বাংলাদেশ

মতামত

খেলা

বিনোদন

জীবনযাপন

তারুণ্য

কিড জোন

অন্যান্য

রেস-জেন্ডার

ফ্যাক্ট চেক

স্বাস্থ্য

আন্তর্জাতিক

শিক্ষা

অর্থ-বাণিজ্য

বিজ্ঞান-প্রযুক্তি

ঘূর্ণিঝড়ের নাম ‘আসানি’, নাকি ‘অশনি’?

  •    
  • ৮ মে, ২০২২ ১৫:০২

আবহাওয়া অধিদপ্তরের উপপরিচালক সানাউল্লাহ নিউজবাংলাকে বলেন, ‘এটা মৌলিক কোনো ভুল নয়। কারণ ইংরেজি শব্দ (Asani) ব্যবহার করা হচ্ছে। (ইংরেজিতে) এটা কিন্তু ঠিকই লেখা রয়েছে। আবহাওয়া অধিদপ্তরের কর্মকর্তারও আসানিই উচ্চারণ করছেন। তবে অনেক গণমাধ্যম অশনি লিখছে।’

বঙ্গোপসাগরে অবস্থানরত গভীর নিম্নচাপটি ঘূর্ণিঝড়ে পরিণত হয়েছে। আবহাওয়া অধিদপ্তরের তথ্য অনুযায়ী, বোববার বেলা ১২টায় ঘূর্ণিঝড়টের অবস্থান ছিল কক্সবাজার সমুদ্রবন্দর থেকে ১ হাজার ১২৫ কিলোমিটার দক্ষিণ-দক্ষিণপশ্চিমে।

বঙ্গোপসাগরে তৈরি হওয়া ঘূর্ণিঝড়টির নাম নিয়ে তৈরি হয়েছে বিভ্রান্তি। অনেক সংবাদ মাধ্যম লিখেছে ‘অশনি’। বাংলাদেশ আবহাওয়া অধিদপ্তরের পক্ষ থেকে পাঠানো বিজ্ঞপ্তিতে ঝড়টির ইংরেজিতে নাম ‘Asani’ লেখা হলেও বাংলায় ‘অশনি’ লেখা হয়েছে।

তবে এই নামটি এসেছে শ্রীলঙ্কার সিংহলি ভাষার শব্দ ‘আসানি’ থেকে। এই শব্দটির বাংলা অর্থ ‘ক্রোধ’, আর বাংলা ‘অশনি’ শব্দের অর্থ হলো ‘বাজ’।

ঘূর্ণিঝড়ের নাম কীভাবে দেয়া হয়

বিশ্বজুড়ে ঘূর্ণিঝড় নামকরণে ওয়ার্ল্ড মিটিওরোলজিক্যাল অর্গানাইজেশনের (ডব্লিউএমও) একটি তালিকা রয়েছে। এতে চক্রাকারে ভারত মহাসাগরীয় অঞ্চলের দেশগুলোর দেয়া নাম অনুযায়ী নামকরণ হয় ঘূর্ণিঝড়গুলোর।

এই তালিকা অনুযায়ী এবারের ঘূর্ণিঝড়টির নাম দিয়েছে শ্রীলঙ্কা। সিংহলি ভাষায় ‘আসানি’ শব্দের অর্থ ক্রোধ। ডব্লিউএমওর ওয়েবসাইটে নামটির উচ্চারণও দেয়া আছে।

ডব্লিউএমও-এর তালিকায় আসানির সঠিক উচ্চারণও দেয়া রয়েছে

ডব্লিউএমও তালিকা অনুসারে এ অঞ্চলে আসানির পর যে ঘূর্ণিঝড়টি আসবে, তার নাম দিয়েছে থাইল্যান্ড। সেই নামটি হবে ‘সিত্রাং’।

ডব্লিউএমওর ৪৫তম বার্ষিক সভা হয় ২০১৮ সালে। ওমানের রাজধানী মাসকাটে অনুষ্ঠিত সেই সভায় দীর্ঘ মেয়াদে যেসব ঘূর্ণিঝড় আসবে সেগুলোর নাম চূড়ান্ত করা হয়।

উত্তর ভারত মহাসাগরীয় অঞ্চলের দেশগুলোর ১৬৯টি ঘূর্ণিঝড়ের নাম এরই মধ্যে নির্ধারিত করা আছে। এই অঞ্চলের ১৩টি দেশের ১৩টি করে দেয়া নামের ভিত্তিতে ১৩টি চক্রে আছে মোট ১৬৯টি ঝড়।

আরও পড়ুন: সাইক্লোনের নাম ‘ইয়াস’, ‘যশ’ নয়

প্রতিটি চক্রের শুরু বাংলাদেশের দেয়া নামের ঝড়ের মাধ্যমে। বাংলাদেশের দেয়া নামগুলোর মধ্যে রয়েছে নিসর্গ, বিপর্যয়, অর্ণব, উপকূল, বর্ষণ, রজনী, নিশীথ, ঊর্মি, মেঘলা, সমীরণ, প্রতিকূল, সরোবর, মহানিশা। নিসর্গ এরই মধ্যে আঘাত হেনেছে উপকূলে।

‘আসানি’কে ‘অশনি’ লেখার কারণ কী

সিংহলি শব্দ ‘আসানি’কে ‘অশনি’ বলায় ‘বড় কোনো ভুল হয়নি’ বলে দাবি করছে আবহাওয়া অধিদপ্তর।

সংস্থাটির উপপরিচালক সানাউল্লাহ নিউজবাংলাকে বলেন, ‘এটা মৌলিক কোনো ভুল নয়। কারণ ইংরেজি শব্দ (Asani) ব্যবহার করা হচ্ছে। (ইংরেজিতে) এটা কিন্তু ঠিকই লেখা রয়েছে। আবহাওয়া অধিদপ্তরের কর্মকর্তারও আসানিই উচ্চারণ করছেন। তবে অনেক গণমাধ্যম অশনি লিখছে।’

তাহলে আবহাওয়া অধিদপ্তর তাদের বিজ্ঞপ্তিতে বাংলায় কেন ‘অশনি’ লিখছে এবং এতে শব্দগত বিভ্রান্তি তৈরি হচ্ছে কিনা, এমন প্রশ্নের সরাসরি কোনো জবাব দেননি সানাউল্লাহ।

তিনি বলেন, ‘ইংরেজিতে আমরা কিন্তু আসানি (Asani) লিখেছি। হয়তো বাংলা উচ্চারণের সময় অনেকেই অশনি বা আসানি বলছে এটা কোনো বড় বিষয় নয়। আমাদের জানতে হবে এটি ঘূর্ণিঝড় না অন্যকিছু। আর বাংলাদেশের উপরে এর প্রভাব পড়বে কি না।’

আইপিএ এবং মূল সিংহলি শব্দের উচ্চারণ থেকেও ‘আসানি’ উচ্চারণের বিষয়ে নিশ্চিত হয়েছে নিউজবাংলা।

কেন দেয়া হয় সাইক্লোনের নাম?

ডব্লিউএমওর ওয়েবসাইটের তথ্য অনুযায়ী সাইক্লোনের নামকরণ হয় পাঁচটি কারণে:

১. প্রতিটি সাইক্লোনকে আলাদা করে চেনার জন্য

২. এর গতিবিধি সম্পর্কে সচেতনতা বাড়াতে

৩. একই অঞ্চলে একই সময়ে একাধিক সাইক্লোনের ক্ষেত্রে বিভ্রান্তি দূর করতে

৪. দ্রুত বহুজনের কাছে সতর্কবার্তা পৌঁছে দিতে

৫. সহজে উপকূলীয় সাইক্লোনগুলোকে মনে রাখতে

এ বিভাগের আরো খবর