বাংলাদেশ

মতামত

খেলা

বিনোদন

জীবনযাপন

তারুণ্য

কিড জোন

অন্যান্য

রেস-জেন্ডার

ফ্যাক্ট চেক

স্বাস্থ্য

আন্তর্জাতিক

শিক্ষা

অর্থ-বাণিজ্য

বিজ্ঞান-প্রযুক্তি

‘সন্তানের পাশে অভিভাবক’

  • প্রতিনিধি, ঢাবি   
  • ৩ আগস্ট, ২০২৪ ১৮:৪৪

আয়োজনের অন্যতম সমন্বয়ক রাখাল রাহা বলেন, ‘আজ থেকে আমাদের সন্তানদের যে কর্মসূচি, আমাদেরও একই কর্মসূচি। আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যরা আমাদের বুকের রক্ত না নিয়ে আর আমাদের সন্তানদের রক্ত নিতে পারবে না।’

‘অধিকার চাইলে আমাদের সন্তানকে হত্যা করা হবে কেন’ জানতে চেয়ে শাহবাগে সমাবেশ করেছেন অভিভাবকরা। এ সময় তারা প্রধানমন্ত্রীর হাতে রক্তের দাগ লেগে আছে উল্লেখ করে তার পদত্যাগ দাবি করেন।

শনিবার সকাল ১০টায় রাজধানীর শাহবাগে জাতীয় জাদুঘরের সামনে সারাদেশে নির্বিচারে শিক্ষার্থী হত্যা, মিথ্যা হামলা ও গণগ্রেপ্তারের প্রতিবাদে ‘সন্তানের পাশে অভিভাবক’ ব্যানারে এই কর্মসূচির আয়োজন করা হয়।

সমাবেশে চঞ্চল চৌধুরী নামে একজন অভিভাবক বলেন, ‘এখন দেশে দিনে নাটক আর রাতে আটক চলছে। আমি একজন শিক্ষক। আমার নয় বছরের একটি সন্তান আছে। আমার প্রতিটি রাত নির্ঘুম কাটে। কখন আমাকে নিয়ে যাবে বা আমার ছেলেকে নিয়ে যাবে, এই চিন্তায় আমি ঠিকমতো ঘুমাতে পারি না। এই আতঙ্কের মধ্য দিয়ে আমাদের প্রতিটি দিন অতিবাহিত হচ্ছে। কিন্তু সরকারের কোনো মন্ত্রী মিথ্যাচার ছাড়া আর কোনো কথা বলছেন না।’

তিনি বলেন, ‘আমি খুনির কাছে কোনো খুনের বিচার চাই না। আমরা এই খুনির অপসারণ না হয় পদত্যাগ চাই। আমি সব অভিভাবক এবং জনতাকে আহ্বান করছি- আপনারা রাস্তায় নেমে আসুন। আপনার নিজেদের বাঁচান, নিজেদের দেশকে বাঁচান। গত জুলাই থেকে এখন পর্যন্ত যা যা হচ্ছে সেটি কোনো স্বাধীন রাষ্ট্রের বৈশিষ্ট্য হতে পারে না।’

নাসিমা নামে আরেক অভিভাবক বলেন, ‘মা হিসেবে আমাদের কর্তব্য ছিল সন্তানদেরকে খাইয়ে-পরিয়ে বড় করা। আমরা সেটা করেছি। কর্তব্য ছিল মানুষের মতো মানুষ করা। সেটিও করেছি আমরা। এখন যখন আমাদের সন্তানেরা রাস্তায় নেমে অন্যায়ের প্রতিবাদ করছে তখন আমাদের কর্তব্য, তাদের সেই প্রতিবাদে পাশে থাকা। আমরা বর্তমানে সেটাই করছি।’

এই মা আরও বলেন, ‘আজকে যেসব অভিভাবক ভয়ের কারণে রাস্তায় নামতে পারছেন না, আপনারা বাসায় থাকুন, আমাদের কোনো সমস্যা নেই। আপনারা বাসায় বসে দেশের অবস্থা বাইরের মানুষকে জানান। আমাদের উপকার করতে পারছেন না ঠিক আছে, কিন্তু অপকার কইরেন না। আপনার মুখ বন্ধ করে থাকাটাই আমাদের জন্য অপকার।’

এসএসসি পরীক্ষার্থী মোবারক হোসেনের মা বলেন, ‘আমার পোলাডা আরেকজনরে বাঁচাইতে গিয়া দুই পায়ে গুলি খাইয়া পইড়া রইছে। আমার পোলা যখন হাসপাতালের বেডে কান্দে তখন আমার কইলজাডা ফাইট্টা যায়।’

তিনি বলেন, ‘আমার সন্তানের এক পা ভাঙা, গুঁড়া গুঁড়া হয়া গেছে। আরেক পায়ের গোস্ত ফুটা হয়া বাইর হয়া গেছে। এহন আমার পোলা হাঁটতে পারব কি পারব না তাও কইতে পারি না। হাসপাতালের বেডে শুইয়া আমার পোলার কান্না আমি সহ্য করতে পারি না। আমি এই সন্তান নিয়া এহন কী করমু? কার কাছে যামু? আমার তো এমন কোন লোকও নাই যে আমারে সাহায্য করবে।’

এই আয়োজনের অন্যতম সমন্বয়ক রাখাল রাহা বলেন, ‘আমাদের দুই শতাধিক সন্তান-জনতাকে হত্যা করা হয়েছে। আমাদের সন্তান আহত হয়েছে কয়েক হাজার, আটক করা হচ্ছে তার চেয়েও বেশি। আর মামলা দেয়া হচ্ছে তারও অনেক বেশি। তার মানে লাখ লাখ সন্তান, মানুষের জীবন আজ হুমকির মুখে।’

তিনি বলেন, ‘আজ থেকে আমাদের সন্তানদের যে কর্মসূচি, আমাদেরও একই কর্মসূচি। সন্তানরা যখন যে কর্মসূচি দেবে আমরা সারাদেশে এই ব্যানার নিয়ে তাদের পাশে দাঁড়াব। তাদেরকে সহযোগিতা করব। আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যরা আমাদের বুকের রক্ত না নিয়ে আর আমাদের সন্তানদের রক্ত নিতে পারবে না।’

এ বিভাগের আরো খবর