বাংলাদেশ

মতামত

খেলা

বিনোদন

জীবনযাপন

তারুণ্য

কিড জোন

অন্যান্য

রেস-জেন্ডার

ফ্যাক্ট চেক

স্বাস্থ্য

আন্তর্জাতিক

শিক্ষা

অর্থ-বাণিজ্য

বিজ্ঞান-প্রযুক্তি

নিস্তেজ পাওয়া যায় ফ্লয়েডকে: প্যারামেডিক

  •    
  • ২ এপ্রিল, ২০২১ ১০:৫৪

প্যারামেডিক সেথ ব্রেভিন্ডার বলেন, ‘আমার সহকর্মী ডেরেক স্মিথ ফ্লয়েডের ঘাড়ে নাড়ি পরীক্ষা করেন। কিন্তু কোনো নাড়িই পাওয়া যায়নি। প্রাথমিকভাবে ফ্লয়েডকে দেখে মনে হয়েছিল, তিনি আর নেই। স্ট্রেচারে তোলার সময় মাটিতে যাতে আঘাত না লাগে এজন্য ফ্লয়েডের মাথা উপরের দিকে ধরে রাখি। অ্যাম্বুলেন্সে ঢোকানোর পর ফ্লয়েডের বুকে চাপ দেয়া শুরু হয়।’

কৃষ্ণাঙ্গ জর্জ ফ্লয়েড হত্যা মামলায় শ্বেতাঙ্গ সাবেক পুলিশ কর্মকর্তা ডেরেক শভিনের বিচারের চতুর্থ দিনে সাক্ষ্য দিয়েছেন দুইজন প্যারামেডিক (জরুরি চিকিৎসা সেবাদানকারী)। আদালতকে জানান, ঘটনাস্থলে পৌঁছে ফ্লয়েডের কোনো নাড়ি পাননি তারা, দেখে মনে হয়েছিল শ্বাসপ্রশ্বাস বন্ধ।

যুক্তরাষ্ট্রের মিনেসোটা অঙ্গরাজ্যের মিনিয়াপোলিস শহরের এক আদালতে বৃহস্পতিবার জুরিদের সামনে সাক্ষ্যে এসব কথা বলেন দুই প্যারামেডিক।

সোমবার থেকে শুরু হয় বিচার। ফ্লয়েডকে গ্রেপ্তারের সময় ঘটনাস্থলে উপস্থিত তিন পুলিশ কর্মকর্তার বডি ক্যামেরার ফুটেজ আদালতে উপস্থাপন করা হয় বুধবার। ফুটেজে দেখা যায়, ফ্লয়েড পুলিশ কর্মকর্তাদের অনুরোধ করে বলছেন, ‘আমাকে গুলি করবেন না; আমি আমার মাকে ভালোবাসি।’

ফুটেজে আরও দেখা যায়, হাতকড়া পরানোর সময় ফ্লয়েড পুলিশ কর্মকর্তা টমাস লেইন ও জে আলেক্সান্ডার কুয়েংকে বারবার অনুরোধ করে বলছেন, তিনি কোনো ধরনের প্রতিরোধ করবেন না। তাকে যাই করতে হবে বলা হবে, তিনি তাই করবেন। এরপর ফ্লয়েডকে পুলিশের গাড়িতে তোলার চেষ্টা করা হলে ধস্তাধস্তি শুরু হয়।

এক পর্যায়ে ফ্লয়েডকে গাড়ি থেকে বের করে মাটিতে ফেলে চেপে ধরা হয়। ওই সময় পথচারীরা চিৎকার করে পুলিশ কর্মকর্তাদের ফ্লয়েডের নাড়ি পরীক্ষা করতে বলে। তাকে চেপে ধরতেও নিষেধ করে তারা। ফুটেজে নয় মিনিটেরও বেশি সময় ধরে ফ্লয়েডের ঘাড়ে শভিনকে হাঁটু চাপ দিয়ে রাখতে দেখা যায়।

বিবিসির প্রতিবেদনে বলা হয়, বৃহস্পতিবার আদালতে প্যারামেডিক সেথ ব্রেভিন্ডার সাক্ষ্য দেন। তিনি জানান, ঘটনাস্থলে পৌঁছার পর শুরুতে ভেবেছিলেন সাধারণ কোনো হাতাহাতি হয়েছে। কিন্তু দ্রুতই বুঝতে পারেন, বিষয়টি গুরুতর; ফ্লয়েড নিস্তেজ হয়ে পড়ে রয়েছেন।

তিনি বলেন, ‘আমার সহকর্মী ডেরেক স্মিথ ফ্লয়েডের ঘাড়ে নাড়ি পরীক্ষা করেন। কিন্তু কোনো নাড়িই পাওয়া যায়নি। প্রাথমিকভাবে ফ্লয়েডকে দেখে মনে হয়েছিল, তিনি আর নেই। স্ট্রেচারে তোলার সময় মাটিতে যাতে আঘাত না লাগে এজন্য ফ্লয়েডের মাথা উপরের দিকে ধরে রাখি। অ্যাম্বুলেন্সে ঢোকানোর পর ফ্লয়েডের বুকে চাপ দেয়া শুরু হয়।’

আরেক প্যারামেডিক স্মিথ আদালতকে বলেন, ‘এক পর্যায়ে মনে হয়েছিল ফ্লয়েডের হৃদপিণ্ডে বৈদ্যুতিক চলাচল হচ্ছে। তা ফের চালুর চেষ্টায় তাকে বৈদ্যুতিক শক দেয়া শুরু করি।’

ব্রেভিন্ডার বলেন, ‘হৃদপিণ্ড মনিটরে ফ্লয়েডের হৃদ চলাচলের রেখা সরল দেখার পর হাসপাতালমুখী অ্যাম্বুলেন্স থামাতে হয়। এরপর ফ্লয়েডকে বাঁচাতে আরও চেষ্টা করা হয়, কিন্তু সব চেষ্টাই বিফলে যায়।’

দুই প্যারামেডিক ছাড়াও ফ্লয়েডের প্রেমিকা কোর্টনি রজ ওই দিন আদালতে সাক্ষ্য দেন।

তিনি বলেন, তারা দুজনই আফিমে আসক্ত ছিলেন। তবে ঘটনার দিন ফ্লয়েড আফিম নিয়েছিলেন কি না, তা তিনি জানেন না।

২০২০ সালের ২৫ মে ৪৬ বছর বয়সী ফ্লয়েডকে জাল টাকা ব্যবহারের অভিযোগে গ্রেপ্তার করে মিনেসোটা অঙ্গরাজ্যের মিনিয়াপলিস পুলিশ। হাতকড়া পরানোর পর ফ্লয়েডকে মাটিতে পিছমোড়া করে শুইয়ে তার ঘাড়ে প্রায় নয় মিনিট চেপে বসেন শভিন।

ওই সময় বারবার শ্বাস নিতে কষ্ট হচ্ছে বলার পরও ওই পুলিশ কর্মকর্তা ফ্লয়েডের ঘাড় থেকে নামেননি। এক পর্যায়ে ফ্লয়েডের মৃত্যু হয়।

ওই ঘটনায় যুক্তরাষ্ট্রজুড়ে বর্ণবাদবিরোধী প্রতিবাদ ছড়িয়ে পড়ে। সমালোচনার ঝড় ওঠে আন্তর্জাতিক অঙ্গনেও। গড়ে ওঠে বর্ণবাদবিরোধী আন্দোলন। শভিনসহ চার পুলিশ কর্মকর্তার বিরুদ্ধে মামলা করে ফ্লয়েডের পরিবার।

এ বিভাগের আরো খবর