বাংলাদেশ

মতামত

খেলা

বিনোদন

জীবনযাপন

তারুণ্য

কিড জোন

অন্যান্য

রেস-জেন্ডার

ফ্যাক্ট চেক

স্বাস্থ্য

আন্তর্জাতিক

শিক্ষা

অর্থ-বাণিজ্য

বিজ্ঞান-প্রযুক্তি

জলবায়ু পরিবর্তনে মানুষের ভূমিকা কম, আসলেই কি

  •    
  • ১৯ আগস্ট, ২০২২ ২০:৫১

গত ২৪ জুলাই ‘আই লাভ কার্বন ডাই-অক্সাইড’ নামে একটি ফেসবুক গ্রুপে শেয়ার করা হয় গ্রাফিকটি। ক্যাপশনে বলা হয়, “যে কেউ এক ঘণ্টা গবেষণা করে একই উপসংহারে আসবে, জলবায়ুর ওপর মানুষের প্রভাব সাইক্লোনে হাঁচি দেয়ার মতোই!”

বায়ুমণ্ডলে মানুষের কারণে নির্গত কার্বন ডাই-অক্সাইডের (CO2) ঘনত্ব জলবায়ু পরিবর্তনে খুব একটা প্রভাব ফেলে না- এমন একটা গ্রাফিক ফেসবুকে শেয়ার হয়েছে কয়েক হাজার বার।

আসলে এমন দাবির কোনো ভিত্তি নেই। এটা মানুষকে বিভ্রান্ত করছে। বিজ্ঞানীরা বলছেন, কার্বন ডাই-অক্সাইড পৃথিবীর তাপমাত্রায় বড় প্রভাব ফেলে। মানুষের জীবাশ্ম জ্বালানি পোড়ানোর কারণে বায়ুমণ্ডলে এই গ্যাসের মাত্রা মারাত্মকভাবে বেড়েছে, যা বিশ্বজুড়ে উত্তাপের মূল কারণ।

গত ২৪ জুলাই ‘আই লাভ কার্বন ডাই অক্সাইড’ নামে একটি ফেসবুক গ্রুপে শেয়ার করা হয় গ্রাফিকটি। ক্যাপশনে বলা হয়, “যে কেউ এক ঘণ্টা গবেষণা করে একই উপসংহারে আসবে, জলবায়ুর ওপর মানুষের প্রভাব সাইক্লোনে হাঁচি দেয়ার মতোই!”

লেখাটির নিচে বায়ুমণ্ডলে কার্বন ডাই-অক্সাইড এবং অন্যান্য গ্যাসের ঘনত্ব সম্পর্কে একটি গ্রাফিক রয়েছে। যা নির্দেশ করে কার্বন ডাই-অক্সাইড হলো এক ধরনের ‘ট্রেস গ্যাস’; যা পৃথিবীর বায়ুমণ্ডলে থাকা গ্যাসের মাত্র ০.০৩ শতাংশ।

জলবায়ু পরিবর্তন-সংক্রান্ত জাতিসংঘের আন্তসরকার প্যানেলের (আইপিসিসি) তথ্যকে উদ্ধৃত করে গ্রাফিকে আরও বলা হয়, “মানবসৃষ্ট কার্বন ডাই-অক্সাইডের মাত্রা পৃথিবীর মোট বায়ুমণ্ডলের ০.১ শতাংশের ৩%-এর ৩%..., যা ০.০০০০০৯ শতাংশ।”

“মানুষ শিগগিরই জলবায়ু পরিবর্তন করছে না।”

যা-ই হোক, এটি বিশ্ব উষ্ণায়নে কার্বন ডাই-অক্সাইডের ব্যাপক ভূমিকাকে ভুলভাবে উপস্থাপন করে।

“ট্রেস গ্যাসেস”-এর লাইনটি যুক্তরাষ্ট্রের মহাকাশ সংস্থা নাসার সাইটের একটি পেজ থেকে নেয়া হয়েছে বলে ধারণা করা হচ্ছে।

তবে এখানে নাসার ট্রেস গ্যাসের তথ্য থেকে মূল অংশটি বাদ দেয়া হয়েছে। যেখানে কার্বন ডাই-অক্সাইড এবং অন্যান্য ট্রেস গ্রিনহাউস গ্যাসগুলোর (নাইট্রাস অক্সাইড, মিথেন এবং ওজন) উষ্ণায়নে প্রভাব ব্যাখ্যা করেছে নাসা।

নাসা বলছে, যদিও গ্রিনহাউস গ্যাসগুলো বায়ুমণ্ডলের কেবল ছোট্ট একটি অংশ, তবুও এগুলো পৃথিবীর তাপকে আটকে রাখে। ফলে আমাদের গ্রহ উত্যপ্ত হয়ে ওঠে।

‘উষ্ণায়নে কার্বন ডাই-অক্সাইডের প্রভাব অনেক’

জীবাশ্ম জ্বালানি উনিশ শতকের পর থেকে ব্যাপকভাবে পোড়ানোর কারণে বায়ুমণ্ডলে কার্বন ডাই-অক্সাইডের পরিমাণ বেড়েছে, যা ১৯৬০ সাল থেকে ৪০০ পিপিএমেরও বেশি

ইংল্যান্ডের এক্সেটার বিশ্ববিদ্যালয়ের বায়ুমণ্ডল বিশেষজ্ঞ এন্ড্রু ওয়াটসন বলেন, ‘কার্বন ডাই-অক্সাইড বায়ুমণ্ডলের একটি গৌণ উপাদান। তা সত্ত্বেও এটি গ্রহের তাপমাত্রার ওপর বড় প্রভাব ফেলে। কারণ এটি ইনফ্রা-রেড তাপ বিকিরণ শোষণ করে।’

আইপিসিসির ২০২১ সালের এক প্রতিবেদনে কার্বন চক্রের একটি বিশদ অধ্যায় রয়েছে। যেখানে ৭১৩ পৃষ্ঠার একটি গ্রাফে দেখানো হয়, কীভাবে বিভিন্ন গ্যাস ‘রেডিয়েটিভ ফোর্সিং’-এ অবদান রাখে। এই প্রক্রিয়ায় সূর্য থেকে অনেক বেশি তাপ পৃথিবীর বায়ুমণ্ডলে প্রবেশ করে, সে তুলনায় বায়ুমণ্ডল থেকে তাপ বের হওয়ার পরিমাণ অনেক কম।

এটি জলবায়ু পরিবর্তনে মানুষের অবদানের একটি মূল পরিমাপ

‘অদ্ভুত হিসাব’

পোস্টের ০.০০০০০৯ শতাংশের অংশটি ২০১৮ সালে প্রকাশিত একটি ব্লগ থেকে নেয়া হয়েছে বলে ধারণা করা হচ্ছে।

ওয়াটসন বলেন, ‘তারা যে তথ্যটি উদ্ধৃত করেছে, তা ভুল। ওই নিবন্ধে একাধিক ভুল রয়েছে।’

‘ওই নিবন্ধে উদ্ভট পদ্ধতিতে গণনা করা হয়েছিল। যেখানে বলা হয়, মানুষের কারণে বায়ুমণ্ডলে ৩ শতাংশ কার্বন ডাই-অক্সাইড যুক্ত হয়’... যোগ করেন ওয়াটসন।

‘পদ্ধতিটি বায়ুমণ্ডলে কার্বন ডাই-অক্সাইড প্রবাহকে গণনা করলেও মানুষের কারণে নির্গমনের জন্য এটি কার্যকর নয়।’

ওয়াটসনের হিসাবে, মোট বায়ুমণ্ডলীয় মোলার আয়তনের প্রায় ০.০০০৫ শতাংশ কার্বন ডাই-অক্সাইড প্রতি বছর মানুষের কারণে নির্গত হয়, যা পোস্টে দেয়া তথ্যের চেয়ে ৫০ গুণ বেশি।

এ বিভাগের আরো খবর