বিজয় দিবসে রংপুর বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ে বিতর্ক ছড়ানো জাতীয় পতাকার উৎস কেউ বলতে পারছেন না।
ওই পতাকাটি হাতে বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষকদের ছবি ভাইরাল হয়েছে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে।
ছবি তোলার আগে যে শিক্ষকের ঘাড়ে অবমাননাকর জাতীয় পতাকাটি ছিল তিনি দাবি করছেন, ভিড়ের মধ্যে কোনো একজন তাকে সেটি ধরিয়ে দেন। সেখানে যে বৃত্তাকার লালের পরিবর্তে চতুষ্কোণ ছিল বুঝতে পারেননি।
‘অনাকাঙ্ক্ষিত ভুলের’ জন্য দুঃখও প্রকাশ করেছেন বিশ্ববিদ্যালয়ের ইতিহাস ও প্রত্নতত্ত্ব বিভাগের প্রভাষক সোহাগ আলী।
বিজয় দিবসে ওই বিতর্কিত ছবি তোলার পর বিশ্ববিদ্যালয়ের সিন্ডিকেট কক্ষে একটি ভার্চুয়াল আলোচনা সভা হয়। সেখানে সোহাগ আলীও অংশ নেন।
একটি ভিডিওতে দেখা গেছে, আলোচনা চলার এক পর্যায়ে চেয়ার থেকে উঠে যান সোহাগ আলী। তখনও তার ঘাড়ে সেই পতাকাটি ছিল। স্বাধীনতা স্মারকে ফুল দেয়ার সময়ও তার ঘাড়ে ঝুলছিল পতাকাটি।
ওই পতাকাটি কোথা থেকে পেয়েছেন - জানতে চাইলে সোহাগ আলী টেলিফোনে নিউজবাংলাকে বলেন, ‘পতাকাটি আমার ঘাড়ে ছিল ঠিকই। তবে সকাল ১০টার দিকে ফুল দেয়ার সময় তাড়াহুড়ার মধ্যে কে আমার হাতে এই লাল সবুজের কাপড় দিয়েছে মনে নেই। পতাকা মনে করেই আমি সেটা ঘাড়ে নিয়েছি, পরে ছবিও তুলেছি। তবে আমাদের এ বিষয়ে আরও সচেতন হতে হতো।’
এভাবে দায় এড়ানো যায় কিনা- এমন প্রশ্নে তিনি বলেন, ‘আমি বিশ্ববিদ্যালয়ের এক জন শিক্ষক এবং আমি মুক্তিযুদ্ধের চেতনাকে লালন করি। আমি বঙ্গবন্ধুকে ভালোবাসি।
‘তাকে নিয়ে অনেক কাজ আমি করছি। সেই জায়গা থেকে এমন একটা ভুল হওয়া অনাকাঙ্ক্ষিত। এমন অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনার জন্য আমি এবং আমরা দুঃখ প্রকাশ করছি। এর বাইরে আসলে কিছু বলার নেই।‘
এক প্রশ্নের জবাবে বিজয় দিবস উদযাপন কমিটির সদস্য সোহাগ আলী বলেন, ‘এ ধরনের কাজ (পতাকা বিকৃতি) আমাদের শিক্ষকদের পক্ষে সম্ভব না। আমি কেনই বা এটা বানাব? এটা কে এনেছে- তাকে আমরাও খুঁজছি।’
বিশ্ববিদ্যালয়ের রসায়ন বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক এইচএম তারিকুল ইসলাম জানান, ভার্চুয়াল আলোচনার আগে সোহাগ আলীর ঘাড়ে থাকা পতাকাটি নিয়েই স্বাধীনতা স্মারকে ফটোসেশন শেষ করেন তারা।
তিনি জানান, ক্যাম্পাসের সবাই দেখেছে এবং জানে স্মারকে ফুল দেয়ার আগে ও পরে- এমনকি ফটোসেশনের পরও ওই পতাকাটি তার ঘাড়েই ছিল।
আলোচিত ওই ঘটনা তদন্তে রংপুর জেলা প্রশাসন গঠিত তিন সদস্যের কমিটি শুক্রবার রাতে ক্যাম্পাস পরিদর্শন করেছে।
কমিটির প্রধান অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট গোলাম রব্বানী নিউজবাংলাকে বলেন, ‘আমরা প্রক্টরের সঙ্গে কথা বলেছি। ১৬ ডিসেম্বর বিজয় দিবসের কী কী কর্মসূচি ছিল তার কপি সংগ্রহ করেছি। তদন্তের প্রয়োজনে যা যা করণীয় তা করা হবে।’