সিলেট সিটি করপোরেশনের (সিসিক) মেয়র আনোয়ারুজ্জামান চৌধুরী এবং প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা, দুর্নীতিবাজ সব কর্মকর্তা-কর্মচারী ও কাউন্সিলরকে ২৪ ঘণ্টার মধ্যে পদত্যাগের আল্টিমেটাম দিয়েছে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন।
বুধবার বিকেলে সিলেটে সংবাদ সম্মেলন করে এই সময়সীমা বেঁধে দেন আন্দোলনের নেতারা। এই সময়ের মধ্যে মেয়র পদত্যাগ না করলে বৃহস্পতিবার দুপুরের পর নগর ভবন ঘেরাওয়ের হুঁশিয়ারি দেন তারা।
বুধবার বিকেলে সিলেট নগরের জিন্দাবাজারের একটি রেস্টুরেন্টে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে এই আল্টিমেটাম দেন বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সিলেটের সমন্বয়করা।
বুধবার সিলেট নগরের জিন্দাবাজারে একটি রেস্টুরেন্টে সংবাদ সম্মেলনে আল্টিমেটাম দেন বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন সিলেটের সমন্বয়করা। ছবি: নিউজবাংলা
আন্দোলনের কেন্দ্রীয় সহ-সমন্বয়ক ও সিলেটের প্রধান সমন্বয়ক আসাদুল্লাহ আল গালিব বলেন, ‘আমরা এক মাসেরও বেশি সময় বিপ্লব করে দীর্ঘ ১৫ বছরের স্বৈরাচার সরকারের পতন ঘটিয়েছি। এখন প্রতিটি সেক্টরকে দুর্নীতিমুক্ত করার আন্দোলন চালাচ্ছি। তাই স্বৈরাচারের অধীনে যত প্রহসনমূলক নির্বাচন হয়েছে এবং এসব নির্বাচনে যারা বিজয়ীরূপে বিভিন্ন চেয়ারে বসেছেন তাদের আমরা আর ওই চেয়ারে দেখতে চাই না।’
তিনি বলেন, ‘এরই ধারবাহিকতায় সিলেট সিটি করপোরেশনের মেয়র আনোয়ারুজ্জামান চৌধুরী, প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা, সব দুর্নীতিবাজ কর্মকর্তা-কর্মচারী ও কাউন্সিলরকে ২৪ ঘণ্টা সময় বেঁধে দেয়া হয়েছে।
‘বৃহস্পতিবার দুপুরের মধ্যে তারা পদত্যাগ না করলে আমরা নগর ভবন ঘেরাও করে পদত্যাগ না করা পর্যন্ত সেখানে অবস্থান কর্মসূচি পালন করব।’
সংবাদ সম্মেলনে আরও বক্তব্য দেন বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সিলেটের অন্যতম সমন্বয়ক দেলওয়ার হোসেন শিশির, সিলেটের সহ-সমন্বয়ক শাবি ছাত্র ফয়ছল হোসেন, শাবি সমন্বয়ক হাফিজুর রহমান ও জহিরুল ইসলাম।
সমন্বয়করা বলেন, ‘এতদিন সরকার সাংবাদিকদের গলা চেপে ধরে রেখেছিল তাদের কুকর্ম প্রকাশ না করার জন্য। কিন্তু আমরা এমনটা চাই না। আমরা চাই সাংবাদিকের কলম চলবে দুর্বার গতিতে।’
সাংবাদিকদের উদ্দেশ করে তারা বলেন, ‘আমরা নতুন। তাই বিভিন্ন বিষয়ে আমাদের ভুল-ত্রুটি হতে পারে। আপনারা আমাদের ভুল ধরিয়ে দেবেন এটাই আমরা চাই। এই সরকারের ভাল-মন্দ সব দিক তুলে ধরবেন আপনাদের খবরে এটাই আমাদের চাওয়া।’
এই আন্দোলনে নিহত সাংবাদিক এটিএম তুরাব ও শিক্ষার্থী রুদ্র সেনকে স্মরণ করে সমন্বয়করা বলেন, ‘স্বৈরাচার সরকার পতন হওয়ার পর এখন হিন্দু সম্প্রদায়কে ব্যবহার করে বিশৃঙ্খলা, অরাজকতা ও নাশকতার পাঁয়তারা করছে। আমরা বলে দিতে চাই, এদেশের ছাত্রসমাজ সবাইকে সঙ্গে নিয়ে তাদের সব ষড়যন্ত্র রুখে দিতে প্রস্তুত।
‘আমরা সম্প্রীতির বাংলাদেশ চাই। এদেশে কোনো মেজরিটি-মাইনরিটি নেই। আমরা সবাই বাংলাদেশি। বাংলাদেশে বিশৃঙ্খলা করতে এলে আমরা কাউকে ছাড় দেব না। সবাইকে জানাতে চাই- এটা ১৪ জনের সরকার নয়; এটা ১৮ কোটি মানুষের সরকার। এই সরকার দেশের যে সংস্কার করবে এর সুফল সবাই ভোগ করবে।’
এ ব্যাপারে মেয়র আনোয়ারুজ্জামান চৌধুরীর মন্তব্য জানতে মোবাইল ফোনে যোগাযোগের চেষ্টা করা হলেও তাকে পাওয়া যায়নি।