অ্যাসিড হামলার বিরুদ্ধে কাজ করার স্বীকৃতি হিসেবে আন্তর্জাতিক সাহসী নারী পুরস্কারের জন্য মনোনীত হয়েছেন নেপালের মুসকান খাতুন।
নেপালে যুক্তরাষ্ট্রের দূতাবাস থেকে দেয়া এক বিবৃতিতে এ তথ্য জানানো হয়েছে বলে কাঠমান্ডু পোস্টের এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে। এতে বলা হয়, অ্যাসিড হামলার শেষ ঘটাতে অবদানের স্বীকৃতি হিসেবে মুসকানকে এই পুরস্কার দেয়া হচ্ছে।
৮ মার্চ নারী দিবসের দিন দেয়া হবে এই পুরস্কার। এ উপলক্ষে আয়োজিত ভার্চুয়াল অনুষ্ঠানে উপস্থিত থাকবেন যুক্তরাষ্ট্রের ফার্স্ট লেডি জিল বাইডেন ও দেশটির পররাষ্ট্রমন্ত্রী টনি ব্লিনকেন।
১৭ বছর বয়সী মুসকান নিজেও অ্যাসিড আক্রান্ত। পুরস্কারটির জন্য তাকে মনোনীত করায় উচ্ছ্বাস প্রকাশ করে টুইট করেছেন নেপালে নিযুক্ত যুক্তরাষ্ট্রের রাষ্ট্রদূত র্যান্ডি বেরি।
‘আমি সত্যিকার অর্থে খুব রোমাঞ্চিত যে, অ্যাসিড হামলা নির্মূলে নেপালের মুসকান খাতুন যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের আন্তর্জাতিক সাহসী নারী পুরস্কার পেতে যাচ্ছেন।’
মুসকানের বয়স যখন ১৫ তখন একটি ছেলের প্রেমের প্রস্তাব প্রত্যাখ্যান করায় অ্যাসিড হামলার শিকার হয়েছিলেন। এতে তার মুখাবয়ব, বুক ও হাত মারাত্মকভাবে পুড়ে যায়।
নৃশংস ওই অ্যাসিড হামলার বিরুদ্ধে আন্দোলন গড়ে তোলেন মুসকান। অ্যাসিড হামলাকারীদের কঠোর শাস্তি নিশ্চিতে কঠোর আইন প্রণয়নের দাবি তোলেন তিনি।
এর জেরে অ্যাসিড হামলার বিরুদ্ধে নতুন আইন প্রণয়নে বাধ্য হয় নেপাল সরকার। গত বছরের সেপ্টেম্বরে এ বিষয়ে একটি অধ্যাদেশ জারি করেন দেশটির প্রেসিডেন্ট।
নেপালে যুক্তরাষ্ট্রের দূতাবাস জানিয়েছে, হিমালয় অধ্যুষিত দেশটির প্রথম নারী হিসেবে এই পুরস্কার পেতে যাচ্ছেন মুসকান। এই পুরস্কারজয়ী সবচেয়ে কম বয়সী নারী হবেন তিনি।
১৫ বছর ধরে আন্তর্জাতিক সাহসী নারী পুরস্কার দিয়ে আসছে যুক্তরাষ্ট্র। শান্তি, ন্যায়বিচার, মানবাধিকার, লিঙ্গ বৈষম্য, নারীর ক্ষমতায়ন ইত্যাদি কাজে অনন্য অবদানের স্বীকৃতিস্বরূপ দেয়া হয় এই পুরস্কার।
এই পুরস্কারে ভূষিত হয়েছেন পাকিস্তানের মালালা ইউসুফজাই ও বাংলাদেশের সারাহ হোসেনসহ অনেকে।
এবার মুসকান ছাড়াও আরও যারা পুরস্কারটি পাচ্ছেন, তারা হলেন- বেলারুশের মারিয়া কালেসনিকাভা, কলম্বিয়ার মায়েরলিস অ্যাঙ্গারিতা, কঙ্গোর জুলিয়েনে লুসেনগে, গুয়াতেমালার বিচারক এরিকা আইফান, ইরানের শোহরেহ বায়েত, সোমালিয়ার জাজরা মোহামেদ আহমেদ, স্পেনের সিস্টার অ্যালিসিয়া ভাকাস মোরো, শ্রীলঙ্কার রানিথা জ্ঞানারাজ, তুরস্কের ক্যানান গুলু ও ভেনেজুয়েলার রোসারিও কন্ট্রেরাস।