বিএনপি-জামায়াত, ছাত্রদল-ছাত্রশিবিরের সশস্ত্র তাণ্ডবে সাধারণ শিক্ষার্থীরা মৃত্যুবরণ করেছে বলে মন্তব্য করেছেন বাংলাদেশ ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় সভাপতি সাদ্দাম হোসেন।
বুধবার সন্ধ্যা সাড়ে ৭টার দিকে রাজধানীর শাহবাগ মোড়ে শোকের মাস আগস্ট উপলক্ষে বাংলাদেশ ছাত্রলীগের আলোক প্রজ্বালন অনুষ্ঠানে সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে তিনি একথা বলেন।
এ সময় তিনি বলেন, ‘কোটা সংস্কার এমন একটি আন্দোলন যে আন্দোলনের কোনো প্রতিপক্ষ ছিল না, যার ব্যাপারে সরকার আন্তরিক। বিএনপি-জামায়াত, ছাত্রদল ও ছাত্রশিবিরের সশস্ত্র তাণ্ডবের শিকার হয়ে সাধারণ শিক্ষার্থীরা মৃত্যুবরণ করেছে। এর দায়ভার পুরোপুরি বিএনপি-জামায়াত ও ছাত্রদল-ছাত্রশিবিরকে নিতে হবে।’
শিক্ষার্থীদের নিরাপত্তা বিবেচনায় ছাত্রলীগ সংঘাতে জড়ায়নি জানিয়ে সাদ্দাম বলেন, ‘শিক্ষার্থীদের যৌক্তিক দাবি আদায়ের আন্দোলনে ছাত্রলীগ যেমন নেতৃত্ব দিয়েছে, একইসঙ্গে শিক্ষার্থীদের নিরাপত্তার বিষয়টি বাংলাদেশ ছাত্রলীগের কাছে সবচেয়ে যৌক্তিক বিবেচনার বিষয় ছিল।’
তিনি বলেন, ‘বিজয় একাত্তর হলে ছাত্রলীগের নেতাকর্মীদের ওপর সশস্ত্র হামলা হয়েছে। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে তিন শতাধিক কক্ষে ভাঙচুর করা হয়েছে। বিভিন্ন আবাসিক হলে আমাদের মেয়েদের নির্মম নির্যাতন করা হয়েছে। ইডেন কলেজ, বদরুন্নেসা কলেজে মানবতাবিরোধী অপরাধ করা হয়েছে, শিক্ষার্থীদের লাঞ্ছিত করা হয়েছে।’
‘আমাদের লক্ষ্য ছিলো তাদের উস্কানিতে পা না দেয়া। যেকোনো মূল্যে সংঘাত এড়িয়ে যাওয়া। বিশ্ববিদ্যালয়ের অভ্যন্তরে যারা লাশের পর লাশ ফেলতে চেয়েছে, তাদের পাতানো ফাঁদে ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা যাতে পা না দেয় সে ব্যাপারে ছাত্রলীগ দায়িত্বশীল ভূমিকা পালন করেছে।’ যোগ করেন সাদ্দাম।
কক্ষ ভাংচুরের বিষয়ে সাদ্দাম বলেন, ‘ছাত্রদল-শিবিরের ক্যাডাররা ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের হলগুলোতে হামলা চালিয়েছে। ছাত্রদল এবং ছাত্রশিবিরের চিহ্নিত ক্যাডাররা, হিজবুত তাহরিরসহ উগ্রপন্থী নেতাকর্মীরা পরিকল্পিতভাবেই এ হামলা করেছে। কিন্তু বাংলাদেশ ছাত্রলীগ শিক্ষার্থীদের নিরাপত্তার জন্য সংঘাত এড়িয়ে যাওয়ার চেষ্টা করেছে।’
শোকের মাস আগস্ট উপলক্ষে ছাত্রলীগ সভাপতি বলেন, ‘জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানসহ ঘাতকের বুলেটের আঘাতে নির্মমভাবে শাহাদাত বরণকারী সবার স্মৃতির প্রতি গভীর শ্রদ্ধা জানিয়ে বাংলাদেশের ছাত্রসমাজের পক্ষ থেকে আমরা ঐতিহাসিক শাহবাগ চত্বরে এই আলোক প্রজ্বালন কর্মসূচি করেছি।
‘ছাত্রলীগ এই আগস্ট মাসের শোক থেকে শক্তি সঞ্চয় করে দেশবিরোধী, স্বাধীনতাবিরোধী ও মুক্তিযুদ্ধের চেতনাবিরোধী অপশক্তির বিরুদ্ধে লড়াইয়ের অঙ্গীকার করছে। এই বাংলাদেশকে যারা অস্থিতিশীল করতে চায়, দেশের অর্থনীতিকে যারা ধ্বংস করতে চায় এবং যারা রাজাকারদের পুনর্বাসন করতে চায় তাদের বিরুদ্ধে আমরা ঐক্যবদ্ধ থাকব। আমরা আমাদের শোককে শক্তিতে পরিণত করে স্বাধীনতাবিরোধীদের মূল উৎপাটন করবে।’
আলোক প্রজ্বালন অনুষ্ঠানে আরও উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশ ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় সাধারণ সম্পাদক শেখ ওয়ালী আসিফ ইনান, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগের সভাপতি মাজহারুল কবির শয়ন, সাধারণ সম্পাদক তানভীর হাসান সৈকতসহ বিভিন্ন ইউনিটের নেতৃবৃন্দ।