কুমিল্লায় বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের ব্যানারে শিক্ষার্থীদের বিক্ষোভ মিছিল ও গণমিছিল কর্মসূচিতে হামলার ঘটনা ঘটেছে। অভিযোগ উঠেছে- ছাত্রলীগ, যুবলীগ, স্বেচ্ছাসেবক লীগের নেতাকর্মীরা এই হামলা ও গুলি চালিয়েছে।
বিভিন্ন হাসপাতালে ঘুরে দেখা গেছে, মিছিলে হামলা ও গুলিবর্ষণের ঘটনায় কমপক্ষে ১২ জন শিক্ষার্থী আহত হয়েছেন। তাদের মধ্যে পাঁচজন গুলিবিদ্ধ।
গুলিতে আহত এক শিশু শিক্ষার্থী হাসপাতালে চিকিৎসাধীন। ছবি: নিউজবাংলা
শনিবার শিক্ষার্থীরা জিলা স্কুল থেকে কান্দিরপাড়ের পূবালী চত্বরে এসে বিক্ষোভ কর্মসূচি ও গণমিছিল করতে গেলে সাউন্ড গ্রেনেড তাদেরকে ছত্রভঙ্গ করে দেয় পুলিশ। এরপর কুমিল্লা মহানগর ছাত্রলীগ, যুবলীগ, স্বেচ্ছাসেবক লীগসহ আওয়ামীপন্থী রাজনীতির সঙ্গে সম্পৃক্তরা শিক্ষার্থীদের মিছিল লক্ষ্য করে গুলি চালায়। এ সময় শিক্ষার্থীদের বেধড়ক মারধর করা হয়।
সরেজিমনে দেখা যায়, কুমিল্লা জিলা স্কুল থেকে সকাল ১০টায় প্রতীকী সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান করে ১১টায় বিক্ষোভ কর্মসূচি ও গণমিছিল করার জন্য শিক্ষার্থীরা জড়ো হতে থাকেন। এ সময় শিক্ষার্থীদের প্রথমে নানা হুমকি-ধমকি দিয়ে বাসায় ফেরত পাঠানোর চেষ্টা করা হয়। তারপরও শিক্ষার্থীরা জড়ো হওয়ার চেষ্টা করলে তাদেরকে ছত্রভঙ্গ করার জন্য পুলিশ প্রথমে সাউন্ড গ্রেনেড নিক্ষেপ করে। পরবর্তীতে শিক্ষার্থীরা ছত্রভঙ্গ হয়ে পড়লে কুমিল্লা মহানগর ছাত্রলীগ, যুবলীগ, স্বেচ্ছাসেবক লীগসহ আওয়ামীপন্থী রাজনীতির সঙ্গে সম্পৃক্তরা শিক্ষার্থীদের লক্ষ্য করে গুলি ছোড়ে। এ সময় হামলাকারীদের হাতে রামদা ও অন্যান্য দেশীয় অস্ত্র দেখা যায়।
শিক্ষার্থীরা পূবালী চত্বর থেকে ছত্রভঙ্গ হয়ে পুলিশ লাইন্সের দিকে জড়ো হয়ে শাসনগাছার দিকে মিছিল নিয়ে এগুতে থাকলে সেখানে আরেক দফা তাদের ওপর হামলা চালায় ছাত্রলীগ, যুবলীগ ও স্বেচ্ছাসেবক লীগের নেতাকর্মীরা।
এই হামলার সময় সাংবাদিকদেরকেও পেশাগত দায়িত্ব পালনে বাধা দেয়া হয়। স্থানীয় দৈনিক কুমিল্লার কাগজের এক সাংবাদিককে মারধর ও তার মোবাইল ফোন ভেঙে ফেলা হয়।
কুমিল্লা সদর হাসপাতালের রেসিডেন্সিয়াল মেডিক্যাল অফিসার (আরএমও) আবদুল করিম জানান, সেখানে ছয়জন শিক্ষার্থী চিকিৎসা নিয়েছেন। তাদের মধ্যে দুজন রাবার বুলেটে আহত হয়েছেন।
কুমিল্লা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের পরিচালক ড. ফজলে হাসান রাব্বি জানান, হাসপাতালে মোট ছয়জন শিক্ষার্থী ভর্তি হয়েছেন। তাদেরকে চিকিৎসা করা হয়েছে।
এছাড়াও কুমিল্লার দুই হাসপাতাল মিলিয়ে মোট পাঁচজন শিক্ষার্থী গুলিবিদ্ধ হয়েছেন। কুমিল্লা শহরের বিভিন্ন বেসরকারি হাসপাতালে আরও বেশকিছুসংখ্যক আহত শিক্ষার্থী ভর্তি হয়েছেন।
কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ের ফিন্যান্স অ্যান্ড ব্যাংকিং বিভাগের সাইফুল ইসলাম সোহান নামে এক শিক্ষার্থী হামলায় গুরুতর আহত হয়েছেন।