সাম্প্রতিক বছরগুলোতে বিশ্বের বিভিন্ন দেশে ট্রান্সজেন্ডারদের অধিকার নিয়ে ব্যাপক আলোচনা হয়েছে। এমন বাস্তবতায় যুক্তরাজ্য সরকার আইনি জেন্ডার পরিবর্তনে আবেদনের খরচ কমানোর উদ্যোগ নিয়েছে। তবে দেশটির সরকার এখনো
জেন্ডার পরিবর্তনে চিকিৎসা সংক্রান্ত শর্তগুলো বাতিলের সিদ্ধান্ত নেয়নি।
ট্রান্সজেন্ডার বলতে কী বোঝায়
একজন রূপান্তরকামীর জেন্ডার তার জন্ম সনদে থাকা লিঙ্গ পরিচয়ের চেয়ে ভিন্ন। শিশুকালে শারীরিক বৈশিষ্ট্যের ভিত্তিতে আমাদের স্ত্রী বা পুং লিঙ্গ হিসেবে রেকর্ড করা হয়।
তবে কিছু মানুষ ক্রোমোজোম বা অন্য কিছু শারীরিক বৈশিষ্ট্য নিয়ে জন্মায়, যা লিঙ্গ নির্ধারণের বিষয়টিকে জটিল করে ফেলে। এদের ইন্টারসেক্স (তৃতীয় লিঙ্গ) হিসেবে চিহ্নিত করা যেতে পারে।
কোনো ব্যক্তির আচরণ, প্রত্যাশা ও বাহ্যিক প্রকাশের ওপর নির্ধারণ হয় তার জেন্ডার। সাধারণভাবে লিঙ্গের সঙ্গে জেন্ডারের মিল থাকবে এমনটাই প্রত্যাশা করা হয়।
জেন্ডার পরিচয় নির্ধারণ হয় ব্যক্তিগত ধারণার (কীভাবে আমরা নিজেদের দেখি ও বর্ণনা করি এবং বহির্বিশ্বের কাছে নিজেদের কীভাবে উপস্থাপন করি) ভিত্তিতে। উদাহরণ হিসেবে বলা যায়, কেউ স্ত্রী লিঙ্গের হয়েও নিজেকে পুরুষ হিসেবে পরিচয় দিতে পারেন। অন্যদিকে কেউ পুং লিঙ্গের হয়েও নারী পরিচয়ে পরিচিত হতে পারেন।
এই দ্বৈত পরিচয়ের বাইরের মানুষজন নিজেদের শুধু নারী বা পুরুষ হিসেবে পরিচয় করান না কিংবা তারা জেন্ডারের ক্ষেত্রে ভিন্ন পন্থায় আগান। যেসব মানুষ লিঙ্গ ও জেন্ডারের মধ্যে বৈসাদৃশ্য খুঁজে পান, তাদের চিকিৎসা শাস্ত্রে জেন্ডার অসন্তোষ থাকা ব্যক্তি হিসেবে চিহ্নিত করা হয়। তারা কখনো কখনো নিজেদের ট্রান্সজেন্ডার বা ট্রান্স হিসেবে পরিচয় করান।
ট্রান্সজেন্ডাররা জীবনযাপনে কী পরিবর্তন আনতে পারেন
ট্রান্সজেন্ডার অনেকে নিজস্ব জেন্ডার পরিচয়ের সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ পোশাক পরিধান বা অন্যান্য আচরণের মাধ্যমে বাইরের জগতের সঙ্গে নিজেদের পরিচয় করান। নিজেদের বেছে নেওয়া নাম অনুযায়ী পরিচিত হতেই তারা স্বাচ্ছন্দ্যবোধ করেন।
এ জেন্ডারের লোকজন জন্মসনদ, পাসপোর্ট বা ড্রাইভিং লাইসেন্স পরিবর্তনের জন্যও আবেদন করতে পারেন। তাদের কেউ কেউ জেন্ডার পরিচয়ের সঙ্গে মিল রেখে শারীরিক পরিবর্তনও করতে পারেন।
এই শারীরিক পরিবর্তনের মধ্যে হরমোন পরিবর্তন ও ভয়েস থেরাপিও রয়েছে। কেউ কেউ অস্ত্রোপচারও করান।
উল্লিখিত সামাজিক, শারীরিক ও আইনি পরিবর্তনগুলােকে রূপান্তর বলা হয়।
সূত্র: বিবিসি