বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের নয় দফা দাবিতে খুলনায় বিক্ষোভ মিছিল ও অবস্থান কর্মসূচি ঘিরে পুলিশের সঙ্গে শিক্ষার্থীদের ব্যাপক সংঘর্ষ হয়েছে। সংঘর্ষ, ইটপাটকেল নিক্ষেপ, পুলিশের রাবার বুলেট ও কাঁদানে গ্যাস ছোড়ার এসব ঘটনায় কমপক্ষে ৫০ জন আহত হয়েছেন। নিহত হয়েছেন একজন কনস্টেবল।
আহতদের মধ্যে তিন পুলিশ সদস্য ও ২২ শিক্ষার্থীকে খুলনা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।
সন্ধ্যা ৬টায় খুলনা মেট্রোপলিটন পুলিশের (কেএমপি) কনস্টেবল সুমন ঘরামী খুলনার গল্লামারী মোড়ে ছাত্রদের হামলায় নিহত হয়েছেন। রাত ৯টায় এ খবরের সত্যতা নিশ্চিত করেছেন পুলিশ কমিশনার মোজাম্মেল হক।
তিনি বলেন, এছাড়াও প্রায় ৩০ জন পুলিশ সদস্য আহত হয়েছেন। তাদেরকে খুলনার সিটি মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।
কনস্টেবল সুমন ঘরামী। ছবি: সংগৃহীত
এছাড়া খুলনা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে এ পর্যন্ত ২২ জন শিক্ষার্থী আহত অবস্থায় ভর্তি হয়েছেন। তাদের মধ্যে ৬ জন রাবার বুলেটে আহত হয়েছেন।
শুক্রবার জুমার নামাজের পর বেলা ৩টার দিকে শিক্ষার্থীরা খুলনার রাজপথে নেমে আসেন। এ সময় তারা সাম্প্রতিক কোটা আন্দোলনের সময় শিক্ষার্থীদের ওপর পুলিশ, র্যাব ও বিজিবির হামলার প্রতিবাদে বিভিন্ন স্লোগান দেন।
খুলনা বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাস থেকে শিক্ষার্থীরা মিছিল নিয়ে অগ্রসর হলে পুলিশ তাদের বাধা দেয়। বাধা উপেক্ষা করে শিক্ষার্থীরা মিছিল নিয়ে ক্যাম্পাস থেকে রওনা হন। শিক্ষার্থীরা ক্যাম্পাসের মূল ফটকের বাইরে আসার পর বিপুলসংখ্যক পুলিশ তাদের সামনে বাধা হয়ে দাঁড়ায়।
এক পর্যায়ে পুলিশ ও শিক্ষার্থীরা মুখোমুখি অবস্থান নেন। এ সময় তারা বিভিন্ন স্লোগান দিতে থাকেন।
বিকেল ৪টার পর খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রধান ফটকের সামনে প্রাক্তন ছাত্রদের আহ্বানে ছাত্র-শিক্ষক-জনতার প্রগতিবাদী গান ও স্লোগান এবং সমাবেশ শুরু হয়। আর পুলিশ চারপাশে অবস্থান নিয়ে থাকে।
এক পর্যায়ে শিক্ষার্থীদের সঙ্গে পুলিশের সংঘর্ষ বাধে। শিক্ষার্থীদের প্রতিরোধের মুখে এ সময় পুলিশ পিছিয়ে যায়। পরবর্তীতে আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর বিপুলসংখ্যক সদস্য শিক্ষার্থীদের ধাওয়া করেন। এ সময় শিক্ষার্থীরা পুলিশকে লক্ষ্য করে ইটপাটকেল ছুড়তে থাকে।
অপরদিকে পুলিশ কাঁদানে গ্যাস ছুড়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণের চেষ্টা করে। চলতে থাকে ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়া ও সংঘর্ষ।
কয়েক ঘণ্টাব্যাপী শিক্ষার্থী-পুলিশ সংঘর্ষে আহত হয়েছেন কমপক্ষে ৫০ জন। তাদের মধ্যে তিনজন পুলিশ সদস্য ও ২২ শিক্ষার্থীকে খুলনা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।