জার্মান সরকার পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত প্রতিষ্ঠানের বোর্ডে নির্দিষ্ট সংখ্যক নারী সদস্যা রাখার বাধ্যবাধকতা দিয়ে নতুন একটি মানদণ্ড তৈরি করছে।
শুক্রবার জার্মানির জোট সরকার নতুন ওই আইনে সম্মতি দিয়েছে। আইনে বলা হয়েছে, কোনো কোম্পানিতে তিন সদস্যের নির্বাহী বোর্ডে অবশ্যই একজন নারী সদস্য থাকতে হবে।
যেসব কোম্পানিতে জার্মান সরকারের অংশীদারিত্ব রয়েছে, সেগুলোর বোর্ডে অন্তত ৩০ শতাংশ নারী সদস্য রাখারও বাধ্যবাধকতা থাকছে নতুন আইনে।
জার্মান চ্যান্সেলর অ্যাঙ্গেলা মেরকেলের ক্রিস্টিয়ান ডেমোক্র্যাটস ও সোশ্যাল ডেমোক্র্যাটসদের মতামতের ভিত্তিতে শুক্রবার আইনটি পাস হয়।
নতুন আইনটি ২০১৫ সালের প্রতিষ্ঠিত একটি ব্যবস্থার মতো, যেখানে বিভিন্ন কোম্পানিকে স্বেচ্ছায় বোর্ডরুমের বৈচিত্র্য বাড়ানোর আহ্বান জানানো হয়। প্রগতিশীলরা ব্যবস্থাটিকে স্বেচ্ছাসেবী হওয়ার কারণে জেন্ডার সমতা আনতে পারেনি বলে দাবি করেন।
নতুন এই আবশ্যিক কোটা জার্মানির করপোরেট খাতে বৈচিত্র্য বাড়ানোর পাশাপাশি অন্যান্য দেশের আইন প্রণেতাদের তা অনুসরণে উৎসাহ জোগাবে বলে মনে করা হচ্ছে।
বিজনেসইনসাইডারের এক প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়েছে, ফ্রান্স, নরওয়ে, ইসরায়েল, অস্ট্রেলিয়া, ভারত ও ইতালির মতো অনেক দেশে এই আইনের মতো কোটা ব্যবস্থা চালু আছে।
ইগন জেন্ডা নামের একটি ব্যবস্থাপনা পরামর্শক সংস্থার গবেষণায় দেখা গেছে, যেসব দেশে এমন কোটা ব্যবস্থা চালু আছে তাদের বোর্ডরুমে এক ধরনের বৈচিত্র্য রয়েছে, কোটাবিহীন দেশগুলোর থেকে যা চোখে পড়ার মতো ভিন্ন।
ম্যাককিনসে অ্যান্ড কোম্পানির গবেষকরা দেখেছেন, যেসব প্রতিষ্ঠানের শীর্ষ নির্বাহী পদে বৈচিত্র্য রয়েছে সেসব প্রতিষ্ঠানের গড় মুনাফার সম্ভাবনা ৩৩ শতাংশ বেড়ে যায়।
গার্ডিয়ানে প্রকাশিত এক প্রতিবেদনে স্বতন্ত্র্য অলাভজনক প্রতিষ্ঠান অলরাইট ফাউন্ডেশনের সেপ্টেম্বরের জরিপে দেখা গেছে, ডাক্স ইনডেক্সে তালিকাভুক্ত ৩০টি বৃহৎ জার্মান কোম্পানির ব্যবস্থাপনা বোর্ডে রয়েছেন প্রায় ১৩ শতাংশ নারী সদস্য। এই হার যুক্তরাষ্ট্রে ২৮.৬ শতাংশ, যুক্তরাজ্যে ২৪.৫ শতাংশ ও ফ্রান্সে ২২.২ শতাংশ বলে উল্লেখ করা হয়েছে গবেষণাটিতে।
জার্মানির কেন্দ্রীয় মন্ত্রী ফ্রানজিসকা গিফি এক বিবৃতিতে বলেন, ‘নারীদের জন্য নেয়া পদক্ষেপটি ঐতিহাসিক। আমরা বড় বড় কোম্পানিগুলোতে নারীহীন বোর্ডরুম ব্যবস্থার ইতি টানছি। আধুনিক ও টেকসই সমাজ গঠনে আমরা দৃষ্টান্ত স্থাপন করছি।’