যুক্তরাষ্ট্রে কৃষ্ণাঙ্গ জর্জ ফ্লয়েড হত্যা মামলায় নতুন করে বিচারের আবেদন জানিয়েছেন দোষী সাব্যস্ত হওয়া শ্বেতাঙ্গ সাবেক পুলিশ কর্মকর্তা ডেরেক শভিনের আইনজীবী।
আদালতের রায়ের দুই সপ্তাহ পর স্থানীয় সময় মঙ্গলবার আইনজীবী এরিক নেলসন এই আবেদন করেন বলে আল জাজিরার প্রতিবেদনে জানানো হয়েছে।
যুক্তরাষ্ট্রের মিনেসোটা অঙ্গরাজ্যের মিনিয়াপোলিস ডিস্ট্রিক্ট কোর্টের বিচারক পিটার কাহিলকে দেয়া আবেদনপত্রে নেলসন বলেন, ডেরেক শভিন ন্যায়বিচার থেকে বঞ্চিত হয়েছেন। আদালতের রায় আইনের সঙ্গে সংগতিপূর্ণ ছিল না।
তিনি বলেন, ‘বিচার শুরুর আগে ও পরে মিডিয়া প্রচারণা এত বেশি বিস্তৃত ও প্রভাব বিস্তারকারী ছিল যে, কাঠামোগত পরাজয় ঠেকানো যায়নি।’
২০ এপ্রিল শভিনকে দোষী সাব্যস্ত করে রায় দেয় মিনিয়াপোলিসের একটি আদালত। ওই রায়কে স্বাগত জানান অধিকারকর্মী, দেশটির প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন ও প্রভাবশালী রাজনীতিকরা।
তাদের ভাষ্য, যুক্তরাষ্ট্রে বর্ণবাদের বিরুদ্ধে লড়াইয়ে ওই রায় গুরুত্বপূর্ণ।
তিন সপ্তাহ ধরে ৪৫ প্রত্যক্ষদর্শীর সাক্ষ্য এবং আদালতে উপস্থাপিত ভিডিও ফুটেজসহ অন্যান্য প্রমাণ বিচার-বিশ্লেষণ শেষে শভিনের বিরুদ্ধে আনা তিনটি অভিযোগের সত্যতা পায় ১২ জুরি।
সাজা ঘোষণা না হওয়া পর্যন্ত পুলিশের হেফাজতে থাকবেন শভিন। জুনে ৪৫ বছর বয়সী সাবেক এই পুলিশ কর্মকর্তাকে সাজা দেয়ার কথা।
বিচার চলাকালে নেলসন আদালতকে বলেছিলেন, বিচারকে ঘিরে বিভিন্ন সংবাদমাধ্যমের প্রতিবেদন জুরিদের প্রভাবিত করতে পারে। একই সঙ্গে রায়ের পর কী হতে পারে, তা নিয়ে রাজনীতিকদের মন্তব্য আদালতের রায়ে ভূমিকা রাখতে পারে।
নেলসনের বক্তব্য সে সময় প্রত্যাখ্যান করেন বিচারক কাহিল। তবে সংবাদমাধ্যমের প্রতিবেদন এড়াতে জুরিদের প্রতি আহ্বান জানিয়েছিলেন তিনি।
গত বছরের ২৫ মে ৪৬ বছর বয়সী ফ্লয়েডকে জাল টাকা ব্যবহারের অভিযোগে গ্রেপ্তার করে মিনিয়াপলিস পুলিশ।
গ্রেপ্তারের সময় ফ্লয়েডকে রাস্তায় শুইয়ে তার ঘাড়ে প্রায় ৯ মিনিট চেপে বসেন শভিন। ওই সময় বারবার শ্বাস নিতে কষ্ট হচ্ছে বলার পরও ওই পুলিশ কর্মকর্তা ফ্লয়েডের ঘাড় থেকে নামেননি। একপর্যায়ে তার মৃত্যু হয়।
ওই ঘটনার ফুটেজ সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়লে বিক্ষোভে ফুঁসে ওঠে যুক্তরাষ্ট্রের হাজারও মানুষ। শুরু হয় বর্ণবাদবিরোধী বিক্ষোভ, যা যুক্তরাষ্ট্রের সীমা পেরিয়ে ছড়িয়ে পড়ে ইউরোপেও।
ফ্লয়েডকে হত্যার অভিযোগে শ্বেতাঙ্গ পুলিশ কর্মকর্তা শভিনসহ চারজনের বিরুদ্ধে মামলা করে তার পরিবার।