শিশুদের পোশাক পরে তরুণী ও নারীদের ছবি তোলার হিড়িক পড়েছে চীনে। ইনস্টাগ্রাম ও টুইটারধর্মী চীনা অনলাইন প্ল্যাটফর্ম ওয়েইবো ও শাওহোংশুতে বন্যা বয়ে যাচ্ছে এ ধরনের ছবির।
বিবিসি জানিয়েছে, জাপানভিত্তিক ইউনিকলোর দোকানে গিয়ে শিশুদের টি-শার্ট পরে ট্রায়াল রুমে নিজেদের ছবি তুলছেন লাখো চীনা তরুণী। এরপর সেসব ছবি ছাড়ছেন অনলাইনে।
শুধু ওয়েইবোতেই ‘অ্যাডাল্টস ট্রাইং অন ইউনিকলো চিলড্রেনস ক্লথস’ লিখে হ্যাশট্যাগ দেয়া ছবি দেখা হয়েছে প্রায় ৬১ কোটিবার।
ধারণা করা হচ্ছে, চীনে বসবাসরত জাপানি নাগরিক ও জাপানি বংশোদ্ভূতরা অনলাইনে এ ধরনের ট্রেন্ড শুরু করেছেন। যদিও এর কারণ জানা যায়নি। এ ব্যাপারে কোনো প্রতিক্রিয়া জানায়নি ইউনিকলো।
পুরো বিষয়টি নিয়ে চীনের সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে চলছে তোলপাড়। একদিকে এ ধরনের ছবি দিয়ে অনলাইনে ঝড় তুলেছেন তরুণীরা। অন্যদিকে সরু দেহের প্রতি চীনা নারীদের এ আগ্রহ স্বাস্থ্যঝুঁকির দিকে ঠেলে দেবে দেশটির তরুণ প্রজন্মকে, চলছে এমন সমালোচনার ঝড়ও।
এর আগে একই ধরনের একটি ট্রেন্ড শুরু হয়েছিল চীনে। সেসময় তরুণীরা কে কত সরু তা দেখাতে হাত পেছন থেকে ঘুরিয়ে নিজেদের নাভি স্পর্শ করে ছবি তুলে অনলাইনে ভাইরাল করেছিলেন। ‘বেলি বাটন চ্যালেঞ্জ’ নামে সে সময় ট্রেন্ডিং ছিল এসব ছবি।
তার আগে কণ্ঠার হাড়ে পয়সা রেখে ভারসাম্য রক্ষার চ্যালেঞ্জ; এ-ফোর আকৃতির কাগজের ২১ সেন্টিমিটার সরু অংশের পেছনে কোমর লুকানোর ‘এ-ফোর ওয়েস্ট’ চ্যালেঞ্জ ট্রেন্ডিং ছিল দেশটিতে।
একের পর এক এসব ট্রেন্ডের জনপ্রিয়তার ফলে কৃত্রিমভাবে সরু দেহ পেতে নারীদের ওপর এক ধরনের সামাজিক চাপ তৈরি করছে বলে মত সমালোচকদের। সুস্বাস্থ্যের জন্য উচ্চতা অনুযায়ী ওজন নিশ্চিতে পাল্টা প্রচারণাও চালাচ্ছেন অনেকে।
ওয়েইবোতে ‘হাও উইমেন শুড ওভারকাম বডি অ্যানজাইটি’ হ্যাশট্যাগ দেখেছেন ৭ কোটি ব্যবহারকারী। দেহের সৌন্দর্য নিয়ে দুশ্চিন্তা থেকে নারীদের মুক্ত করার লক্ষ্যে চালানো হচ্ছে এ প্রচারণা।
চাইনিজ ইউনিভার্সিটি অফ হংকংয়ের সাম্প্রতিক এক গবেষণা বলছে, কিশোরীদের চেয়েও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে সময় কাটান চীনের প্রাপ্তবয়স্ক নারীরা এবং তারাই মূলত নিজেদের দেহের সৌন্দর্য নিয়ে উদ্বিগ্ন।
২০১৯ সালের এক অনলাইন জরিপে উঠে আসে, ওজন ও দেহের আকৃতিকে নারীর সৌন্দর্য মাপার মানদণ্ড বলে মনে করে ২৭টি দেশের বেশিরভাগ মানুষ, যার শীর্ষে অবস্থান চীনের।