বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে গুলিতে আহত হওয়া জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের (জবি) হিসাববিজ্ঞান বিভাগের শিক্ষার্থী মো. ইকরামুল হক সাজিদ মারা গেছেন। দীর্ঘ ১০ দিন ঢাকার সম্মিলিত সামরিক হাসপাতালে (সিএমএইচ) আইসিইউতে চিকিৎসাধীন থাকার পর বুধবার বেলা ২টা ১৫ মিনিটে মারা যান তিনি।
সাজিদের সহপাঠী, শিক্ষকবৃন্দ ও পরিবারের সদস্যরা তার মৃত্যুর বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
রাজধানীর মিরপুরে ৪ আগস্ট আন্দোলনরত অবস্থায় গুলিবিদ্ধ হন সাজিদ। এরপর তাকে সম্মিলিত সামরিক হাসপাতালে চিকিৎসা দেয়া হচ্ছিল।
সহপাঠীরা জানান, ৪ আগস্ট মিরপুর এলাকায় কোটা সংস্কার আন্দোলনে অংশ নেয়ার সময় সাজিদ মাথায় গুলিবিদ্ধ হন। পুলিশের ছোড়া একটি গুলি তার মাথার পেছনে লাগে। মাথা ভেদ করে বুলেটটি তার চোখের পেছনে আটকে যায়। গুরুতর আহত অবস্থায় সহপাঠীরা তাকে সিএমএইচে ভর্তি করেন। প্রাথমিক অবস্থায় মাথায় আঘাত লেগে প্রচুর রক্তক্ষরণ হয়। অপারেশনসহ এ পর্যন্ত তাকে আট ব্যাগ রক্ত দেয়া হয়েছে।
সিএমএইচের চিকিৎসকরা জানিয়েছেন, আটদিনের বেশি সময় পার হয়ে গেলেও সাজিদের শারীরিক অবস্থার কোনো উন্নতি লক্ষ্য করা যায়নি। মৃত্যুর আগ পর্যন্ত তিনি লাইফ সাপোর্টে ছিলেন।
জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের সমন্বয়ক মো. সোহান বলেন, ‘কোটা আন্দোলনে আহত হওয়া সাজিদের মৃত্যুতে আমরা পুরো জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় শোকাহত। তার মরদেহ নিতে আমরা সিএমএইচে যাচ্ছি। ক্যাম্পাসে তার নামাজে জানাযা অনুষ্ঠিত হবে।’
এদিকে সাজিদের চিকিৎসার ব্যয় নির্বাহে পাশে দাঁড়িয়েছিলেন বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনসহ সহপাঠীরা। মঙ্গলবার সাজিদের চিকিৎসার জন্য জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতির পক্ষ থেকে প্রায় চার লাখ টাকা অনুদান দেয়া হয়।
সাজিদের মৃত্যুতে গভীর শোক প্রকাশ করেছেন বিশ্ববিদ্যালয়ের কোষাধ্যক্ষ অধ্যাপক হুমায়ুন কবির চৌধুরী ও হিসাববিজ্ঞান বিভাগের শিক্ষক-শিক্ষার্থীসহ পুরো বিশ্ববিদ্যালয়ের সাধারণ শিক্ষার্থীরা। তারা শোকসন্তপ্ত পরিবারের প্রতি গভীর সমবেদনা ও তার রুহের মাগফিরাত কামনা করেছেন।