যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডনাল্ড ট্রাম্প এখন ইতিহাস। ২০ জানুয়ারি শপথ নেয়ার পর বিশ্বের ক্ষমতাধর রাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট হিসেবে যাত্রা শুরু করেছেন জো বাইডেন।
নির্বাচনে হারার পর থেকেই কারচুপিসহ নানা অভিযোগ করে আসছেন ট্রাম্প। ৬ জানুয়ারি দেশটির পার্লামেন্ট ভবন ক্যাপিটল হিলে নজিরবিহীন হামলাও চালায় ট্রাম্প সমর্থকরা। প্রচারের সময় ট্রাম্পের নানা কথাবার্তা ও আচরণ ছিল বিতর্কিত।
ট্রাম্পের প্রচারে নানদের অংশগ্রহণ নিয়ে নতুন বিতর্ক উসকে দিয়েছে দেশটির ক্যাথলিক চার্চ। বুধবার চার্চ কর্তৃপক্ষ জানায়, ৩০ অক্টোবর মিশিগানে ট্রাম্পের প্রচারে অংশ নেয়া নানদের তারা চেনে না।
এত দিন পর কেন তারা এ তথ্য জানাল, তা অবশ্য স্পষ্ট নয়।
২০২০ সালের ৩০ অক্টোবর মিশিগানের অকল্যান্ড কান্ট্রি ইন্টারন্যাশনাল এয়ারপোর্টে ট্রাম্পের সমাবেশে পরিপূর্ণ নানের পোশাকে হার্টল্যান্ডের নানদের সংগঠন ‘ডোমিনিকান সিস্টার্স অফ দ্য ইম্যাকুলেট হার্ট অফ মেরি’ এর সদস্য হিসেবে নারীরা অংশ নেন।
নির্বাচনের কয়েক সপ্তাহ আগে করোনাভাইরাস থেকে মুক্ত হওয়া নিয়ে ট্রাম্প ওই নারীদের উদ্দেশে বলেন, ‘সিস্টার, পরদিন সকালে আমি জেগে উঠেছি এবং অনুভূতিটা ছিল, ঈশ্বর আমার কাঁধ ছুঁয়েছেন।’
ট্রাম্পের কথার পর জনতা উচ্চ স্বরে একে স্বাগত জানান এবং ওই নারীদের উচ্ছ্বসিত মুখের ছবি খুব দ্রুত ছড়িয়ে পড়ে।
তবে এত দিন পর চার্চ কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, ‘ওই নারীদের আমরা চিনি না।’
স্বাধীন সংবাদমাধ্যম ন্যাশনাল ক্যাথলিক রিপোর্টার জানিয়েছে, ওই নারীরা ডোমিনিকান সিস্টার এবং তারা ক্যাথলিক চার্চের সঙ্গে মোটেই যুক্ত নন। অন্য কথায়, তারা প্রাতিষ্ঠানিকভাবে নান নন।
মিশিগানের ল্যানসিংয়ের বিশপের একজন মুখপাত্র বলেন, ‘ডোমিনিকান সিস্টার্সদের সঙ্গে বর্তমানে ক্যাথলিক চার্চের যোগাযোগ নেই। সেই অর্থে, চার্চের সঙ্গে তাদের কোনো আধ্যাত্মিক সম্পর্ক নেই।’
যুক্তরাষ্ট্রের ক্যাথলিক নারীদের দুটি সংস্থাও জানিয়েছে, ডোমিনিকান সিস্টার্স তাদের সঙ্গে যুক্ত নয়। ক্যাথলিক প্রতিষ্ঠানের অনুমোদিত সংগঠনগুলোর মধ্যেও তাদের নাম পাওয়া যায়নি।
ডোমিনিকান সিস্টার্স অফ দ্য ইম্যাকুলেট হার্ট অফ মেরির একটি ওয়েবসাইট রয়েছে। যেখানে তারা নিজেদের মিশিগানের হার্টল্যান্ডভিত্তিক সংস্থা হিসেবে পরিচয় দিয়েছে। তাদের ভাষ্যে, তারা ‘যুক্তরাষ্ট্রের ডোমিনিকানদের ঐতিহ্যবাহী জীবন পুনরুদ্ধার ও সংরক্ষণ করতে চায়’।
ওয়েবসাইটটিতে খুব বেশি তথ্য নেই। তবে এতে কিছু ছবি ও অনুদান দেয়ার পেজ আছে।
জাতীয় ক্যাথলিক রিপোর্টার জানায়, তাদের কয়েকটি ছবিতে পোপের বৈধতা স্বীকার করে না এমন সংগঠনের ব্যবহৃত পতাকা দেখা গিয়েছে।
ট্রাম্পের প্রচারে নানরা আগে অংশ নিলেও ওই নারীদের বিষয়ে এত দিন পর চার্চের বক্তব্য দেয়ার কারণ ঠিক স্পষ্ট নয়।
দেশটির ধর্মীয় প্রতিষ্ঠানগুলোর রিসোর্স সেন্টারের প্রধান শ্যারন এরাট জানান, ‘চার্চের স্বীকৃতি ছাড়াই যদি মানুষ নিজেদের ধর্মীয় ব্যক্তি হিসেবে উপস্থাপন করেন এবং অন্যরা তাদের সেভাবে বিশ্বাস করেন, তবে তা ভুল উপস্থাপনা হবে। পাশাপাশি এটি কলঙ্কের কারণ হতে পারে।’