ইন্দোনেশিয়ার বালি উপকূলে মহড়ার সময় ৫৩ ক্রু নিয়ে নিখোঁজ হয় দেশটির নৌবাহিনীর একটি সাবমেরিন। ২১ এপ্রিল নিখোঁজের দুই দিন পর সাবমেরিনটির অবস্থান শনাক্ত করা যায়।
ধারণা করা হয়, ওই সাবমেরিনের ৫৩ আরোহীর কেউই আর বেঁচে নেই। অক্সিজেন ফুরিয়ে যাওয়ায় তাদের মৃত্যু হতে পারে। সাবমেরিনটির ধ্বংসাবশেষ উদ্ধার এখনও সম্ভব হয়নি।
তবে ২৪ এপ্রিল পোস্ট করা ইউটিউবের এক ভিডিওতে দাবি করা হয়, ডুবন্ত সাবমেরিনটির উদ্ধারকাজ শেষ করেছে ইন্দোনেশিয়া। এরই মধ্যে ভিডিওটি সাত লাখের বেশি মানুষ দেখেছে।
ইউটিউবে পোস্ট হওয়া ওই ভিডিওর দাবি নিয়ে ফ্যাক্ট চেক করে এএফপি। তাতে দেখা যায়, ওই দাবি পুরোপুরি অসত্য।
১০ মিনিটের ভিডিওটির শিরোনামে লেখা ছিল, ‘সর্বশেষ খবর-ইন্দোনেশিয়া সেনাবাহিনীর কঠোর পরিশ্রম সার্থক হয়েছে। অবশেষে কেআরআই ৪০২ সাবমেরিনটি সফলভাবে উদ্ধার করা গেছে।’
নিখোঁজের চার দিন পর ২৫ এপ্রিল ইন্দোনেশিয়া সেনাবাহিনীর পক্ষ থেকে বলা হয়, সমুদ্রপৃষ্ঠ থেকে ৮০০ মিটারের বেশি নিচে কেআরআই নানগালা-৪০২ সাবমেরিনটি পাওয়া গেছে। সাবমেরিনটি ভেঙে তিন টুকরো হয়। এতে থাকা ৫৩ ক্রুর সবার মৃত্যু হয়েছে।
বিভ্রান্তি ছড়ানো ভিডিওতে ওই সাবমেরিন নিয়ে ইন্দোনেশিয়ার বিভিন্ন টেলিভিশন চ্যানেলের সংবাদের ক্লিপও যুক্ত করা হয়। তবে ওইসব ক্লিপের কোথাও সাবমেরিনের উদ্ধারকাজের কোনো দৃশ্য ছিল না।
সাবমেরিন উদ্ধারের বিষয়ে ইন্দোনেশিয়ার পক্ষ থেকে সতর্ক করে বলা হয়, গভীর সাগরে যেকোনো ধরনের উদ্ধারকাজ ঝুঁকিপূর্ণ ও দুরূহ হতে পারে।
২৭ এপ্রিল ইন্দোনেশিয়ার নৌবাহিনীর রিয়ার অ্যাডমিরাল মুহাম্মদ আলি এক সংবাদ সম্মেলনে বলেন, ‘কীভাবে সাবমেরিনের ধ্বংসাবশেষ তোলা যায়, তা নিয়ে আমরা এখনও আলোচনা করছি। কারণ এটি সাগরের অনেক গভীরে রয়েছে।’
ইন্দোনেশিয়ার সুরাবায়া শহরের সেপুলুহ নপেমবার ইনস্টিটিউট অফ টেকনোলজির সাবমেরিন বিশেষজ্ঞ উইসনু ওয়ারধানা এএফপিকে বলেন, ‘সাগরের এত গভীর থেকে ধ্বংসাবশেষ উদ্ধার করা খুবই কঠিন। এ জন্য প্রায় দুই মাস সময় লেগে যেতে পারে।
‘উদ্ধারের সময় উচ্চ হাইড্রোস্ট্যাটিক চাপে পড়বেন উদ্ধারকর্মীরা। পেশাদার ডুবুরিরা সর্বোচ্চ ৫০ মিটার গভীরে ডুব দিতে পারেন।’
তিনি বলেন, ‘ওই চাপের কারণেই আমরা জানি, নানগালা তিন টুকরা হয়ে গেছে। কারণ এটির কাঠামোই ভেঙে পড়েছে। উচ্চ চাপে এটি সংকুচিত হয়ে যায়।’