বাংলাদেশ

মতামত

খেলা

বিনোদন

জীবনযাপন

তারুণ্য

কিড জোন

অন্যান্য

রেস-জেন্ডার

ফ্যাক্ট চেক

স্বাস্থ্য

আন্তর্জাতিক

শিক্ষা

অর্থ-বাণিজ্য

বিজ্ঞান-প্রযুক্তি

জেন্ডার পরিচয়: অনিতার গল্প

  • নিউজবাংলা ডেস্ক   
  • ২৮ জানুয়ারি, ২০২১ ১১:২৪

অনিতার মাসিক ঋতুস্রাব হচ্ছিল না। কারণ তার জরায়ু ছিল না। এর বদলে তার তলপেটে থাকা শুক্রাশয় অবিকশিত অবস্থায় ছিল। মেয়ে হিসেবে বাকি জীবন কাটাতে চাওয়া অনিতাকে সেই সুযোগ করে দেয়ার সিদ্ধান্ত নেন চিকিৎসকরা। তারা অনিতার শুক্রাশয় অস্ত্রোপচার করে অপসারণ করেন।

ভারতের মহারাষ্ট্রের সাতারা জেলার ১৫ বছরের কিশোরী অনিতা (ছদ্মনাম)। মাসিক ঋতুস্রাব শুরু না হওয়ায় সে পুনেতে চিকিৎসকের কাছে যায়। সেখানে শারীরিক পরীক্ষায় জানা যায়, অ্যান্ড্রোজেন ইনসেনসিটিভিটি সিনড্রোম (এআইএস) নামে একটি বিরল শারীরিক পরিস্থিতিতে আছে অনিতা। এক লাখ মানুষের মধ্যে মাত্র ৪ জনের মধ্যে এ লক্ষণ দেখা যায়।

অ্যান্ড্রোজেন নামের হরমোন পুরুষের শারীরিক বৈশিষ্ট্য ফুটিয়ে তোলে। এআইএসের কারণে মানবদেহে অ্যান্ড্রোজেন হরমোনটি অবদমিত অবস্থায় থাকে। এতে পুরুষের শারীরিক বৈশিষ্ট্যগুলো ঠিকমতো প্রকাশ হয় না।

অনিতার ক্ষেত্রেও একই ঘটনা ঘটেছিল। তার ঋতুস্রাব হচ্ছিল না। কারণ তার শরীরে জরায়ু ছিল না। এর বদলে তার তলপেটে থাকা শুক্রাশয় অবিকশিত অবস্থায় ছিল।

হিন্দুস্তান টাইমসের প্রতিবেদনে বলা হয়, মেয়ে হিসেবে বাকি জীবন কাটাতে চাওয়া অনিতাকে সেই সুযোগ করে দেয়ার সিদ্ধান্ত নেন চিকিৎসকরা। তারা অনিতার শুক্রাশয় অস্ত্রোপচার করে অপসারণ করেন।

অনিতার চিকিৎসার দায়িত্বে থাকা গাইনি বিশেষজ্ঞ ও এন্ডোস্কপিক সার্জন মনীষ মাকাভি জানান, শুক্রাশয় অপসারণের পর এখন অনিতার স্তন বৃদ্ধির চেষ্টা চালাচ্ছেন তারা। তাকে নিয়মিত হরমোন ইনজেকশন দেয়া হচ্ছে।

তিনি বলেন, ‘তার তলপেটে থাকা শুক্রাশয়ের কারণে ক্যান্সারের ঝুঁকি ছিল। তিন মাস আগে অস্ত্রোপাচারের সাহায্যে আমরা পেটের দুই পাশে থাকা শুক্রাশয় সরিয়ে ফেলেছি। অনিতার ১৮ বছর বয়স হলে তার যোনিকে প্রচলিত অবস্থায় আনার অস্ত্রোপচার করা হবে।’

চিকিৎসকরা জানিয়েছেন, জরায়ু না থাকায় গর্ভধারণ করতে পারবে না অনিতা। তবে ভবিষ্যতে চাইলে সে অন্য কারো গর্ভে বা দত্তক নিয়ে সন্তান নিতে পারবে।

অনিতার আরেক চিকিৎসক অনুপম মানে বলেন, ‘ছেলেদের মতো মুখে দাড়ি গজানো ঠেকাতে অনিতাকে হরমোন ইনজেকশন দেয়া হবে। আমরা তাকে নারী হয়ে উঠতে সহায়তা করছি। এর জন্য কয়েক বছর পর্যন্ত সময় লাগতে পারে।’

অনিতার মতো শারীরিক বাস্তবতায় থাকা মানুষেরা প্রায়ই বৈষ্যম্যের শিকার হন। অথচ বৈজ্ঞানিক দৃষ্টিভঙ্গি হলো, মানুষ যে জেন্ডারে নিজেকে পরিচিত করাতে চায়, সেটি তার শারীরিক বৈশিষ্ট্যের ওপর নির্ভরশীল নয়।

অনিতার ঘটনাই প্রমাণ করে, জেন্ডার শরীর নয়; মনের বিষয়।

এ বিভাগের আরো খবর