নেত্রকোণার একটি পূজামণ্ডপের দুর্গা প্রতিমা বিসর্জনের সময় অর্ধশতের বেশি মানুষ সেটি ‘একবিন্দু’ সরাতে পারেননি। ফলে প্রতিমা বিসর্জন না দিয়ে মণ্ডপে রেখে দেয়ার সিদ্ধান্ত হয়েছে। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে ছড়িয়েছে এমন একটি পোস্ট।
অসংখ্য শেয়ার হওয়া ওই পোস্টে বলা হয় (বাক্য এ বানান অপরিবর্তিত), ‘নেএকোনা জেলা। খালিয়াজুড়ি থানা।খলাপাড়া গ্রামে এক অলৌকিক ঘটনা ঘটে গেছে। প্রতিমা বিসর্জ্জনের সময় বহু চেষ্টা করেও। মা দূর্গার প্রতিমাকে নিজের জায়গা থেকে এক বিন্দু সরাতে পারেনি। প্রায় অর্ধশতাধিকের ও বেশি মানুষ চেষ্টা করেছে।
‘এই দুর্গাপূজাটি গত ১০৮ বছর ধরে উদ্ভাযাপন হচ্ছে। গ্রামের সকল হিন্দুধর্মালম্বী মিলে এই সিদ্ধান্ত নিয়েছে যে। মা দুর্গার প্রতিমা নিজ জায়গায় স্থাপিত থাকবে। এই বছর আর বিসর্জন দেওয়া হবে না।’
ফেসবুকে বিষয়টি ছড়িয়ে পড়ার পর সেই মণ্ডপে শত শত মানুষ ভিড় করছেন, তাদের সামলানোই কঠিন হয়ে পড়েছে।
তবে এটি পুরোপুরি গুজব বলে নিউজবাংলাকে নিশ্চিত করেছেন গ্রামের পূজা কমিটির সভাপতি ইন্দ্র গোস্বামী।
তিনি বলেন, ‘তিনদিন ধরে ফেসবুকসহ বিভিন্ন সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে অপপ্রচার চলছে। হাজার হাজার পোস্ট, শেয়ার ও কমেন্ট হচ্ছে। তাতে বলা হচ্ছে, অনেক মানুষ চেষ্টা করেও পূজামণ্ডপ থেকে দুর্গা প্রতিমা সরাতে পারেননি।
‘তবে এ ধরনের কোনো ঘটনা ঘটেনি। আমি বা আমরা (আয়োজকেরা) কাউকে এ ধরনের ঘটনার কথা বলিওনি।’
প্রকৃত ঘটনা জানিয়ে ইন্দ্র গোস্বামী বলেন, ‘আমাদের পারিবারিক মণ্ডপে ১০৮ বছর ধরে দুর্গাপূজা করা হচ্ছে। এবার আমি পূজার প্রস্তুতির আগেই প্রতিমা বিসর্জন না দেয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছিলাম। সে কারণেই বিসর্জন দেয়া হয়নি।
‘মণ্ডপ থেকে প্রতিমা সরানোর কোনো চেষ্টাও করা হয়নি। কাজেই প্রতিমা বিসর্জন দিতে অর্ধ শতাধিক লোকের চেষ্টার বিষয়টিও কাল্পনিক।’
তিনি বলেন, ‘ফেসবুকে গুজবটি প্রচার হওয়ার পর আশপাশের বিভিন্ন এলাকার শত শত লোক আমাদের বাড়িতে ভিড় করছেন। অনেকে ফোন করে প্রকৃত ঘটনা জানতে চাচ্ছেন। বিষয়টি নিয়ে আমরা খুবই বিব্রত।’
একই বাড়ির টিটু গোস্বামী মনে করেন এই প্রচার উদ্দেশ্যমূলক। তিনি বলেন, ‘কারা, কী উদ্দেশে এ ধরনের অপপ্রচার চালাচ্ছে বুঝতে পারছি না। তবে এগুলো শোনার পর আমাদের নিয়ে মানুষ হাসাহাসি করবে।’
সাবেক ইউনিয়ন পরিষদ সদস্য চন্দন সরকার বলেন, ‘দূর-দূরান্ত থেকে অনেকে আমাকেও ফোন করে ঘটনাটি সম্পর্কে জানতে চাচ্ছেন। তবে কেউ এমন ঘটনা দেখেছে বলে আমার জানা নেই।’