বাংলাদেশ

মতামত

খেলা

বিনোদন

জীবনযাপন

তারুণ্য

কিড জোন

অন্যান্য

রেস-জেন্ডার

ফ্যাক্ট চেক

স্বাস্থ্য

আন্তর্জাতিক

শিক্ষা

অর্থ-বাণিজ্য

বিজ্ঞান-প্রযুক্তি

ব্লুটুথ চিপ নেই অ্যাস্ট্রাজেনেকার টিকায়

  •    
  • ২ জুন, ২০২১ ১৫:৫৬

যুক্তরাজ্যের সরকার ও অক্সফোর্ড ইউনিভার্সিটির ওয়েবসাইটের তথ্যে টিকাটির উপাদানের তালিকা রয়েছে। সে তালিকায় মাইক্রোচিপসহ টিকাগ্রহীতার দেহে ব্লুটুথ কানেক্টিভিটি তৈরিতে সক্ষম কোনো উপাদানের নাম নেই।

করোনাভাইরাস প্রতিরোধী টিকা নেয়ার পর দেহে ব্লুটুথ সক্ষমতা তৈরি হয়েছে বলে সম্প্রতি দাবি করেছেন এক ব্যক্তি।

অনলাইনে ভাইরাল ভিডিওতে ওই ব্যক্তি জানান, অক্সফোর্ড ইউনিভার্সিটি ও অ্যাস্ট্রাজেনেকা ফার্মাসিউটক্যালসের গবেষণালব্ধ টিকাটি নিয়েছেন তিনি। এরপর থেকে যেখানেই যাচ্ছেন, সব ধরনের ডিভাইস তার দেহের সঙ্গে সংযোগ তৈরির চেষ্টা করছে।

তিনি বলেন, ‘আমি গাড়িতে উঠলে গাড়ি আমার সঙ্গে সংযুক্ত হতে চাইছে। বাড়িতে গেলে আমার কম্পিউটারও একই কাজ করছে। ফোন তো আছেই। সবকিছুই এমনভাবে সংযোগ চাইছে যেন আমার শরীরের সঙ্গে ব্লুটুথ লাগানো।’

বার্তা সংস্থা রয়টার্সের প্রতিবেদনে জানানো হয়, ফেসবুক, ইনস্টাগ্রামসহ বিভিন্ন সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ওই ব্যক্তির এ ভিডিও ভাইরাল হয়েছে। কিন্তু যে দাবি তিনি করেছেন, তা মোটেই সত্য নয়। টিকায় কোনো ব্লুটুথ চিপ নেই।

কী আছে ভিডিওতে

ভিডিওতে ওই ব্যক্তি তার ফোনে আসা একটি নোটিফিকেশন দেখিয়েছেন। সেখানে বলা হয়, ‘AstraZeneca_ChAdOx1-S’ নামের একটি ডিভাইস তার ফোনের সঙ্গে সংযোগ স্থাপনে পেয়ারিং রিকোয়েস্ট পাঠিয়েছে।

ভিডিওর সঙ্গে যুক্ত আরেকটি ক্লিপে দেখা যায়, ইন্টারনেট যুক্ত একটি টেলিভিশনের সামনে দিয়ে ওই ব্যক্তি হেঁটে যাচ্ছিলেন। ওই সময় সে টেলিভিশন থেকেও তার কাছে একই অনুরোধ এসেছে।

কেন এ দাবি সত্য নয়

প্রথমত, করোনাভাইরাস প্রতিরোধে অ্যাস্ট্রাজেনেকার টিকায় ব্লুটুথ চিপ থাকার কোনো প্রমাণ দেখানো হয়নি ওই ভিডিওতে।

এমনকি ওই ব্যক্তির দেহের সঙ্গে কোনো ডিভাইস যে সংযুক্ত হওয়ার চেষ্টা করছে, তার প্রমাণও নেই। অর্থাৎ টিকাগ্রহীতা তার দেহে ব্লুটুথ সক্ষমতা তৈরির প্রমাণ উপস্থাপন করেননি।

দ্বিতীয়ত, ব্লুটুথ ডিভাইসের নাম পরিবর্তন করা যায়। অ্যাপল, স্যামসাংসহ প্রায় সব প্রযুক্তি প্রতিষ্ঠানের মুঠোফোন ও স্মার্টফোনে এই অপশন আছে। তাই ওই ব্যক্তির কাছাকাছি থাকা কোনো ডিভাইসের নাম ‘AstraZeneca_ChAdOx1-S’ দেখালে সেখান থেকে কিছুই প্রমাণ হয় না।

কারণ ব্লুটুথের সুবিধাযুক্ত ফোন, টিভি বা ক্যামেরাসহ যেকোনো ডিভাইসের নাম বদলে ‘AstraZeneca_ChAdOx1-S’ করে দিয়ে সহজেই ভুয়া ভিডিওটি করা সম্ভব।

তৃতীয়ত, টিকার উপাদানে কোনো মাইক্রোচিপ নেই।

ইউএসএ টুডের ফ্যাক্ট চেক প্রতিবেদনে জানানো হয়, যুক্তরাষ্ট্রে এখনও অক্সফোর্ড-অ্যাস্ট্রাজেনেকার টিকা অনুমোদন না পেলেও অনেক দেশেই পেয়েছে।

যুক্তরাজ্যের সরকার ও অক্সফোর্ড ইউনিভার্সিটির ওয়েবসাইটের তথ্যে টিকাটির উপাদানের তালিকা রয়েছে। সে তালিকায় মাইক্রোচিপসহ টিকাগ্রহীতার দেহে ব্লুটুথ কানেক্টিভিটি তৈরিতে সক্ষম কোনো উপাদানের নাম নেই।

করোনাভাইরাস প্রতিরোধে উদ্ভাবিত অন্যান্য টিকার (যেমন: মডার্না, ফাইজার-বায়োএনটেক ও জনসন অ্যান্ড জনসন) উপাদানের তালিকা দেখেছে ইউএসএ টুডে। কোনো টিকাতেই মাইক্রোচিপ বা ব্লুটুথ কানেকশন শনাক্তের মতো কোনো উপাদানের নাম নেই।

টিকার উপাদানের তালিকায় আছে এল-হিস্টিডাইন, এল-হিস্টিডাইন হাইড্রোক্লোরাইড মনোহাইড্রেট, ম্যাগনেসিয়াম ক্লোরাইড হেক্সাহাইড্রেট, পলিসোরবেট ৮০, ইথানল, সুক্রোজ, সোডিয়াম ক্লোরাইড, ডিসোডিয়াম ইডিটেইট ডিহাইড্রেট, পানি ইত্যাদি।

অনলাইনে ভাইরাল ভিডিওটির উৎস খুঁজতে গিয়ে টিকটকে @al_janabi নামের এক ব্যবহারকারীর সন্ধান পায় রয়টার্স। ওই ব্যবহারকারীকে এ বিষয়ে বার্তা দেয়া হলেও কোনো প্রতিক্রিয়া জানাননি তিনি।

ব্লুটুথ এমন এক ধরনের তারবিহীন প্রযুক্তি যার মাধ্যমে বেতার তরঙ্গ ব্যবহার করে স্বল্প দূরত্বের মধ্যে তথ্য আদান-প্রদান সম্ভব।

টিকার সঙ্গে ব্লুটুথ সংযুক্তির বিষয়টি নিয়ে অ্যাস্ট্রাজেনেকার পক্ষ থেকে কিছু জানানো হয়নি।

এ বিভাগের আরো খবর