যুক্তরাষ্ট্রের মিনেসোটা অঙ্গরাজ্যে কৃষ্ণাঙ্গ ডন্ট রাইটকে হত্যার অভিযোগে শ্বেতাঙ্গ এক পুলিশ কর্মকর্তার বিরুদ্ধে মামলা হয়েছে।
হত্যাকাণ্ডের পর পদত্যাগ করা কিম পটার নামের ওই পুলিশ কর্মকর্তাকে বুধবার সকালে গ্রেপ্তার করা হয়। পরে এক লাখ ডলারের বিনিময়ে জামিনে ছাড়া পান তিনি। বৃহস্পতিবার আদালতে তার হাজির হওয়ার কথা রয়েছে বলে বিবিসির প্রতিবেদনে জানানো হয়েছে।
বার্তা সংস্থা রয়টার্স লিখেছে, দোষী সাব্যস্ত হলে পটারের সর্বোচ্চ ১০ বছরের কারাদণ্ড ও ২০ হাজার ডলার জরিমানা হতে পারে।
নিহত রাইটের পরিবারের আইনজীবী বেন ক্রাম্প এক বিবৃতিতে জানিয়েছেন, ইচ্ছাকৃত ও অবৈধভাবে বলপ্রয়োগ করে রাইটকে হত্যা করা হয়। কিম পটার ২৬ বছর বাহিনীতে ছিলেন। ট্যাজার ও আগ্নেয়াস্ত্রের মধ্যে ফারাক তিনি ভালোভাবেই জানেন। বড় ধরনের কোনো ট্রাফিক আইন লঙ্ঘন করেননি রাইট। সামান্য অপরাধের জন্য তাকে জীবন দিতে হয়েছে।
রোববার দুপুরে মিনেসোটার ব্রুকলিন সেন্টার শহরে পুলিশের গুলিতে প্রাণ হারান ২০ বছর বয়সী রাইট।
ঘটনার দিন নিহত রাইটের মা কেটি রাইট সাংবাদিকদের বলেন, রোববার দুপুরের দিকে ছেলে তাকে ফোন করে বলেন, রিয়ার-ভিউ আয়নায় এয়ার ফ্রেশনারে ঝুলতে থাকায় (মিনেসোটায় যা বেআইনি) এক পুলিশ কর্মকর্তা তাকে গাড়ি থামাতে বলে।
পরের দিন ব্রুকলিন সেন্টারের পুলিশপ্রধান টিম গ্যানন সংবাদ সম্মেলনে ঘটনাস্থলে থাকা এক পুলিশ কর্মকর্তার বডি ক্যামেরা থেকে ধারণ করা ভিডিও সাংবাদিকদের দেখান। এতে দেখা যায়, রাস্তার ধারে পুলিশ কর্মকর্তারা রাইটকে হাতকড়া পরাতে চাইলে তিনি গাড়িতে ঢোকার চেষ্টা করেন। ওই সময় এক পুলিশ সদস্যকে তিনবার ‘ট্যাজার!’ বলতে শোনা যায়। পুলিশের নীতিমালায় লক্ষ্য নিশানার সময় বন্দুক ব্যবহার না করে আগে ট্যাজার (ইলেকট্রিক শক দেয়ার মতো প্রাণঘাতী নয় এমন যন্ত্র) ব্যবহারের কথা বলা রয়েছে।
ভিডিওতে ওই একই কর্মকর্তাকে বলতে শোনা যায়, ‘আমি তাকে গুলি করে ফেলেছি’। সে সময় গুলিবিদ্ধ রাইটকে গাড়িতে ঢুকে তা চালাতে দেখা যায়। মারাত্মক আহত রাইট কিছুদূর গিয়েই একটি গাড়িকে ধাক্কা দেন। ঘটনাস্থলেই তার মৃত্যু হয়।
পটারের ভাষ্য, রাইটকে থামাতে ট্যাজার ব্যবহার না করে ভুল করে পিস্তল বের করে ফেলেছিলেন তিনি।
মঙ্গলবার ওই ঘটনার দায় নিয়ে পদত্যাগ করেন পটার। একই সঙ্গে ব্রুকলিন সেন্টারের পুলিশপ্রধান গ্যাননও পদত্যাগ করেন।
এদিকে বুধবার রাতেও কারফিউ ভেঙে রাইট হত্যার প্রতিবাদে বিক্ষোভ করে ব্রুকলিন সেন্টারের হাজার হাজার মানুষ।
মিনেসোটার মিনিয়াপোলিস শহরের উপকণ্ঠে ব্রুকলিস সেন্টার অবস্থিত। মিনিয়াপোলিসেই গত বছরের মে মাসে কৃষ্ণাঙ্গ জর্জ ফ্লয়েড শ্বেতাঙ্গ পুলিশ কর্মকর্তাদের হেফাজতে নিহত হন। ফ্লয়েড যেখানে মারা যান, সেখান থেকে ১০ মাইল দূরে মৃ্ত্যু হয় রাইটের।
তিন সপ্তাহ আগে কড়া নিরাপত্তায় মিনিয়াপোলিসের একটি আদালতে ফ্লয়েড হত্যা মামলায় অভিযুক্ত পুলিশ কর্মকর্তা ডেরেক শভিনের বিচার শুরু চলছে।