বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের ডাকা ‘ছাত্র-জনতার গণমিছিল’ কর্মসূচি পালনকে কেন্দ্র করে সিলেটে পুলিশের সঙ্গে বিক্ষোভকারীদের ব্যাপক সংঘর্ষ হয়েছে। এ সময় আন্দোলনকারীদের থামাতে পুলিশ ব্যাপক কাঁদানে গ্যাস ও সাউন্ড গ্রেনেড ছুড়েছে।
শুক্রবার বিকেল ৪টার দিকে নগরের আখালিয়া এলাকায় সংঘর্ষ শুরু হয়। ক্রমেই তা মদিনা মার্কেট, তপোবন, সুবিদবাজারসহ আশপাশের এলাকায় ছড়িয়ে পড়ে। সন্ধ্যা সাড়ে ৬টায় এ প্রতিবেদন লেখা পর্যন্ত সংঘর্ষ চলছে। পুরো দুই কিলোমিটার এলাকাজুড়ে থমথমে অবস্থা বিরাজ করছে।
সংঘর্ষে পুলিশ ও সাংবাদিকসহ অর্ধশতাধিক আহত হওয়ার খবর পাওয়া গেছে। পুলিশ আটজনকে আটক করার তথ্য জানিয়েছে।
সংঘর্ষকালে শিক্ষার্থীদের ছত্রভঙ্গ করতে কাঁদানে গ্যাস ছোড়ে পুলিশ। ছবি: নিউজবাংলা
বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন ঘোষিত ‘ছাত্র-জনতার গণমিছিল’ কর্মসূচি পালনে শুক্রবার বেলা ৩টায় বৃষ্টি মাথায় নিয়েই শাহজালাল বিশ্ববিদ্যালয় ফটকের সামনে জড়ো হন আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীরা। এ সময় তাদের সঙ্গে বহিরাগতদেরও দেখা যায়। ক্রমেই বাড়তে থাকে জমায়েত।
একপর্যায়ে সিলেট-সুনামগঞ্জ সড়ক অবরোধ করেন আন্দোলনকারীরা। এ সময় পুলিশ তাদের সড়ক থেকে সরে যেতে বলে। পুলিশের বাধা পেয়ে আন্দোলনকারীরা মিছিল নিয়ে মদিনা মার্কেটের দিকে অগ্রসর হলে পুলিশও পিছু নেয়। মিছিলটি মদিনা মার্কেট এলাকায় আসার পর পুলিশকে লক্ষ্য করে ঢিল ছোঁড়া হয়। পুলিশ পাল্টা টিয়ার শেল ছুড়তে শুরু করে। এই পর্যায়ে শিক্ষার্থীদের সঙ্গে পুলিশের সংঘর্ষ বেধে যায়।
পুলিশ টিয়ার শেল ও সাউন্ড গ্রেনেড ছুড়তে ছুড়তে ধাওয়া করলে এক পর্যায়ে আন্দোলনকারীরা বিভিন্ন গলির ভেতর ঢুকে পড়ে। সেখান থেকেই তারা পুলিশকে লক্ষ্য করে ইট-পাটকেল ছুঁড়ছে। সময়ের সঙ্গে সঙ্গে আন্দোলনকারীর সংখ্যা বাড়ছে। সাগরদিঘির পাড় ও তপোবন এলাকায় অবস্থান নিয়ে সড়ক অবরোধ করে আছে হাজারও বিক্ষোভকারী। দু’পক্ষের মাঝখানে অবস্থান পুলিশের।
এক শিক্ষার্থীকে ধরে নিয়ে যাচ্ছে পুলিশ। ছবি: নিউজবাংলা
এই সংঘর্ষে এখন পর্যন্ত ৫০ জন আহত হওয়ার খবর পাওয়া গেছে। তাদের মধ্যে শিক্ষার্থী ছাড়াও পুলিশ, সাংবাদিক এবং পথচারী রয়েছেন।
সিলেট মহানগর পুলিশের উপ-কমিশনার (উত্তর) আজবাহার আলী শেখ বলেন, ‘পুলিশের ওপর বিনা উস্কানিতে তারা প্রথমে আক্রমণ করে। পরে পুলিশ প্রতিহত করছে। এখন পর্যন্ত আটজনকে আটক করা হয়েছে।’