গোল্ডফিশ চেনেন না, এমন মানুষ মেলা ভার। জ্বলজ্বলে সোনালি, কমলা রঙের মিশেলের অদ্ভুত সুন্দর, ছোট্ট মাছটিকে অনেকেই আদরযত্নে নিজেদের সঙ্গেই রাখেন।
আরেকটি কারণেও গোল্ডফিশের পরিচিতি ভুলে যাওয়ার নয়। সেটি হলো, এর ভুলে যাওয়ার স্বভাব। প্রচলিত একট ধারণা হলো, প্রতি তিন সেকেন্ডে আগের সবকিছু ভুলে যায় গোল্ডফিশ।
আসলেই কি তাই?
লাইভ সায়েন্সের প্রতিবেদনে বলা হচ্ছে, উত্তরটি নিঃসন্দেহে ‘না’।
গোল্ডফিশের স্মৃতি নিয়ে যে ধারণাটি প্রচলিত, তা পুরোপুরিই মানুষের বানানো। এর কোনো বৈজ্ঞানিক ভিত্তি নেই। তা-ও কয়েক দশক ধরে এতেই বিশ্বাস করে আসছে সারা বিশ্ব।
অস্ট্রেলিয়ার ম্যাককোয়ারি ইউনিভার্সিটির মৎস্য বিশেষজ্ঞ কিউলাম ব্রাউন বলেন, ‘গোল্ডফিশের স্মৃতি নিয়ে সারা পৃথিবীতেই একধরনের ভ্রান্ত ধারণা প্রচলিত। পার্থক্য এটুকুই, কোথাও বলা হয় গোল্ডফিশ দুই সেকেন্ডেই সব ভুলে যায়, কোথাও বলা হয় ১০ সেকেন্ডে। কিন্তু আসলে গোল্ডফিশের স্মৃতি অনেক দীর্ঘ।’
বিজ্ঞান বলে, গোল্ডফিশের স্মৃতি কয়েক সপ্তাহ, মাস কিংবা বছরব্যাপী দীর্ঘ হতে পারে। এমনকি ৬০ বছর পর্যন্ত গোল্ডফিশের স্মৃতি হতে পারে বলেও রয়েছে ধারণা।
ব্রাউন বলেন, ‘গোল্ডফিশের স্মৃতি নিয়ে যে যাই ভাবুক, আসলে তারা যথেষ্ট বুদ্ধি রাখে।’
গোল্ডফিশসহ নানান জাতের মাছের বুদ্ধিমত্তা ব্রাউনের গবেষণার বিষয়। ২৫ বছর ধরে জটিল এ বিষয় নিয়ে গবেষণা করছেন তিনি।
স্বাদুপানির মাছ গোল্ডফিশ স্বাভাবিক পরিবেশে বাঁচে দীর্ঘদিন। সেখান থেকে যখন মানুষের বাসাবাড়ির শোভা বৃদ্ধির জন্য ছোট্ট অ্যাকুয়ারিয়ামে ঠাঁই হয় এ মাছের, তখন এর আয়ুও কমে যায়।
ব্রাউনের ধারণা, গোল্ডফিশ কিনে ঘরে ছোট্ট বাক্সে সাজিয়ে রাখার যে প্রবণতা আছে মানুষের, সেখান থেকে সৃষ্ট অপরাধবোধ থেকে মাছটির স্মৃতি সংক্রান্ত ভুল ধারণা ছড়িয়েছে।