ইউরোপে যে তৎপরতা চলছে, তাতে মহাদেশটিতে জেন্ডার বৈষম্য নিরসনে আরও ৬০ বছর লাগবে বলে এক গবেষণায় উঠে এসেছে।
ইউরোপিয়ান ইনস্টিটিউট ফর জেন্ডার ইক্যুয়ালিটি (ইআইজিই) সম্প্রতি গবেষণা প্রতিবেদনটি প্রকাশ করে।
এতে সতর্ক করে বলা হয়, বর্তমানে যেভাবে আগানো হচ্ছে, সেভাবে চললে ইউরোপিয়ান ইউনিয়নে (ইইউ) নারী-পুরুষের মধ্যে বৈষম্য ঘুচতে আরও ছয় দশক লাগতে পারে।
২০৮০ সাল নাগাদ সমতা আসতে পারে জানিয়ে ইআইজিই জেন্ডার বৈষম্যের ওপর তাদের বার্ষিক গবেষণা প্রতিবেদনটি প্রকাশ করে।
প্রতিবেদনে বলা হয়, অল্প কয়েকটি ছাড়া ইইউর বেশিরভাগ দেশে জেন্ডার বৈষম্য প্রকট। এ থেকে উত্তরণের হারও খুব অল্প।
ইআইজিইর পরিচালক ক্যারলিয়েন শিলি হুঁশিয়ার করে বলেন, ‘সবচেয়ে বড় ঝুঁকিটা হলো করোনাভাইরাস লিঙ্গ সমতা অর্জনের হার কমিয়ে তো দেবেই, উল্টো আমাদের আরও পেছনের দিকে নিয়ে যেতে পারে।’
নারীরা সেবা সংশ্লিষ্ট বেশির ভাগ কাজে যুক্ত থাকলেও এসব কাজ এখন পর্যন্ত সবচেয়ে কম বেতনের এবং এর মূল্যায়ন খুব কম।
শিলি বলেন, ‘গত দশকের অর্থনৈতিক সংকট থেকে শিক্ষা নিয়ে নীতিনির্ধারকদের করোনার পরের পৃথিবীর পরিকল্পনা করতে হবে। করোনা মোকাবিলায় নীতিনির্ধারনী পর্যায়েও নারীর সংখ্যা উদ্বেগজনকভাবে কম।’
ইউরোপে বর্তমানে তথ্যপ্রযুক্তি সংশ্লিষ্ট ১০টি পদের মধ্যে মাত্র দুই জন নারী কাজ করছেন। বিপরীতে সেবা খাতে পুরুষদের হার মাত্র ১৫ শতাংশ।
এমন সময়ে প্রতিবেদনটি প্রকাশিত হলো যখন পোল্যান্ডের একটি সাংবিধানিক আদালত সব ধরনের গর্ভপাত নিষিদ্ধ করতে রুল জারি করেছে। প্রতিবাদের সময় একজন পোলিশ নারী গণপিটুনির শিকার হন।
জেন্ডার সমতায় সবচেয়ে ভালো অবস্থানে আছে সুইডেন, ডেনমার্ক ও ফ্রান্স। সুইডেন ও ডেনমার্ক ২০১৩ সাল থেকে নিজেদের শীর্ষস্থান ধরে রেখেছে। তবে এর মধ্যে সবচেয়ে দ্রুত উন্নতি হয়েছে ইতালি, লুক্সেমবার্গ ও মাল্টার।
ইইউ দেশগুলোর মধ্যে পিছিয়ে আছে গ্রিস, হাঙ্গেরি ও রোমানিয়ার। হাঙ্গেরিতে সর্বোচ্চ নীতিনির্ধারণী পর্যায়ে নারীর উপস্থিতি সবচেয়ে কম।
জেন্ডার সমতায় ২০১০ সালের পর সবচেয়ে কম উন্নতি হয়েছে হাঙ্গেরি, পোল্যান্ড, চেক প্রজাতন্ত্র ও নেদারল্যান্ডসের।
গবেষণা প্রতিবেদনে এটাই পরিষ্কার হয়েছে যে, নীতিনির্ধারণী পর্যায়ে নারীর উপস্থিতিই জেন্ডার সমতায় উন্নতির মূল প্রভাবক।