করোনাভাইরাস মহামারিতে নারী ও শিশু নির্যাতনের মামলা উদ্বেগজনক হারে বাড়ছে জানিয়ে প্রতিরোধে ১১টি সুপারিশ করেছে বাংলাদেশ জাতীয় মহিলা আইনজীবী সমিতি।
সমিতির এক হিসাব অনুযায়ী, চলতি বছরের জানুয়ারি থেকে ডিসেম্বরের ১৫ তারিখ পর্যন্ত সারা দেশে শুধু নারী ও শিশু নির্যাতন সংক্রান্ত মামলার সংখ্যা আনুমানিক ১৮ হাজার ২২১টি।
সোমবার জাতীয় প্রেসক্লাবে ‘নারী ও শিশু নির্যাতনের বর্তমান প্রেক্ষাপট ২০২০: বিশ্লেষণ ও করনীয়’ শীর্ষক সংবাদ সম্মেলনে সমিতির সভাপতি অ্যাডভোকেট সালমা আলী এ তথ্য জানান।
সালমা আলী বলেন, করোনার মধ্যে বিশ্বব্যাপী নারী ও শিশু নির্যাতনের মাত্রা প্রতি মাসে ক্রমবর্ধমান হারে বেড়েছে। সময়ের সঙ্গে সঙ্গে সহিংসতার রূপও পরিবর্তিত হচ্ছে। এ ধরনের সহিংসতার অন্যতম শিকার বাংলাদেশের নারী ও শিশুরা।
নারী ও শিশু নির্যাতন প্রতিরোধে সংগঠনটির সুপারিশগুলোর মধ্যে রয়েছে ধর্ষণের শিকার নারী ও শিশুদের জন্য আইনি সহযোগিতা বজায় রেখে সুরক্ষা বলয় নিশ্চিত করা, দ্রুত বিচার এবং সাক্ষী সুরক্ষার পাশাপাশি আধুনিক ফরেনসিক প্রযুক্তি ব্যবহার করে যথাযথ তদন্ত নিশ্চিত করা, রাজনৈতিক ও প্রভাবশালীদের হস্তক্ষেপ থেকে তদন্তকে মুক্ত রাখা এবং আইন প্রয়োগকারী কর্তৃপক্ষের সব স্তরে প্রশিক্ষিত কর্মী তৈরি।
এ ছাড়া উচ্চ আদালতে নারী নির্যাতন সংক্রান্ত সব মামলা নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে শেষ করতে পৃথক আদালতের ব্যবস্থা করা, মানবপাচার সংক্রান্ত মামলার দ্রুত বিচার নিশ্চিতে ট্রাইবুনালের সংখ্যা বাড়ানো, প্রান্তিক গোষ্ঠীর (প্রতিবন্ধী, হিজড়া) জন্য বৈষম্যহীন আইনি পরিষেবা নিশ্চিত করা এবং সব কর্মক্ষেত্রে যৌন হয়রানি প্রতিরোধে কার্যকর কমিটি গঠনের কথা বলা হয় সুপারিশে।
আইন সংশোধন করে ধর্ষণের সংজ্ঞা আরও স্পষ্ট করা এবং ধর্ষণ মামলার বিচারে অভিযোগকারীর চরিত্রগত সাক্ষ্যের গ্রাহ্যতা বন্ধ করার কথাও বলা হয়।
সংবাদ সম্মেলনে অন্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন সমিতির সাধারণ সম্পাদক জোবায়দা পারভিন ও নির্বাহী সদস্য জাকিয়া আনার কলি।