সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে ভাইরাল একটি সংবাদ প্রতিবেদনে দেখা গেছে, প্রতিবেশী উত্তর কোরিয়ার জন্য যুক্তরাষ্ট্রের কাছে করোনাভাইরাস প্রতিরোধী টিকা চেয়েছেন দক্ষিণ কোরিয়ার প্রেসিডেন্ট মুন জায়ে-ইন।
সংবাদের সত্যতা খতিয়ে দেখে পুরো বিষয়টি নাকচ করে দিয়েছে বার্তা সংস্থা এএফপির ফ্যাক্ট চেক বিভাগ।
এ বিষয়ে প্রকাশিত প্রতিবেদনে বলা হয়, চলতি মাসে হোয়াইট হাউজে যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনের সঙ্গে দক্ষিণ কোরিয়ার প্রেসিডেন্ট মুন জায়ে-ইনের বৈঠক নিয়ে স্ক্রিনশটে দেখানো খবরটি কোরীয় ভাষায় ভুলভাল অনুবাদ করা হয়েছে।
আসল সংবাদ প্রতিবেদনে বলা হয়, দক্ষিণ কোরিয়ায় করোনাভাইরাসের বিস্তার রোধে যুক্তরাষ্ট্রের সহযোগিতা চেয়েছেন মুন জায়ে-ইন। উত্তর কোরিয়ার মহামারি পরিস্থিতি নিয়ে কোনো কথা বলেননি তিনি।
ফেসবুকে স্ক্রিনশটটি প্রকাশ করা হয় গত ১৮ মে। এতে দেখা যায়, সংবাদ প্রতিবেদনটি বার্তা সংস্থা রয়টার্সের।
সেখানে খবরের শিরোনামে লেখা হয়, ‘বাইডেনকে উত্তর কোরিয়ার সঙ্গে জরুরি টিকা চুক্তির জন্য প্রেসিডেন্ট মুনের তাগিদ।’
স্ক্রিনশটের ক্যাপশনে লেখা হয়, ‘এমন পরিস্থিতিতেও নির্বোধ মুন যুক্তরাষ্ট্রের কাছে টিকা চাইছে উত্তর কোরিয়ার জন্য।’
একই ছবি ফেসবুকে আরও কয়েকটি অ্যাকাউন্ট ও পেজ থেকে প্রচার করা হয়েছে।
১৮ মে বাইডেন-মুন বৈঠকের পরের দিন রয়টার্সে প্রকাশিত আসল সংবাদ প্রতিবেদনটিও যুক্ত করে দিয়েছে এএফপি।
১৯ মে প্রকাশিত রয়টার্সের আসল প্রতিবেদনটির শিরোনাম ছিল, ‘উত্তর কোরিয়া, টিকা চুক্তি ইস্যুতে বাইডেনকে তাগাদা দিলেন দক্ষিণ কোরিয়ার মুন।’
অর্থাৎ উত্তর কোরিয়ার সঙ্গে কূটনৈতিক দ্বন্দ্ব এবং নিজ দেশের করোনাভাইরাস পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রাখতে টিকা কার্যক্রম জোরদারের আলাদা দুটি ইস্যু স্থান পেয়েছে রয়টার্সের শিরোনামে।
রয়টার্সের প্রতিবেদনে এটা বলা হয়নি যে উত্তর কোরিয়ায় টিকা কর্মসূচি জোরদারে একবারও যুক্তরাষ্ট্রের সহযোগিতা চেয়েছেন মুন।
বার্তা সংস্থায় প্রকাশিত শিরোনামটি কোরিয়ান ভাষায় ভুল অনুবাদ করে আলাদা দুটি বিষয়কে গুলিয়ে ফেলা হয়েছে।
সংবাদ প্রতিবেদনের একটি অংশে বলা হয়, ‘জো বাইডেনের সঙ্গে প্রথম বৈঠকে উত্তর কোরিয়া ও যুক্তরাষ্ট্রের থমকে থাকা কূটনৈতিক আলোচনা পুনরায় শুরু করার অনুরোধ জানিয়েছেন মুন। কোরীয় উপদ্বীপে শান্তি ফেরানোর বিষয়টিকে আরও গুরুত্বের সঙ্গে নেয়ার জন্য যুক্তরাষ্ট্রের প্রতি আহ্বানও জানান তিনি।’
একই প্রতিবেদনের আরেক অংশে বলা হয়, ‘দক্ষিণ কোরিয়ায় টিকা কর্মসূচি ধীর হয়ে আসায় জনপ্রিয়তা কমছে মুনের। এ অবস্থায় দেশটির টিকা উৎপাদন সক্ষমতা বৃদ্ধিতে বাইডেনের কাছে সহযোগিতা চান মুন।’
এখন পর্যন্ত উত্তর কোরিয়ার করোনা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে যুক্তরাষ্ট্রের কাছে দক্ষিণ কোরীয় রাষ্ট্রপ্রধানের সহযোগিতা চাওয়ার বিষয়ে কোনো নির্ভরযোগ্য সংবাদ প্রতিবেদন প্রকাশ হয়নি।
পরমাণু অস্ত্র কর্মসূচি নিয়ে দক্ষিণ কোরিয়াসহ প্রায় সব প্রতিবেশী রাষ্ট্র, যুক্তরাষ্ট্র ও পশ্চিমা দেশগুলোর সঙ্গে দীর্ঘদিন ধরে দ্বন্দ্ব চলছে উত্তর কোরিয়ার।