সরকারি চাকরি কোটা ব্যবস্থার সংস্কার দাবিতে আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের ওপর ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে ১৫ জুলাই হামলার ঘটনায় ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে প্রধান হুকুমের আসামি মামলা হয়েছে।
সোমবার বিকেল ৫টায় বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সমন্বয়ক মাহিন সরকার বাদী হয়ে মামলাটি দায়ের করেন।
রাজধানীর শাহবাগ থানায় দায়ের হওয়া এই মামলায় আওয়ামী লীগ ও ছাত্রলীগের ৩৯১ নেতা-কর্মীকে আসামি করা হয়েছে। এছাড়াও এই মামলায় অজ্ঞাতনামা আসামি করা হয়েছে আটশ’ থেকে এক হাজার জনকে।
মামলায় পর্যায়ক্রমে শেখ হাসিনা ও ওবায়দুল কাদেরকে এক ও দুই নম্বর আসামি করা হয়েছে। মামলার এজাহারে এই দু’জনকে হুকুমের আসামি হিসেবে অভিহিত করা হয়েছে।
এজাহারে বলা হয়েছে, ১৫ জুলাই ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে ছাত্রলীগের নেতাকর্মীসহ বহিরাগত আওয়ামী লীগ, যুবলীগ, স্বেচ্ছাসেবক লীগ, শ্রমিক লীগ, ছাত্রলীগসহ আওয়ামী লীগের বিভিন্ন পর্যায়ের নেতাকর্মীরা বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনে অংশগ্রহণকারী সাধারণ শিক্ষার্থীদের ওপর হামলায় চালায়। তারা ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন স্থানে ইট, কাঁচ, কাঁচের বোতল, কাঠ, পাইপ, লোহার রড, লাঠি, হকিস্টিক, রামদা, আগ্নেয়াস্ত্র ইত্যাদি দেশি ও বিদেশি অস্ত্র দিয়ে দফায় দফায় হামলা চালায়। একইসঙ্গে তারা ককটেল বিস্ফোরণ করে ও হেলমেট পরে শিক্ষার্থীদের ওপর গুলি ছোড়ে।
মামলার এজাহারে আরও বলা হয়, সন্ত্রাসীরা ওইদিন ক্যাম্পাসের বিভিন্ন স্থান যেমন- হল পাড়া, মল চত্বর, ভিসি চত্বর, সলিমুল্লাহ মুসলিম হল, টিএসসি, শহীদ মিনার, শহীদুল্লাহ হল গেট এলাকায় শিক্ষার্থীদের ওপর নৃশংস হামলা চালিয়ে সাধারণ শিক্ষার্থীদের আঘাত এবং মেয়ে শিক্ষার্থীদের শ্লীলতাহানি করে ক্যাম্পাসে ভীতিকর পরিবেশ সৃষ্টি করে।
মামলার বিষয়ে সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলেন ঢাকা মহানগর পুলিশের রমনা বিভাগের উপ-পুলিশ কমিশনার (ডিসি) মাসুদ আলম। তিনি বলেন, ‘আমরা একটি লিখিত অভিযোগ পেয়েছি। এরই পরিপ্রেক্ষিতে আমরা পরবর্তী ব্যবস্থা গ্রহণ করব। এটি প্রক্রিয়াধীন।’
মামলার বাদী মাহিন সরকার বলে, ‘১৫ জুলাই বাংলাদেশের ইতিহাসে একটি কালো দিন। এদিন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে ছাত্রলীগের বহিরাগতরা আমাদের বোনদের ওপর হামলা চালায়। তারা আমাদের বোনদের শ্লীলতাহানি করে। এই হামলার সঙ্গে জড়িতদের দ্রুত বিচারের দাবি জানাচ্ছি আমি। বিপ্লব-পরবর্তী এই স্বাধীন বাংলায় খোলা বাতাসে ছাত্রলীগের নিঃশ্বাস নেয়ার অধিকার নেই। তারা নিঃশ্বাস নেবে জেল-হাজতে।’