যুক্তরাষ্ট্রসহ ন্যাটোভুক্ত দেশগুলোর সেনারা আফগানিস্তান ছাড়ার শেষ মুহূর্তে রাষ্ট্রক্ষমতা দখলে তৎপর হয় তালেবান।
খুব দ্রুতই আফগানিস্তানের বিশাল অংশ দখল করে নেয় সংগঠনটি। গত সপ্তাহে রাজধানী কাবুল দখলের পর দেশের শাসনভার দীর্ঘ ২০ বছর পর তালেবানের হাতেই ফের যাচ্ছে।
নব্বই দশকে তালেবানের শাসনামল আফগান নারীদের জন্য মধুর ছিল না। নির্মম শারীরিক ও মানসিক নির্যাতন চলে তাদের ওপর। মৌলিক অধিকার থেকে তাদের বঞ্চিত করা হয়।
এবার তালেবান ফের নারীদের ওপর ত্রাসের রাজত্ব কায়েম করবে কি না, তা নিয়ে শঙ্কায় আছে আফগান নারীরা। মৌলিক অধিকার লঙ্ঘনের ভয়ে অনেক নারীই দেশ ছেড়ে পালাতে চাইছে।
এমন পরিস্থিতিতে সশস্ত্র কয়েক ব্যক্তির জনসমক্ষে এক নারীকে গুলি করার ভিডিও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে বেশ ভাইরাল হয়েছে।
ভিডিওতে দাবি করা হয়, পোশাক ঠিকঠাকভাবে না পরায় ওই নারীকে মাথায় গুলি করে হত্যা করেছে তালেবান।
ভিডিওর শিরোনামে লেখা, ‘যথাযথ পোশাক না পরায় আফগানিস্তানের এই নারীকে তালেবান হত্যা করে।’
ইন্ডিয়া টুডের অ্যান্টি ফেইক নিউজ ওয়ার রুম (এএফডব্লিউএ) ভিডিওটির দাবি নিয়ে অনুসন্ধান শুরু করে।
এএফডব্লিউএর অনুসন্ধানে দেখা যায়, ভিডিওটি আফগানিস্তানের নয়, সিরিয়ার এবং এটি ছয় বছরের বেশি সময় আগে ধারণ করা।
২০১৫ সালের ১৫ জানুয়ারি ডেইলি মেইলের প্রতিবেদনে বলা হয়, ব্যভিচারের অভিযোগে এক নারীকে প্রকাশ্যে গুলি করে খুন করেছে আল-কায়েদা।
সিরিয়ার উত্তর-পশ্চিমাঞ্চলীয় মারাত আল-নুমান শহরে ওই ঘটনা ঘটে। জঙ্গি সংগঠন আইএস ওই ঘটনার নিন্দা জানিয়েছিল।
কেবল ডেইলি মেইল নয়, সিএনএনের মতো আরও অনেক সংবাদমাধ্যম ওই খবর প্রকাশ করে।
যুক্তরাজ্যভিত্তিক সংস্থা সিরিয়ান অবজারভেটরি ফর হিউম্যান রাইটস (এসওএইচআর) তাদের প্রতিবেদনে জানায়, আল-কায়েদার সিরীয় সংগঠন আল-নুসরা ফ্রন্ট দেশটির ইদলিব শহরের বাইরে ওই নারীকে হত্যা করে।
প্রতিবেদনে আরও বলা হয়, মৃত্যুর আগে নিজের সন্তানদের দেখার অনুরোধ জানিয়েছিলেন ওই নারী। খুনিরা তার ওই অনুরোধ প্রত্যাখ্যান করে।
আফগানিস্তানজুড়ে তালেবান ব্যাপক মাত্রায় মানবাধিকার লঙ্ঘন করলেও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ভাইরাল হওয়া ভিডিওটির হত্যাকারীরা তালেবানের সদস্য নন।