বাংলাদেশ

মতামত

খেলা

বিনোদন

জীবনযাপন

তারুণ্য

কিড জোন

অন্যান্য

রেস-জেন্ডার

ফ্যাক্ট চেক

স্বাস্থ্য

আন্তর্জাতিক

শিক্ষা

অর্থ-বাণিজ্য

বিজ্ঞান-প্রযুক্তি

চীনে জেন্ডার বৈষম্য থেকে বাদ পড়েন না একমাত্র কন্যা সন্তানটিও

  •    
  • ১৯ এপ্রিল, ২০২১ ১৫:১৭

২০০৫ সালের এক গবেষণায় দেখা গেছে, গ্রামাঞ্চল মা-বাবারা মেয়ে সন্তানদের স্কুলে পাঠানোর ব্যাপারেই খুব একটা আগ্রহী হন না। আবার অল্পবয়সেই তাদের জীবিকা উপার্জনের দিকেও ঠেলে দেয়া হয়।

বিশ্ব অর্থনৈতিক ফোরামের গ্লোবাল জেন্ডার গ্যাপ রিপোর্ট ২০২১-এ উঠে এসেছে, চীনে প্রতি ১০০ কন্যা শিশুর বিপরীতে পুত্র শিশু জন্মের সংখ্যা ১১৩। অর্থাৎ আধুনিক চীনেও পুত্র সন্তানের আকাঙ্ক্ষাই দেশটিতে প্রবল, মত বিশেষজ্ঞদের।

সাউথ চায়না মর্নিং পোস্টের এক প্রতিবেদনে বলা হয়, বর্তমান যুগেও চীনে বংশরক্ষার কৃতিত্ব দেয়া হয় শুধু ছেলে সন্তানদেরই। অর্থনৈতিক উন্নয়ন ও নগরায়নের ফলে দেশটিতে গত কয়েক বছরে বিভিন্ন সামাজিক পরিবর্তন ঘটলেও ছেলে ও মেয়ে বলে সন্তানের মধ্যে বৈষম্যপূর্ণ দৃষ্টিভঙ্গিতে কোনো পরিবর্তন আসেনি।

বিভিন্ন গবেষণায় দেখা গেছে, এখনও ছেলের পড়াশোনা ও অন্যান্য সুযোগ সুবিধায় বেশি খরচ করার কথা ভাবেন চীনা মা-বাবারা। অন্যদিকে ১৯৭৮ সাল থেকে ২০১৫ সাল পর্যন্ত এক সন্তান নীতি বহাল থাকা দেশটিতে একমাত্র সন্তান মেয়ে হলে তার পড়াশোনা বা অন্যান্য মৌলিক সুবিধার পেছনে খরচ সামলে চলার প্রবণতাই বেশি।

চীনে মেয়ে শিশুদের জন্মের পর থেকেই প্রতিটি পদে জেন্ডার পক্ষপাতিত্বের শিকার হতে হয়। বিশেষ করে শিক্ষার অধিকার আদায়ের ক্ষেত্রে ছেলে ও মেয়ে সন্তানদের মধ্যে অসম সুযোগসুবিধার বিষয়টি উঠে এসেছে বিভিন্ন গবেষণায়।

২০০৫ সালের এক গবেষণায় দেখা গেছে, গ্রামাঞ্চল মা-বাবারা মেয়ে সন্তানদের স্কুলে পাঠানোর ব্যাপারেই খুব একটা আগ্রহী হন না। আবার অল্পবয়সেই তাদের জীবিকা উপার্জনের দিকেও ঠেলে দেয়া হয়।

একই বয়সী ছেলে সন্তানরা যখন স্কুলে পড়ে, তখন সমবয়সী মেয়ে সন্তানরা পরিবারের জন্য অর্থের ব্যবস্থা করতে কাজে লেগে যায়। অথচ শিক্ষিত না হওয়ায় তাদের আয়ের সুযোগও সীমিত হয়ে আসে।

সাধারণত মনে করা হয় দরিদ্র ও গ্রাম্য পরিবারগুলোতেই শুধু এ ধরনের বৈষম্য বিদ্যমান। শহরের মেয়েরা সমান অধিকার পায় এবং আধুনিক চীনের তারা অন্যতম উপকারভোগী বলে এক ধরনের মত প্রচলিত আছে। কিন্তু গবেষণায় দেখা যাচ্ছে, বিষয়টি আদৌ তা নয়।

বিশেষ করে ২০১৫ সালে এক সন্তান নীতি উঠে যাওয়ার পর থেকে অনেক কন্যা সন্তানই পুত্র সন্তানকে প্রাধান্য দেয়ার মানসিকতার বলি হচ্ছেন। শহরে বসনাসরত কোনো পরিবারের একমাত্র সন্তান মেয়ে হলে গ্রামাঞ্চল তুলনায় তাদের সুযোগ-সুবিধা কিছুটা বেশি হলেও একমাত্র পুত্র সন্তানদের তুলনায় তাদের পেছনে মা-বাবাদের বিনিয়োগ এখনও কম।

২০১৮ সালের এক গবেষণায় দেখা গেছে, চীনে পুত্র সন্তান থাকলে মা-বাবাদের মধ্যে সঞ্চয়ের প্রবণতা বেশি হয়। অন্যদিনে একমাত্র সন্তান মেয়ে হলে মা-বাবা গৃহস্থালী ব্যয় বেশি করেন। মূলত পুরুষই পরিবারের মূল উপার্জনক্ষম হবেন- এমন ধারণা থেকেই বছরের পর বছর ধরে এ প্রবণতা চলে আসছে।

আবার বিয়ের বাজারে ছেলেকে যোগ্য দেখাতে তার জন্য স্থায়ী সম্পত্তি কেনার দিকেও ঝোঁক থাকে চীনা মা-বাবাদের। এদিক থেকে আরও কোণঠাসা একমাত্র কন্যা সন্তানরা। মানসিক ও বৈবাহিক দৃষ্টিকোণ থেকে সহযোগিতা কম পাওয়ার পাশাপাশি মা-বাবার এ ধরনের মানসিকতার ফলে চীনের কন্যা সন্তানদের জীবনে অর্জনও থাকে সীমিত, যার বোঝা আজীবন বয়ে চলতে হয় তাদের।

এ বিভাগের আরো খবর