সীমান্তে সম্প্রতি একাধিক বার সংঘর্ষে জড়িয়েছেন চীন ও ভারতের সেনারা। ভারতের দাবি, তাদের সীমান্তে বেশ কয়েক বার অনুপ্রবেশ ও অবস্থান নিয়েছে চীন।
এমন বাস্তবতায় তামিলনাড়ুতে একটি জনসভায় দেশটির অন্যতম বিরোধী দল কংগ্রেসের নেতা রাহুল গান্ধীর একটি ভিডিও নিয়ে শুরু হয়েছে তুমুল আলোচনা-সমালোচনা।
২৬ সেকেন্ডের ভিডিওটিতে রাহুলকে বলতে শোনা যায়, ‘আপনি চীনের কাছ থেকে ভারতকে রক্ষায় সেনাবাহিনী, নৌবাহিনী ও বিমানবাহিনীকে ব্যবহার করছেন। আপনি যদি ভারতের শ্রমিক, কৃষক ও মজুরদের ব্যবহার করেন, তবে আপনার সেনা, নৌ ও বিমানবাহিনীর প্রয়োজন হবে না। চীন ভেতরে আসার সাহস পাবে না।’
অনেকে ভিডিওটি শেয়ার দিয়ে লেখেন, ‘যেহেতু রাহুল গান্ধী ভাবেন কৃষক ও মজুররা ভারতের সেনাবাহিনীর বিকল্প হতে পারে, তাই আমাদের অনুরোধ #নরেন্দ্র মোদি জি #আমিতশাহ জি দয়া করে #রাহুল গান্ধীকে দেয়া ভিআইপি নিরাপত্তা দলের বদলে ভারতীয় কৃষক ও শ্রমিকদের পাঠান।’
ফ্যাক্ট চেক
ভারতের সংবাদমাধ্যম ইন্ডিয়া টুডে রাহুলের বক্তব্য নিয়ে অনুসন্ধানের পর জানিয়েছে, ভাইরাল ভিডিওটি ক্ষমতাসীন বিজেপি সরকারের অর্থনৈতিক নীতি নিয়ে গান্ধীর দীর্ঘ একটি বক্তৃতা থেকে নেয়া হয়েছে।
ওই বক্তব্যে তিনি কেন্দ্রীয় সরকারের বিরুদ্ধে দেশের কৃষক-শ্রমিকদের পরিবর্তে গুটিকয়েক শিল্পপতিকে সহায়তা করার অভিযোগ তোলেন। গান্ধী বলেন, ভারতের দুর্বল অর্থনীতির কারণেই চীন সীমান্ত অতিক্রম করার সাহস পাচ্ছে।
কী-ওয়ার্ড অনুসন্ধানের মাধ্যমে রাহুল গান্ধীর অফিশিয়াল ইউটিউব চ্যানেলে পূর্ণ ভিডিওটি পেয়েছে ইন্ডিয়া টুডে।
ঘণ্টাব্যাপী ভিডিওটির বক্তব্য শুনলে স্পষ্টভাবে বোঝা যায়, রাহুল ভারতের অর্থনীতি নিয়ে কথা বলছিলেন। তিনি শ্রমিক বা কৃষকদের দিয়ে ভারতের সেনাবাহিনীকে প্রতিস্থাপন করতে বলেননি।
রাহুল বলেন, ‘ভারতের অর্থনীতির নতজানু অবস্থা চীনের কাছে স্পষ্ট। চীন দেখতে পাচ্ছে, ভারত সরকারের প্রতিটি পদক্ষেপের উদ্দেশ্য পাঁচ বা ছয় জন ব্যবসায়ীকে শক্তিশালী করা এবং ভারতের প্রকৃত শক্তি শ্রমিক, কৃষক ও মজুরদের দুর্বল করা।
‘আমি আপনাকে নিশ্চয়তা দিতে পারি, যদি ভারতের শ্রমিক, কৃষক ও তাঁতিদের শক্তি, সুরক্ষা ও সুযোগ দেয়া হতো, তবে চীন কখনোই ভারতের অভ্যন্তরে ঢোকার সাহস করত না।’
ভিডিওটির ১৭ মিনিট ১২ সেকেন্ডের সময় রাহুল বলেন, ‘আপনি ভারতকে চীনের কাছ থেকে রক্ষায় সেনাবাহিনী, নৌবাহিনী ও বিমানবাহিনী ব্যবহার করছেন। আপনি যদি ভারতের শ্রমিক, কৃষক ও মজুরদের ব্যবহার করেন, তবে আপনার সেনা, নৌ ও বিমানবাহিনীকে সেখানে দাঁড়িয়ে থাকতে হবে না।’