বাংলাদেশ

মতামত

খেলা

বিনোদন

জীবনযাপন

তারুণ্য

কিড জোন

অন্যান্য

রেস-জেন্ডার

ফ্যাক্ট চেক

স্বাস্থ্য

আন্তর্জাতিক

শিক্ষা

অর্থ-বাণিজ্য

বিজ্ঞান-প্রযুক্তি

মাশরাফিকে ‘শীর্ষ ধনী’ বলা প্রতিবেদনই উধাও

  •    
  • ১ নভেম্বর, ২০২২ ০০:৪০

ক্রিকট্র্যাকারের কথিত ‘শীর্ষ ধনী’ ক্রিকেটারের তালিকার পর সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে সবচেয়ে বেশি আলোচনা চলছে মাশরাফি মোর্ত্তজাকে নিয়ে। ফেসবুকে ছড়িয়ে পড়া বিভিন্ন পোস্টে দাবি করা হয়েছে মাত্র চার বছরের ব্যবধানে ৯ কোটি ১৫ লাখ টাকা থেকে ৫১০ কোটি টাকার সম্পদের মালিক হয়েছেন মাশরাফি।

বাংলাদেশের ‘শীর্ষ ধনী’ ক্রিকেটারের একটি তালিকা ঝড় তুলেছে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে। ভারতীয় ক্রিকেটভিত্তিক ওয়েবসাইট ক্রিকট্র্যাকারে প্রকাশিত হয় তালিকাটি। আর এর ভিত্তিতে বাংলাদেশের কিছু সংবাদমাধ্যমও প্রকাশ করেছে প্রতিবেদন।

এসব প্রতিবেদনে দাবি করা হয়েছে দেশের শীর্ষ ধনী ক্রিকেটার হলেন জাতীয় ক্রিকেট দলের সাবেক অধিনায়ক মাশরাফি মোর্ত্তজা। তার সম্পদের মূল্যমান ৫১০ কোটি টাকা।

মাশরাফির পরে ৪০৭ কোটি টাকা নিয়ে দ্বিতীয় স্থানে আছেন সাকিব আল হাসান। এই তালিকায় একে একে আছে মুশফিকুর রহিম, তামিম ইকবাল, লিটন দাস, মুস্তাফিজুর রহমান, মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ, তাসকিন আহমেদ, রুবেল হোসেন ও মুমিনুল হকের নাম।

এই তালিকার পর সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে সবচেয়ে বেশি আলোচনা চলছে মাশরাফি মোর্ত্তজাকে নিয়ে। ফেসবুকে ছড়িয়ে পড়া বিভিন্ন পোস্টে দাবি করা হয়েছে মাত্র ৪ বছরের ব্যবধানে ৯ কোটি ১৫ লাখ টাকা থেকে ৫১০ কোটি টাকার সম্পদের মালিক হয়েছেন মাশরাফি।

এ ধরনের পোস্ট ছড়িয়েছে ফেসবুকে

তবে নিউজবাংলার অনুসন্ধানে দেখা গেছে যে ক্রিকট্র্যাকার ওয়েবসাইটের বরাতে বাংলাদেশের ধনী ক্রিকেটারদের কথিত তালিকা প্রচার করা হচ্ছে তারাই মূল প্রতিবেদনটি সরিয়ে ফেলেছে

‘টপ টেন রিচেস্ট বাংলাদেশ ক্রিকেটার্স’ শিরোনামের প্রতিবেদনটি ২৩ অক্টোবর প্রকাশ করেছিল ক্রিকট্র্যাকার।

অনুমাননির্ভর তথ্য ও কিছু অখ্যাত ওয়েবসাইটকে উদ্ধৃত করে এই তালিকা সাজিয়েছিলেন নিবন্ধের লেখক তেজস রাঠি। মাশরাফির সম্পদের তথ্য দেয়ার ক্ষেত্রেও ব্যবহার করা হয়নি নির্দিষ্ট কোনো আর্থিক প্রতিষ্ঠান বা চার্টাড অ্যাকাউন্ট্যান্টের কোনো বক্তব্য বা তথ্য।

তেজস রাঠির লেখাটি ক্রিকট্র্যাকারে প্রকাশিত হয় ২৩ অক্টোবর

ক্রিকট্র্যাকার ক্রিকেটের স্কোর, সংবাদ ও প্রতিবেদনভিত্তিক একটি ভারতীয় সাইট যেটির প্রতিষ্ঠাতা ও প্রধান নির্বাহী সৈয়দ সাজ্জাদ পাশা। ২০১৩ সালে যাত্রা শুরু করা সাইটটি ভারতের বেঙ্গালুরু থেকে পরিচালিত হচ্ছে।

প্রায় এক দশক ধরে ক্রিকট্র্যাকার ক্রিকেটপ্রেমীদের কাছে স্কোর, বিশ্লেষণ, প্রিয় তারকার সাক্ষাৎকার ও প্রতিবেদনের জন্য সমাদৃত। নিজেদের কন্টেন্ট প্রকাশের পাশাপাশি সাইটটি ভক্তদের কিছু লেখাও ছাপায়। এমনই একটি লেখা ছিল তেজস রাঠির কথিত নিবন্ধ। পরে এটি সরিয়ে নেয় ক্রিকট্র্যাকার কর্তৃপক্ষ।

ক্রিকট্র্যাকারের ক্রিকেট অ্যাপিল নামে একটি বিভাগ রয়েছে, যেখানে ফ্রিল্যান্স লেখক ও ভক্তদের লেখা প্রকাশ করা হয়। ফ্রিল্যান্স ক্রিকেট লেখক তেজস রাঠির আলোচিত প্রতিবেদনটি ক্রিকেট অ্যাপিল বিভাগেই প্রকাশিত হয়েছিল।

তেজস রাঠির লেখাটি এখন আর দেখা যাচ্ছে না

তেজসের আরেকটি প্রতিবেদন ২৩ অক্টোবর ক্রিকেট অ্যাপিল বিভাগে ছাপা হয়। এর শিরোনাম ‘টেন মোস্ট পপুলার বাংলাদেশ ক্রিকেটার্স অ্যান্ড দেয়ার ওয়াইভস’ (জনপ্রিয় ১০ বাংলাদেশি ক্রিকেটার ও তাদের স্ত্রী)।

তেজস রাঠির লেখায় তথ্যপ্রমাণনির্ভর কোনো দাবি বা অনুসন্ধান নেই। ক্রিকট্র্যাকারের সাইটেও ডিসক্লেইমার অংশে লেখা রয়েছে, সাইটের যেকোনো লেখা সম্পূর্ণ নিজ দায়িত্বে অন্য কেউ ব্যবহার করতে পারবে।

ক্রিকট্র্যাকারের ডিসক্লেইমার অংশে রয়েছে সতর্কবার্তা

তেজস রাঠির লিংকডইন প্রোফাইলে দেখা গেছে, তিনি দুটি প্রতিষ্ঠানের শিক্ষানবিশ পদে কর্মরত আছেন ও ক্রীড়া বিষয়ক সাইট স্পোর্টস ক্রীড়ায় খণ্ডকালীন জুনিয়র এডিটর। এ ছাড়া ওয়ান ক্রিকেট ও স্পোর্টস টাইগার নামের সাইটগুলোতে তিনি লেখেন বলে উল্লেখ করা আছে।

‘যাচ্ছেতাই’ লেখায় আক্ষেপ মাশরাফির

কথিত শীর্ষ ধনী ক্রিকেটারের তালিকা নিয়ে সোমবার মধ্যরাতে ফেসবুকে নিজের ভেরিফায়েড পেজে একটি স্ট্যাটাস দিয়েছেন মাশরাফি মোর্ত্তজা।

তিনি লেখেন (বাক্য ও বানান অপরিবর্তিত), ‘ভিনদেশি কোনো হাবিজাবি সস্তা ওয়েবসাইট বা ফেসবুক পেজ তাদের মনগড়া যা ইচ্ছা লিখতেই পারে। সেসবকে পাত্তা দেওয়ার কিছু নেই। কিন্তু তাদের সূত্র ধরে নিয়ে যখন আমাদের দেশের নানা ওয়েবসাইট যা ইচ্ছা তাই লিখে দেয়, তখন দুঃখ লাগে বটে!

‘দেশের একজন মানুষকে নিয়ে লেখা হচ্ছে, আপনারা চাইলেই তো খোঁজখবর নিতে পারেন। তা না করে উল্টো তাদের উদ্ভট নিউজের সূত্র ধরে আপনারা নিউজ করছেন। সাংবাদিকতার নীতি-নৈতিকতার ন্যূনতম চর্চা না হয় করলেন না, অন্তত নিজেদের এতটা সস্তা হিসেবে তুলে ধরতেও তো বিবেকে নাড়া দেওয়া উচিত...!’

নির্বাচনি হলফনামায় মাশরাফির সম্পদ কত

একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে মনোনয়নপত্র দাখিলের সময় হলফনামায় মাশরাফি চাকরিসহ বিভিন্ন খাত থেকে বছরে আয় দেখিয়েছেন ১ কোটি ৯৯ লাখ ১৮ হাজার ৭০০ টাকা।

নির্বাচনি হলফনামায় মাশরাফির সম্পদের তথ্য

হলফনামা অনুযায়ী তখন তার অস্থাবর সম্পদের আর্থিক মূল্য ছিল ৯ কোটি ১৪ লাখ ৫৯ হাজার ৫১ টাকা। আর স্থাবর সম্পদের আর্থিক মূল্য ছিল ৫ কোটি ৪৬ লাখ ২৪ হাজার টাকা।

সে অনুযায়ী গত জাতীয় সংসদ নির্বাচনের সময় মাশরাফির স্থাবর ও অস্থাবর সম্পদের আর্থিক মূল্য সব মিলিয়ে ছিল ১৪ কোটি ৬০ লাখ ৮৩ হাজার ৫১ টাকা।

এ বিভাগের আরো খবর