ইতিহাস বিকৃতি থেকে উদ্ধার করতে পারেন বুদ্ধিজীবীরা। কিন্তু তাদেরকে কিনে ফেলে। বর্তমান বুদ্ধিজীবীদের অনেককেই কিনে নিতে বেশি কষ্ট করতে হয় না। কারণ তারা অল্পে তুষ্ট হয়ে ভিন্ন খাতে কলম চালান।
৫ আগস্টের পরও আমরা যদি ঐক্য সৃষ্টি করতে না পারি, শহীদ বুদ্ধিজীবীদের যে স্বপ্ন তা বাস্তবায়ন করতে না পারি তাহলে বুদ্ধিজীবী দিবস পালন বৃথা।
শনিবার চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ে (চবি) শহীদ বুদ্ধিজীবী দিবসের আলোচনা সভায় উপাচার্য অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইয়াহ্ইয়া আখতার এসব কথা বলেন।
ক্যাম্পাসে বুদ্ধিজীবী চত্বরে পুষ্পস্তবক অর্পণ ও ‘গণতান্ত্রিক বাংলাদেশে শহীদ বুদ্ধিজীবী দিবসের তাৎপর্য’ শীর্ষক এই আলোচনা সভার আয়োজন করে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ।
শনিবার সকালে বিশ্ববিদ্যালয়ের বুদ্ধিজীবী চত্বরে পুষ্পস্তবক অর্পণের মাধ্যমে দিনটি শুরু হয়।
বিশ্ববিদ্যালয়ের সিনেট কক্ষে আলোচনা সভার আয়োজন করা হয়। এতে প্রধান অতিথির বক্তব্যে উপাচার্য অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইয়াহ্ইয়া আখতার বলেন, ‘একটা দেশ তখনই এগিয়ে যায় যখন তার মাঝে ঐক্য থাকে। অত্যন্ত পরিকল্পিতভাবে সেই ঐক্য ধ্বংস করা হচ্ছে। ৭১-এর পরে দেশকে এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার একটা সুযোগ এসেছিল। আমরা স্বাধীনতা লাভ করেছিলাম ঐক্যের সুবাদে। যুদ্ধ-উত্তর বাংলাদেশে রাজনৈতিক নেতৃত্ব ঐক্য ধরে রাখার জন্য যে মেকানিজম প্রয়োজন তা উদ্ভাবন করতে ব্যর্থ হয়েছিল।
‘অর্জিত স্বাধীনতাকে কুক্ষিগত করা এবং দলীয়করণের যে প্রবণতা সেটাই আমাদের সবচেয়ে বড় ক্ষতির কারণ হয়েছিল। এটা কোনো দলের স্বাধীনতা ছিল না, এটা ছিল আপামর সবার স্বাধীনতা। সেজন্যই আমরা আমাদের দেশের নাম দিয়েছিলাম গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ।’
তিনি আরও বলেন, ‘গত ১৫ বছর ধরে আমাদেরকে বিভ্রান্ত করা হয়েছে । এমন একটা ভাব সৃষ্টি করা হয়েছে যেন আমরা উন্নয়নের জন্য দেশ স্বাধীন করেছি। আমরা যদি উন্নয়নের জন্য স্বাধীনতা আন্দোলন করতাম তাহলে দেশ স্বাধীন হতো না। কারণ আইয়ুব খান সে সময় উন্নয়নের দশক চালাচ্ছিল।
‘আমরা স্বাধীনতা যুদ্ধ করেছিলাম গণতন্ত্রের জন্য, রাজনৈতিক অধিকারের জন্য, বঞ্চনার জন্য। এখন আরেকটা সুযোগ এসেছে ৫ আগস্টের মধ্য দিয়ে। ছাত্ররা জুলাই আন্দোলনের মধ্য দিয়ে যে অভূতপূর্ব সুযোগ এনে দিয়েছে তা কাজে লাগানোর একটা শপথ নেয়ার দিন আজ। সেটা পুনরায় ঐক্য সৃষ্টি করে দেশকে এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার শপথ। তাহলেই কেবল শহীদদের যে মনোবাসনা সেটার প্রতি শ্রদ্ধা জ্ঞাপন করা হবে।’
অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ শামীম উদ্দিন খান বলেন, ‘বুদ্ধিজীবীরা ছিলেন জাতির শ্রেষ্ঠ সন্তান। তাদেরকে পরিকল্পিতভাবে একটি আন্তর্জাতিক মহল হত্যা করেছে। একক কোনো গোষ্ঠী এখানে জড়িত ছিল না; বরং আন্তর্জাতিক চক্রের ষড়যন্ত্রের শিকার হয়েছেন তারা।
চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক, শিক্ষার্থী ও অন্যরা এ সময় উপস্থিত ছিলেন।