বাহাত্তরের সংবিধান বাতিল ও রাষ্ট্রপতির অপসারণ দাবির ইস্যুতে জাতীয় ঐক্যের ডাক দিয়েছে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন ও জাতীয় নাগরিক কমিটি।
কেন্দ্রীয় শহীদ মিনার প্রাঙ্গণে বুধবার সন্ধ্যা ৭টায় বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন ও জাতীয় নাগরিক কমিটির যৌথ সংবাদ সম্মেলনে এই জাতীয় ঐক্যের আহ্বান জানিয়েছেন জাতীয় নাগরিক কমিটির আহ্বায়ক নাসীরুদ্দীন পাটওয়ারী।
জাতীয় ঐক্যের ডাক দিয়ে পাটওয়ারী বলেন, ‘আমরা চাই না বাহাত্তরের বাকশালী পচা-গলা সংবিধান বাংলাদেশে বিরাজমান থাকুক। বাংলাদেশে যত সংকট সেসবের মূলে এই ৭২-এর সংবিধান।’
তিনি বলেন, ‘গণঅভ্যুত্থানের যত রাজনৈতিক শক্তি আছে আমরা তাদেরকে জাতীয় ঐক্যের ডাক দিয়েছি। ফ্যাসিস্ট রেজিমের কোনো অংশ বাংলাদেশে আমরা বিরাজমান দেখতে চাই না। এই ফয়সালা রাজনৈতিক দলগুলোকে করতে হবে।’
জাতীয় নাগরিক কমিটির আহ্বায়ক বলেন, ‘রাজনৈতিক দলগুলোকে আহ্বান করবো, চুপ্পুকে অপসারণের দাবিতে আপনারা ঐক্যবদ্ধ হোন। সবাইকে কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে চুপ্পুর অপসারণ ও ৭২-এর সংবিধান বাতিলের দাবিতে ঐক্যবদ্ধ হওয়ার আহ্বান জানাচ্ছি। চুপ্পুর অপসারণ না হলে সাংবিধানিক ও রাজনৈতিক সংকট সৃষ্টি হবে।’
সংবাদ সম্মেলনে হাসনাত আবদুল্লাহ বলেন, ‘প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে আলোচনার পর বিভিন্ন রাজনৈতিক দল সাংবিধানিক দোহাই দিয়ে রাষ্ট্রপতিকে টিকিয়ে রাখতে চাইছে। তাদের কাছে আহ্বান থাকবে, ৭২-এর সংবিধান ও আমাদের অভ্যুত্থান প্রশ্নে আপনাদের অবস্থান স্পষ্ট করতে হবে।
‘যারা গণভ্যুত্থানের পক্ষে এবং এক দফায় একাত্মতা পোষণ করেছে তারা ৭২-এর সংবিধান সমর্থন করতে পারে না। কারণ এই ৭২-এর সংবিধানের মাধ্যমে ফ্যাসিবাদ কায়েম হয়েছে, ফ্যাসিস্ট সংঘবদ্ধ হয়েছে এবং এসবের প্রসার হয়েছে।’
হাসনাত আরও বলেন, ‘আমরা জাতীয় ঐক্যের মাধ্যমে নতুন সংবিধান চাই, যে সংবিধানে গণমানুষের আকাঙ্ক্ষার প্রতিফলন হবে, নতুন ফ্যাসিবাদের পথ রুদ্ধ থাকবে। সংবিধান বাতিল হলে রাষ্ট্রপতির সাংবিধানিক ধারাবাহিকতার প্রয়োজন হবে না।’
‘আমরা গণতন্ত্রকামী প্রতিটি রাজনৈতিক দলের ঐক্য চাই। তবে এতে মুজিববাদী ও জাতীয় পার্টির কোনো সংস্পর্শ থাকবে না’, যোগ করেন তিনি।
হাসনাত আবদুল্লাহ বলেন, ‘বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন ঘোষিত পাঁচ দফাই গণভ্যুত্থানকে বিপ্লবে রূপান্তর করার চূড়ান্ত দফা। এই পাঁচ দফার মধ্য দিয়ে গণঅভ্যুত্থান বিপ্লবে রূপান্তরিত হবে। বাংলাদেশ প্রশ্নে স্থায়ী সমাধানের দিকে যেতে পারব আমরা।’
সংবাদ সম্মেলনে অন্যদের মধ্যে সমন্বয়ক সারজিস আলম, আব্দুল কাদের, রিফাত রশিদ, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের মুখপাত্র উমামা ফাতেমা, সদস্য সচিব আরিফ সোহেল প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।