ড প্যাসিফিক আইল্যান্ডার্স’ (এএপিআই) বিলটি।

গত মঙ্গলবার কংগ্রেসের নিম্নকক্ষ প্রতিনিধি পরিষদে ৩৬৪-৬২ এবং এর আগে এপ্রিলে উচ্চকক্ষ সিনেটে ৯৪-১ ভোটে পাস হয় বিলটি।

বার্তা সংস্থা এপির প্রতিবেদনে বলা হয়, বিলে ব্যাপক সমর্থন দেয়ায় ডেমোক্র্যাটিক ও রিপাবলিকান পার্টির আইনপ্রণেতাদের সাধুবাদ জানান বাইডেন।

জাতিবিদ্বেষ ও ঘৃণার বিরুদ্ধে লড়াইয়ে জাতি ঐক্যবদ্ধ হয়েছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘আজকের যুক্তরাষ্ট্র নিয়ে আমি গর্বিত।’

বিলটি স্বাক্ষরের সময় হোয়াইট হাউজে উপস্থিত ছিলেন ৬০ জনের বেশি আইনপ্রণেতা। করোনাভাইরাস মহামারির কারণে সামাজিক দূরত্ব ও স্বাস্থ্যবিধির নিয়ম বহাল থাকার মধ্যে এত আইনপ্রণেতা এই প্রথম বাইডেনের সঙ্গে হোয়াইট হাউজে কোনো আনুষ্ঠানিকতায় যোগ দিলেন।

গত এক বছরে যুক্তরাষ্ট্রে এশীয় আমেরিকান ও প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলের মানুষদের প্রতি বিপুলসংখ্যক বিদ্বেষপ্রসূত অপরাধের অভিযোগ পেয়েছে পুলিশ। এশীয় বংশোদ্ভূতদের বিরুদ্ধে কট্টর জাতীয়তাবাদী মনোভাব বেড়েছে মূলত করোনাভাইরাস মহামারির মধ্যে।

আইনশৃঙ্খলা বাহিনী ও এশীয় আমেরিকানদের অধিকারকর্মীদের মতে, যুক্তরাষ্ট্রের সাবেক প্রেসিডেন্ট ডনাল্ড ট্রাম্প চীনের ওপর করোনাভাইরাস মহামারির দায় চাপাতে শুরু করেন। তার ও দলের অনেক রিপাবলিকান রাজনীতিকের বক্তব্যের প্রভাবে এশীয় আমেরিকানদের চেপে বসে কট্টর জাতীয়তাবাদ।

হয়রানি থেকে শুরু করে রক্তক্ষয়ী হামলারও শিকার হয়েছেন এশিয়া ও প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলের আমেরিকানরা।

মহামারির এক বছরে এ ধরনের ঘটনা ছয় গুণ বেড়েছে বলেও জানিয়েছেন যুক্তরাষ্ট্রের ভাইস প্রেসিডেন্ট, কৃষ্ণাঙ্গ ও ভারতীয় বংশোদ্ভূত নারী কমলা হ্যারিস।

বিশেষ করে চলতি বছরের মার্চে জর্জিয়ায় এশীয় বংশোদ্ভূত ছয় নারীকে গুলি করে হত্যার পর এ বিষয়ে নড়েচড়ে বসে প্রশাসন।

সুনির্দিষ্ট আইন না থাকায় বিদ্বেষপ্রসূত অপরাধের বিচার এতদিন বেশ কঠিন ছিল যুক্তরাষ্ট্রে। ছিল না এ ধরনের ঘটনায় প্রশাসনের করণীয় সম্পর্কে তেমন কোনো নির্দেশনা বা আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর জন্য বিশেষ কোনো প্রশিক্ষণ।

এ অবস্থায় নতুন আইনের ফলে দেশটিতে এশীয়বিরোধী বিদ্বেষপ্রসূত অপরাধ ঘটলে ব্যবস্থা নিতে পারবে যুক্তরাষ্ট্রের বিচার বিভাগ।

কোন প্রেক্ষাপটে ঐতিহাসিক এ আইন

পর্যবেক্ষক সংস্থা স্টপ এএপিআই হেটের তথ্য অনুযায়ী, ২০২০ সালের মার্চ থেকে ২০২১ সালের ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত যুক্তরাষ্ট্রে তিন হাজার ৭৯৫টি বিদ্বেষপ্রসূত অপরাধের ঘটনা ঘটেছে, যা ১০ বছরে সর্বোচ্চ।

যুক্তরাষ্ট্রের এশীয় আমেরিকান জনগোষ্ঠীর বড় অংশের বাস ক্যালিফোর্নিয়া ও নিউ ইয়র্কে। দুটি অঙ্গরাজ্যেই এশীয় বংশোদ্ভূতদের প্রতি সহিংস আচরণের প্রবণতা সম্প্রতি উদ্বেগজনক হারে বেড়েছে।

নিউ ইয়র্কের স্থানীয় আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর তথ্য অনুযায়ী, ২০২০ সালে সেখানে বিদ্বেষপ্রসূত অপরাধের হার ছিল আগের বছরের তুলনায় নয় গুণ বেশি।

ক্যালিফোর্নিয়ায় মোট জনগোষ্ঠীর ১৫ শতাংশ, অর্থাৎ ৬০ লাখের বেশি এশীয় আমেরিকান। অঙ্গরাজ্যটিতে করোনাভাইরাসে প্রাণহানি অর্ধলাখ ছাড়িয়েছে, যা অনেক দেশের তুলনায়ও বেশি।

এমন পরিস্থিতিতে ২০২০ সালের মার্চ থেকে মে মাস পর্যন্ত ৩৪ কাউন্টির অঙ্গরাজ্যে করোনা সংশ্লিষ্ট আট শতাধিক বিদ্বেষপ্রসূত অপরাধের অভিযোগ নথিভুক্ত করেছে পুলিশ।

শুধু অরেঞ্জ কাউন্টিতেই বিদ্বেষপ্রসূত অপরাধের হার এক হাজার ২০০ শতাংশ বেড়েছে বলে জানিয়েছে সেন্টার ফর দ্য স্টাডি অফ হেইট অ্যান্ড এক্সট্রিমিজম। লস অ্যাঞ্জেলেসে এ হার বেড়েছে ১১৫ শতাংশ।

অকল্যান্ডে চীনা বংশোদ্ভূত সংখ্যাগরিষ্ঠ এলাকাগুলোতে বিদ্বেষপ্রসূত অপরাধের কারণে টহল বাড়ানোসহ বাড়তি ব্যবস্থা নিতে হয়েছে পুলিশকে।

এমন পরিস্থিতিতে হয়রানির অনেক ঘটনা নিয়ে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে সরব হন প্রখ্যাত অনেক তারকা।

এশীয় আমেরিকান অধিকারকর্মীদের অনেকে পরিস্থিতির জন্য সরাসরি সাবেক প্রেসিডেন্ট ডনাল্ড ট্রাম্পকে দায়ী করেছেন। মহামারির শুরু থেকে ‘চীনা ভাইরাস’, ‘কুং ফ্লু’ এমন নানা ব্যাঙ্গাত্মক শব্দ ব্যবহার করে তিনি বিদ্বেষ উসকে দিয়েছেন বলে রয়েছে অভিযোগ।

জানুয়ারিতে ক্ষমতায় বসেই এ ধরনের শব্দের প্রয়োগ নিষিদ্ধে নির্বাহী আদেশ জারি করেন প্রেসিডেন্ট বাইডেন।

এ বিভাগের আরো খবর