যুক্তরাষ্ট্রের অ্যালাবামা অঙ্গরাজ্যে পানিতে মাংসখেকো ব্যাকটেরিয়া ছড়িয়েছে বলে সম্প্রতি গুঞ্জন ছড়ায় সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে।
এমনকি বার্মিংহামের ৫০ মাইল উত্তরে অবস্থিত লুইস স্মিথ হ্রদ থেকে মানুষকে দূরে থাকার নির্দেশ দেয়া হয়েছে বলেও শোনা যাচ্ছিল।
এর আগে ২০১৭ সালের জুলাইয়ে অ্যালাবামাজুড়ে পানির নমুনায় মাংসখেকো ব্যাকটেরিয়ার উপস্থিতি নিয়ে খবর বেরিয়েছিল।
তবে এবারের গুঞ্জন একেবারেই ভিত্তিহীন বলে ইউএসএ টুডের প্রতিবেদনে জানানো হয়েছে।
বিদ্যুৎ সরবরাহকারী প্রতিষ্ঠান অ্যালাবামা পাওয়ার হ্রদটি থেকে সাঁতারু ও ভ্রমণপ্রেমীদের দূরে থাকার নির্দেশ দিয়েছে বলে গুজব রটেছিল সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে।
ভাইরাল পোস্টগুলোতে দাবি করা হয়, স্বতন্ত্র এক গবেষণায় গত ২২ জুন হ্রদ থেকে সংগৃহীত নমুনায় মাংসখেকো ব্যাকটেরিয়া অনেক বেশি পরিমাণে পাওয়া গেছে।
২৮ জুন ফেসবুকে একটি পোস্টে কথিত চিঠির উদ্ধৃতি দিয়ে বলা হয়, ‘নেক্রোটাইজিং ফ্যাসিটিস বা মাংসখেকো ব্যাকটেরিয়া উদ্বেগজনকভাবে বেড়ে গেছে লুইস স্মিথ লেকে। আমরা অ্যালাবামা পাওয়ার কোম্পানি হ্রদটিতে নৌকা চালানো ও সাঁতার কাটা থেকে সবাইকে বিরত থাকার অনুরোধ করছি। নিজেদের নিরাপত্তার জন্য হ্রদ থেকে দূরে থাকুন।’
২৫ জুন লেখা চিঠিতে স্বাক্ষর রয়েছে ‘অ্যান্থনি গোচাগেইন’ নামের কোনো ব্যক্তির। এখান থেকেই পোস্টটি যে ভুয়া তা বোঝা গেলেও অনেক ফেসবুক ব্যবহারী সতর্কবার্তা হিসেবে পোস্টটি শেয়ার করেছেন।
একজন তো লিখেছেন ‘ভুলেও হ্রদে নামবেন না’।
অ্যালাবামা পাওয়ারও নিশ্চিত করেছে যে, এমন কোনো চিঠি তারা দেয়নি।
আর লুইস স্মিথ লেকে মাংসখেকো ব্যাকটেরিয়া বেড়ে যাওয়ার বিষয়ে কোনো নির্ভরযোগ্য মাধ্যম থেকে নিশ্চিত করা হয়নি।
এক ফেসবুক ব্যবহারকারী জানিয়েছেন, নিছক মজার উদ্দেশে পোস্টটি শেয়ার করেছিলেন তিনি।
আরেক ব্যবহারকারী জানান, শুরুতে গুরুত্বের সঙ্গে পোস্টটি শেয়ার করলেও পরে এতে ভুয়া স্বাক্ষরের বিষয়টি বুঝতে পারেন তিনি।
ই-মেইলে অ্যালাবামা পাওয়ারের মুখপাত্র ড্যানিয়েলে কিমব্রোগ বলেন, ‘ফেসবুকে যেটি ছড়িয়েছে, সেটি প্র্যাঙ্ক পোস্ট। এই গ্রীষ্মে স্মিথ লেকে নামতে নিষেধ করার বিষয়টি মজা ছাড়া কিছুই নয়।
স্মিথ লেকসহ আমাদের প্রতিষ্ঠানের তত্ত্বাবধায়নের আওতায় থাকা সব হ্রদ স্বাভাবিক সময়ের মতোই দর্শনার্থীদের জন্য উন্মুক্ত করে দেব। সাধারণ নিরাপত্তা নীতিমালা মেনে দর্শনার্থীদের সেখানে যেতে উৎসাহিত করছি আমরা।’
সামাজিক মাধ্যমে ভুয়া চিঠির বিষয়টি উল্লেখ করে ২৯ জুন স্থানীয় বাসিন্দাদের জন্য একটি বিবৃতিতেও একই কথা বলে প্রতিষ্ঠানটি।
ভাইরাল পোস্টগুলোতে উল্লেখিত নেক্রোটাইজিং ফ্যাসিটিস হলো প্রাণঘাতী একটি রোগ যার কারণ মাংসখেকো ব্যাকটেরিয়া।
যুক্তরাষ্ট্রের রোগ নিয়ন্ত্রণ ও প্রতিরোধ কেন্দ্রের (সিডিসি) তথ্য অনুযায়ী, ত্বকে কাটাছেঁড়া, পুড়ে যাওয়া, পোকার কামড়সহ বিভিন্ন ধরনের ক্ষত থেকে মানবদেহে প্রবেশ করে এই ব্যাকটেরিয়া।
এটি ছড়ানোর বিষয়ে কোনো সতর্কতা জারি করেনি অ্যালাবামার জনস্বাস্থ্য অধিদপ্তর।