জ্বালানির দাম বাড়ানোর প্রতিবাদে বাংলাদেশে ব্যাপক বিক্ষোভ হয়েছে, এমন একটি ভিডিও ঘুরপাক খাচ্ছে সোশ্যাল মিডিয়ায়। ভিডিওতে দাবি করা হয়, এটি চলতি মাসের (আগস্ট) ঘটনা।
ভিডিওতে দেখা যায়, রাস্তায় জিনিসপত্র পোড়ানো হচ্ছে, ছোড়া হচ্ছে বিস্ফোরক। কাঁদানে গ্যাস ছুড়ছে পুলিশও।
ভিডিওটি আসলে ২০১৩ সালের মে মাসের ৬ তারিখের। ধর্ম অবমাননার কোনো ঘটনায় সেদিন পুলিশের সঙ্গে সংঘর্ষে জড়িয়েছিল বিক্ষুব্ধরা।
রয়টার্সের ফ্যাক্টচেক টিম বলছে, ভুল ক্যাপশনে ভিডিওটি শেয়ার করা হয়েছে।
টুইটারে গত ৭ আগস্ট শেয়ার করা ভিডিওর পাশে লেখা হয়, ‘বাংলাদেশ… সরকার মধ্যরাত থেকে পেট্রলের দাম ৫১ শতাংশ এবং ডিজেলের ৪২ শতাংশ বাড়ানোর সিদ্ধান্ত নেয়ার পর, বেশ কয়েকটি শহরে বিক্ষোভ এবং তীব্র সংঘর্ষ শুরু হয়েছে…. সারা বাংলাদেশে পেট্রল স্টেশনে লম্বা লাইনের খবর পাওয়া গেছে।’
টুইটটিতে লাইক পড়েছে হাজার হাজার।
টুইটারের পাশাপাশি ফেসবুকেও শেয়ার হয় ভিডিওটি। ক্যাপশনে লেখা হয়, ‘বাংলাদেশ... সরকার পেট্রল এবং ডিজেলের দাম বাড়ানোর সিদ্ধান্ত নেয়ার পর বেশ কয়েকটি শহরে বিক্ষোভ এবং তীব্র সংঘর্ষ শুরু হয়েছে।
Bangladesh… protests and hard clashes have erupted in several cities after the government has decided to increase petrol prices by 51% and diesel by 42% effective midnight…. Huge lines are reported at petrol stations all over Bangladesh…🔊sound pic.twitter.com/JQmUsLBIAD
— Wall Street Silver (@WallStreetSilv) August 7, 2022বাংলাদেশ ৬ আগস্ট জ্বালানি তেলের দাম প্রায় ৫০ শতাংশ বাড়ায়। ভর্তুকির বোঝা কমানোর লক্ষ্যে এ সিদ্ধান্ত বলে জানায় সরকার। তবে এই সিদ্ধান্ত মূল্যস্ফীতি বাড়াবে বলে আশঙ্কা করছেন অর্থনীতিবিদরা। ইতোমধ্যেই মূল্যস্ফীতি ৭ শতাংশের ওপরে রয়েছে।
৪১৬ বিলিয়ন ডলারের অর্থনীতির দেশ বাংলাদেশ। বছরের পর বছর ধরে বিশ্বের অন্যতম দ্রুত বর্ধনশীল দেশ হিসেবে পরিচিতি পাচ্ছে দক্ষিণ এশিয়ার দেশটি।
তবে ইউক্রেন যুদ্ধের কারণে জ্বালানি ও নিত্যপণ্যের দাম বাড়ায় আমদানি কমাতে বাধ্য হয়েছে ঢাকা। ঋণ চাইতে হচ্ছে আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিলসহ বিভিন্ন আন্তর্জাতিক সংস্থাগুলোর কাছে।
অবস্থা বিবেচনায় লিটারপ্রতি পেট্রলের দাম ৫১.২% বাড়িয়ে ১৩০ টাকা, ৯৫–অকটেনের দাম ৫১.৭% বাড়িয়ে ১৩৫ টাকা, ডিজেল ও কেরোসিনের দাম ৪২.৫% বাড়িয়ে ১১৪ টাকা করা হয়েছে।
স্থানীয় মিডিয়া বলছে, এই দাম বাড়ানোর প্রতিবাদে লোকজন এখানে প্রতিবাদ করছে।
রয়টার্সের ফ্যাক্টচেক দল বিষয়টি খতিয়ে দেখেছে। গুগলে বিপরীত চিত্র অনুসন্ধানে দেখা গেছে, ভিডিওটি ২০২২ সালের বিক্ষোভের সঙ্গে একেবারেই সম্পর্কিত নয়।
ভিডিওটি আসলে ২০১৩ সালের মে মাসের। বাংলাদেশে একটি ধর্ম অবমাননাবিরোধী আইনের বিরুদ্ধে হিংসাত্মক প্রতিবাদে ওই বিক্ষোভ হয়েছিল। ধর্মীয় সংস্কারের দাবিতে ২০১৩ সালের ৬ মে হওয়া বিক্ষোভে পুলিশের সঙ্গে কট্টরপন্থিদের সংঘর্ষে কমপক্ষে ২০ জন নিহত হয়েছিলেন।