পুনর্বাসন কেন্দ্রগুলোতে ট্রান্সজেন্ডারদের নিজ পছন্দ অনুযায়ী থাকার ব্যবস্থা সংবলিত একটি আইন পাস হয়েছে যুক্তরাষ্ট্রের ক্যালিফোর্নিয়ায়।
স্থানীয় সময় শনিবার অঙ্গরাজ্যটির গভর্নর গ্যাভিন নিউসাম আইনটিতে স্বাক্ষর করেন।
এবিসি নিউজের প্রতিবেদনে বলা হয়, পুনর্বাসন কেন্দ্রে ব্যবস্থাপনাকেন্দ্রিক বা নিরাপত্তা উদ্বেগ থাকলে এ বিধান শিথিল হতে পারে।
ক্যালিফোর্নিয়ার সংশোধন ও পুনর্বাসন দপ্তরের বিভিন্ন কেন্দ্রে নারী ও পুরুষদের থাকার জায়গা আলাদা। কেন্দ্রগুলোতে জন্মসূত্রে প্রাপ্ত লৈঙ্গিক পরিচয়ের ওপর ভিত্তি করে ট্রান্সজেন্ডার বন্দিদের থাকার বন্দোবস্ত করা হয়।
কারো জন্মসনদে লিঙ্গ পরিচয় নারী হলে তাকে নারীদের সঙ্গে রাখা হয়। অন্যদিকে কারো লৈঙ্গিক পরিচয় পুরুষ হলে তাকে পুরুষদের সঙ্গে রাখা হয়।
বিশেষজ্ঞদের মতে, ট্রান্সজেন্ডারদের এভাবে রাখাটা বিপজ্জনক। বিশেষ করে ট্রান্সজেন্ডারদের মধ্যে যারা নিজেদের নারী হিসেবে পরিচয় করাতে চান, তাদের পুরুষদের কক্ষে রাখা ঝুঁকিপূর্ণ।
আইনটিতে বলা হয়, বাসিন্দাদের কেউ ট্রান্সজেন্ডার হিসেবে শনাক্ত হলে আলাদা ডেকে নিয়ে তার জেন্ডার পরিচয় জানতে চাইবেন কেন্দ্রের কর্মকর্তারা। সেই বন্দি তখন জানাবেন, তিনি নারী নাকি পুরুষের কক্ষে থাকতে চান। আর এই প্রক্রিয়া কেন্দ্রে ঢোকার শুরুতেই করতে হবে।
আইন অনুযায়ী, শারীরিক গঠন, যৌন প্রবণতা বা কেন্দ্রে অবস্থানরত অন্য বন্দিদের বিদ্যমান বাস্তবতা বিবেচনায় নিয়ে ট্রান্সজেন্ডার বন্দির অনুরোধ উপেক্ষা করতে পারবে না ক্যালিফোর্নিয়ার সংশোধন ও পুনর্বাসন দপ্তর।
কিন্তু ব্যবস্থাপনাগত সমস্যা বা নিরাপত্তা উদ্বেগ দেখা দিলে ট্রান্সজেন্ডার বন্দির অনুরোধ আমলে নাও নিতে পারে সংশোধনাগার কর্তৃপক্ষ। সে ক্ষেত্রে ওই বন্দিকে তাদের সিদ্ধান্ত জানিয়ে লিখিত বক্তব্য দেবে কর্তৃপক্ষ। একই সঙ্গে সিদ্ধান্তের সঙ্গে দ্বিমত পোষণ করতে বন্দিকে 'কার্যকর সুযোগও' দেওয়া হবে।
সান ফ্রান্সিসকোর ডেমোক্র্যাট সিনেটর স্কট ওয়াইনার আইনটি প্রণয়ন করেন। তিনি বলেন, ‘ট্রান্সজেন্ডার লোকজন ও ট্রান্সজেন্ডার নারীদের বিষয়ে প্রচলিত একটি ভুল বক্তব্য হলো, তারা আসলে নারী নন এবং তারা বাজে কোনো কাজ করতে নারীদের টয়লেট বা থাকার স্থানে যাওয়ার চেষ্টা করেন। বেশিরভাগ ক্ষেত্রে ভুক্তভোগীরা ট্রান্সজেন্ডার কমিউনিটির।'
বন্দিরা স্বাস্থ্য বা নিরাপত্তা ঝুঁকিতে পড়লে সঙ্গে সঙ্গে কর্তৃপক্ষকে জানাতে পারবে বলে আইনটিতে উল্লেখ আছে। সে ক্ষেত্রে কক্ষ পরিবর্তনের বিষয়টি পুনর্মূল্যায়ন করবে কর্তৃপক্ষ।
ক্যালিফোর্নিয়ার পুরুষদের কারাগার মিউল ক্রিক স্টেট প্রিজনের কয়েদি ট্রান্সজেন্ডার নারী মিশেল ক্যালভিন বলেন, ‘এটি (আইন) আমি ও আমার বোনদের জন্য অনেক বড় কিছু।'
'১৫ বছর ধরে এখানে আছি। এ সময়ে নির্যাতনের শিকার হয়েছি; কর্মকর্তাদের কাছ থেকে অসম্মান পেয়েছি। আমি দেখতে নারী বলে নিজস্ব জেন্ডার পরিচয়ে আমাকে সম্বোধন করেন না তারা।'