করোনাভাইরাস সংক্রমণের কেন্দ্রভূমিতে পরিণত হওয়া ভারত থেকে নাগরিকেরা দেশে ফিরলে জরিমানা থেকে শুরু করে কারাদণ্ড হতে পারে।
স্থানীয় সময় শনিবার এমন ঘোষণা দেয় অস্ট্রেলিয়া সরকার।
এ নিয়ে অস্ট্রেলিয়ায় সমালোচনার ঝড় বইছে। সমালোচকদের ভাষ্য, এ ধরনের পদক্ষেপ ‘বর্ণবাদী’ ও মানবাধিকারের লঙ্ঘন।
বিবিসির প্রতিবেদনে বলা হয়, অস্ট্রেলিয়ার কোনো নাগরিক ভারত থেকে ফিরলে তার জরিমানা করা হবে। এমনকি ওই ব্যক্তির পাঁচ বছর পর্যন্ত কারাদণ্ড হতে পারে। সোমবার থেকে এ দণ্ডাদেশ কার্যকর হবে।
এর আগে ভারত থেকে সব ধরনের ফ্লাইট ১৫ মে পর্যন্ত বন্ধের ঘোষণা দেয় অস্ট্রেলিয়া।
চিকিৎসাবিষয়ক বিশেষজ্ঞ, আইনি সংগঠন, রাজনীতিকসহ অন্যান্যরা অস্ট্রেলিয়া সরকারের ভারতফেরত নাগরিকদের জরিমানা বা কারাদণ্ড সংক্রান্ত পদক্ষেপের প্রবল নিন্দা জানাচ্ছে।
অস্ট্রেলিয়ার গ্রিনস দলের সিনেটর মেহরিন ফারুকি টুইটবার্তায় বলেন, ‘এ পদক্ষেপ ভয়াবহ ও বর্ণবাদী।’
দেশটির রক্ষণশীল মিডিয়া ভাষ্যকার অ্যান্ড্রু বল্ট বলেন, ‘এ নীতি খুবই সংকীর্ণ ও অযৌক্তিক। আমিও একে বর্ণবাদীই বলব।’
অবশ্য দেশটির প্রধানমন্ত্রী স্কট মরিসন বর্ণবাদের অভিযোগ নাকচ করেছেন।
তিনি বলেন, ‘গত বছর যখন আমরা চীনের সঙ্গে সীমান্ত বন্ধ করে দিই, তখনও আমাদের বিরুদ্ধে একই অভিযোগ আনা হয়েছিল। মহামারিকালে কোনো রাজনীতি বা মতাদর্শ খাটে না।
‘এটি প্রাণঘাতী ভাইরাস; এর সঙ্গে রাজনীতির কোনো সম্পর্ক নেই।’
অস্ট্রেলিয়ার বিভিন্ন সংবাদমাধ্যমের প্রতিবেদনে বলা হয়, এই প্রথম নিজ দেশে ফিরতে কোনো অস্ট্রেলীয় দণ্ডনীয় শাস্তির মধ্যে পড়তে যাচ্ছেন। এ মুহূর্তে নয় হাজারের মতো অস্ট্রেলিয়ান ভারতে অবস্থান করছেন। এদের মধ্যে ৬০০ জনকে ‘ঝুকিপূর্ণ’ হিসেবে চিহ্নিত করা হয়েছে।
জরিমানা বা কারাদণ্ডের বিষয়ে অস্ট্রেলিয়া সরকারের পক্ষ থেকে বলা হয়, দেশবাসীকে রক্ষার স্বার্থে চিকিৎসাবিষয়ক বিশেষজ্ঞদের পরামর্শের ভিত্তিতে এ পদক্ষেপ নেয়া হয়েছে।
ভারতে টানা ১০ দিন ধরে দৈনিক তিন লাখের বেশি মানুষের দেহে করোনা শনাক্ত হয়েছে।
অস্ট্রেলিয়া সরকার আরও জানায়, গত ১৫ দিনে ভারতফেরত নাগরিকদের মধ্যে সংক্রমণের হার অনেক বেড়েছে, যা খুবই উদ্বেগজনক।
অস্ট্রেলিয়ার পররাষ্ট্রমন্ত্রী ম্যারিস পেইন বলেন, কোয়ারেন্টিনে থাকা ভারতফেরত নাগরিকদের ৫৭ শতাংশের করোনা পরীক্ষার ফল পজিটিভ আসে। গত মার্চে এ হার ছিল ১০ শতাংশ। করোনা সংক্রমণের ক্রমবর্ধমান হার স্বাস্থ্য ও চিকিৎসাসেবার ওপর উল্লেখযোগ্য মাত্রায় চাপ ফেলেছে।