নরওয়ের প্রধানমন্ত্রী এরনা সোলবার্গ বলেছেন, বিশ্বে করোনাভাইরাস মহামারির বিভীষিকাময় প্রভাব পড়েছে। সব দেশেই রোগটির সবচেয়ে বেশি প্রভাব পড়েছে নারী ও মেয়েদের ওপর।
সম্প্রতি আইসল্যান্ডের রাজধানী রেকইয়াভিকে অনুষ্ঠিত নারীদের বৈশ্বিক ফোরামে ভিডিও কনফারেন্সে যুক্ত হয়ে তিনি এসব কথা বলেন।
সোলবার্গ বলেন, ‘নারীদের দারিদ্র্যের হার আশঙ্কাজনক হারে বৃদ্ধি পেয়েছে। স্কুল বন্ধ হওয়ায় মেয়েরা তাদের পড়ালেখা শেষ করতে পারবে কি না সন্দেহ রয়েছে।’
তিনি আরও বলেন, ‘বিশ্বে কম বয়সে ও অনাকাঙ্ক্ষিত গর্ভধারণ বাড়ছে। বাজে কিছু আচরণের ক্ষেত্রেও বিষয়টি সমানভাবে সত্য… নারী ও মেয়েদের ওপর সহিংসতার মতো ঘটনা উল্লেখযোগ্য হারে বেড়েছে।’
সোলবার্গ উল্লেখ করেন বৈশ্বিক এই মহামারি পরিস্থিতি নরওয়েতে গৃহস্থালির কাজের ক্ষেত্রে নারী-পুরুষ বৈষম্য সৃষ্টি করেছে। তিনি বলেন, ‘যতই বাইরের কাজ করা হোক, ঘরের কাজ ও শিশুদের যত্নের বেলায় নারীরা তাদের পুরুষ সঙ্গীর চেয়ে বেশি সময় দিচ্ছেন।’
সোলবার্গ বলেন, করোনার ক্ষতি পুষিয়ে নিতে বিভিন্ন দেশ যখন হিমশিম খাচ্ছে, তখন আগের জায়গায় ভালোভাবে ফিরে যেতে জেন্ডার সমতার প্রচার জরুরি।
নরওয়ের প্রধানমন্ত্রীকে উদ্ধৃত করে সিবিএসনিউজের খবরে বলা হয়, ‘এটি (জেন্ডার সমতার প্রচার) অর্থনৈতিক উন্নয়ন প্রচারের গুরুত্বপূর্ণ একটি অংশ।’
তিনি বলেন, জেন্ডার সমতা নারী ও মেয়েদের শিক্ষা এবং কাজে অংশগ্রহণে বিনিয়োগের সুযোগ করে দেয়।
জাতিসংঘ মহাসচিবের টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রার প্রচারকর্মীদের গ্রুপের সহ-সভাপতি হিসেবে এরনা সোলবার্গ নারী ও মেয়েদের পরিস্থিতি উন্নয়নে অগ্রাধিকার দেয়ার অঙ্গীকার করেছেন।
তিনি বলেন, ‘জানুয়ারিতে সুরক্ষা কাউন্সিলের কার্যক্রম শুরু হলে আমাদের মূল লক্ষ্য হবে নারীর শান্তি ও সুরক্ষা। নারীরা যাতে সিদ্ধান্ত গ্রহণ প্রক্রিয়ায় অংশ নেয়, সেই দিকটিও আমরা নিশ্চিত করব।’
সোলবার্গ সরকারগুলোকে ‘বিচ্ছিন্নতা ও অপপ্রচারের বিরুদ্ধে লড়াই করার’ আহ্বান জানান। ওই সময় তিনি মহামারি পরিস্থতির সুযোগ নেয়ার জন্য কয়েকটি দেশের নেতাদের সমালোচনা করেন।
করোনা পরিস্থিতিকে মানবাধিকার লঙ্ঘন ও গণতান্ত্রিক পরিসর সীমিত করার হাতিয়ার করা হচ্ছে বলেও অভিযোগ করেন তিনি।