নারী অধিকার প্রতিষ্ঠার বৈশ্বিক সংগ্রামে এখনো গুরুত্বপূর্ণ কাজ বাকি রয়েছে বলে মন্তব্য করেছেন যুক্তরাষ্ট্রের সাবেক পররাষ্ট্রমন্ত্রী হিলারি ক্লিনটন।
সম্প্রতি এক ভার্চুয়াল অনুষ্ঠানে তিনি এ মন্তব্য করেন।
যুক্তরাষ্ট্রের ওয়াশিংটন ডিসিভিত্তিক সংবাদমাধ্যম দ্য হয়ার প্রতিবেদনে বলা হয়, অনুষ্ঠানে হিলারির পাশাপাশি নারী অধিকার ও জেন্ডার নিয়ে কথা বলেন যুক্তরাষ্ট্রের প্রথম নারী পররাষ্ট্রমন্ত্রী ম্যাডেলিন অলব্রাইট।
১৯৯৫ সালে চীনের বেইজিংয়ে অনুষ্ঠিত জাতিসংঘের চতুর্থ বিশ্ব নারী সম্মেলনের ২৫তম বার্ষিকী উপলক্ষে ভার্চুয়াল অনুষ্ঠানটির আয়োজন করা হয়।
জেন্ডার সমতার বিষয়টিকে সামনে আনার ক্ষেত্রে মাইলফলক বিবেচনা করা হয় বেইজিং সম্মেলনকে। এ সম্মেলনের পথ ধরেই আসে বেইজিং ঘোষণা ও প্ল্যাটফর্ম ফর অ্যাকশন অন উইমেন'স রাইটস। এ দুই উদ্যোগ বৈশ্বিক জেন্ডার অসমতা মোকাবিলায় আলোচনার পথ উন্মোচন করে।
বেইজিং ঘোষণায় শিক্ষায় সুযোগের সমতা, জেন্ডারকেন্দ্রিক সহিংসতাসহ নীতিনির্ধারণী ১২টি বিষয়ে মূল নজর দেওয়া হয়েছিল। যুক্তরাষ্ট্রের প্রতিনিধি হিসেবে ঘোষণা আসা সে সম্মেলনে যোগ দিয়েছিলেন হিলারি ও অলব্রাইট।
ভার্চুয়াল অনুষ্ঠানের সঞ্চালক ছিলেন যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের গ্লোবাল উইমেন'স ইস্যুজের দূত ম্যালানি ভারভার। অনুষ্ঠানটির আয়োজক ছিল নারীদের নিয়ে কাজ করা সংস্থা জর্জটাউন ইনস্টিটিউট ফর উইমেন, পিস অ্যান্ড সিকিউরিটি।
অনুষ্ঠানে নারী অধিকার প্রতিষ্ঠায় অগ্রগতি নিয়ে হিলারি বলেন, 'এটা ভেবে খুব হতাশ হচ্ছি যে, গত ২৫ বছরে আমাদের অবস্থার খুব বেশি পরিবর্তন হয়নি। কিন্তু যারা সামনে থেকে কাজ করে যাচ্ছেন, তাদের কাজ আমাকে আরও বেশি কথা বলার শক্তি জোগায়।'
তবে গত ২৫ বছরে বিভিন্ন ক্ষেত্রে নারীদের উন্নতিও দেখছেন সাবেক প্রেসিডেন্ট পদপ্রার্থী। তার মতে, মাতৃমৃত্যু হার হ্রাস পাওয়া ও শিক্ষায় প্রবেশাধিকার বাড়া নারীদের উন্নতির লক্ষণ।
হিলারি উদ্বেগ প্রকাশ করে বলেন, বিশ্বজুড়ে সম্প্রতি ফের মাথাচাড়া দিয়ে উঠেছে কর্তৃত্ববাদ। এর ফলে নারীদের উন্নতি ব্যাহত হবে।
বেইজিং সম্মেলনে যোগ দেওয়া কঠিন ছিল বলে জানান অলব্রাইট। তিনি বলেন, চীনের সম্মেলনের আয়োজকরা অন্য দেশ কিংবা বেসরকারি সংস্থার প্রতিনিধিদের প্রবেশাধিকার দিতে চায়নি।
অলব্রাইট বৃহত্তর জেন্ডার অসমতা কাটাতে কর্মস্থলে একে অপরকে সহযোগিতা করতে নারীদের প্রতি আহ্বান জানান। একই সঙ্গে উন্নয়নশীল দেশগুলোতে প্রযুক্তিতে নারীদের প্রবেশাধিকার বাড়ানোর পক্ষে সোচ্চার হওয়ারও আহ্বান জানান তিনি।
তার মতে, নারীদের জীবনমান উন্নয়নে বিভিন্ন দেশের সরকারকে টেকসই সংস্কার প্রচেষ্টায় মনোযোগ দিতে হবে।