বাংলাদেশ

মতামত

খেলা

বিনোদন

জীবনযাপন

তারুণ্য

কিড জোন

অন্যান্য

রেস-জেন্ডার

ফ্যাক্ট চেক

স্বাস্থ্য

আন্তর্জাতিক

শিক্ষা

অর্থ-বাণিজ্য

বিজ্ঞান-প্রযুক্তি

জাবিতে শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের বিক্ষোভ, গণস্বাক্ষর

  • প্রতিনিধি, জাবি   
  • ৩১ জুলাই, ২০২৪ ২০:২৮

সমাবেশে অধ্যাপক মোহাম্মদ গোলাম রব্বানী বলেন, ‘সরকার একটি মিথ্যার ওপর দাঁড়িয়ে আছে। দেশে এখন গণতান্ত্রিক বিধিব্যবস্থা আছে তেমনটা মনে করার কোনো কারণ অবশিষ্ট নেই। সরকারকে বলতে চাই- যে ভয়ের সংস্কৃতি দিয়ে সবার মুখ বন্ধ করতে চেয়েছিলেন সেটিতে আপনারা ব্যর্থ হয়েছেন। সত্য স্বীকার করতে শিখুন, ভুল স্বীকার করতে শিখুন।’

কোটা সংস্কার আন্দোলন ঘিরে হত্যা, গণগ্রেপ্তার, হামলা, মামলা ও গুমের প্রতিবাদে ‘মার্চ ফর জাস্টিস’ কর্মসূচির অংশ হিসেবে বিক্ষোভ মিছিল করেছেন জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের (জাবি) শিক্ষার্থীরা।

বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের ব্যানারে আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের সঙ্গে সংহতি জানিয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন বিভাগের কয়েকজন শিক্ষকও এই কর্মসিূচিতে অংশ নিয়েছেন।

বুধবার দুপুর ১টার দিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের কলা ও মানবিক অনুষদ ভবন সংলগ্ন মহুয়া মঞ্চের সামনে থেকে বিক্ষোভ মিছিল বের করেন শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা। মিছিলটি বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় শহীদ মিনার সংলগ্ন সড়ক, নতুন প্রশাসনিক ভবন প্রদক্ষিণ করে একই স্থানে এসে শেষ হয়। পরে সেখানে সমাবেশ করেন তারা।

এরপর একই স্থানে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন জাবি শাখার অন্যতম সমন্বয়ক আরিফ সোহেল ও বিশ্ববিদ্যালয়ের নৃবিজ্ঞান বিভাগের শিক্ষার্থী লিয়নসহ গ্রেপ্তারকৃত সব শিক্ষার্থীর নিঃশর্ত মুক্তির দাবিতে গণস্বাক্ষর কর্মসূচি পালন করা হয়। এতে বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন বিভাগের শিক্ষক ও শিক্ষার্থীরা স্বাক্ষর করেন।

সমাবেশে বিশ্ববিদ্যালয়ের ইতিহাস বিভাগের অধ্যাপক মোহাম্মদ গোলাম রব্বানী বলেন, ‘সরকার একটি মিথ্যার ওপর দাঁড়িয়ে আছে। দেশে এখন গণতান্ত্রিক বিধিব্যবস্থা আছে তেমনটা মনে করার কোনো কারণ অবশিষ্ট নেই।

‘আজ পর্যন্ত এতো নির্মমতা, এতো হত্যাকাণ্ড, এতো নির্যাতন, এতো নিপীড়নের পরও কোনো প্রকার দায়-দায়িত্ব স্বীকার করেনি সরকার। অথচ আমরা স্পষ্ট দেখেছি যে এই সহিংসতা ছড়ানোর পেছনে একজন মন্ত্রীর কী পরিমাণ দায়দায়িত্ব রয়েছে। তিনি একটি বিশেষ ছাত্রসংগঠনকে নির্দেশ দিয়েছিলেন। তারপরই সংঘর্ষ ছড়িয়েছে।’

তিনি আরও বলেন, ‘এই আন্দোলন এখন আর শিক্ষার্থীদের আন্দোলন নেই। এটি শিক্ষক-শিক্ষার্থী-জনতার আন্দোলন হয়ে গেছে। একটি রাষ্ট্র যখন সংকটে পতিত হয়, একটি রাষ্ট্রের যখন আমূল পরিবর্তনের দরকার হয়, তখন বিশ্ববিদ্যালয়গুলো গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে।

‘বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর সৃষ্টিই হয়েছে রাষ্ট্রকে পথ দেখানোর জন্য। রাষ্ট্রের যে ড্যামেজ তা পুনঃনির্মাণ করাই বিশ্ববিদ্যালয়ের কাজ। সরকারকে বলতে চাই- যে ভয়ের সংস্কৃতি দিয়ে সবার মুখ বন্ধ করতে চেয়েছিলেন সেটিতে আপনারা ব্যর্থ হয়েছেন। আপনারা সত্য স্বীকার করতে শিখুন, ভুল স্বীকার করতে শিখুন। প্রতিটি হত্যাকাণ্ডের সুষ্ঠু তদন্তের মাধ্যমে বিচার করুন।’

নৃবিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপক মানস চৌধুরী বলেন, ‘সরকার আশা করছিল, কোটা সংস্কার আন্দোলনের জবাব হিসেবে সুপ্রিম কোর্ট থেকে যখন রায় হবে, হল যখন বন্ধ থাকবে ততক্ষণে সবকিছু শান্ত করে ফেলা যাবে।

‘বাস্তবতা হচ্ছে, পুরো পরিস্থিতি সৃষ্টি হয়েছে কতগুলো উস্কানি দেয়ার কারণে। নিরপরাধ মানুষের মৃত্যুতে বাংলাদেশের এমন কোনো বর্গ নেই যেখানে একান্তে মানুষ হাহাকার না করছে। কান পাতলেই সরকার ও সরকারপন্থী গায়েনরা এসব কথা শুনতে পারতেন- মানুষজন কিভাবে শোক করছে।

‘সরকার যেমন গোয়ার্তুমি করে নো-রিটার্নে গেছে; আমাদেরকেও হকের জন্য, ন্যায়বিচারের জন্য, স্বাধীন মতপ্রকাশের জন্য পয়েন্ট অফ নো-রিটার্নে যেতে হবে।’

বিশ্ববিদ্যালয়ের নাটক ও নাট্যতত্ত্ব বিভাগের শিক্ষার্থী সোহাগী সামিহা বলেন, ‘যারা আজকে আন্দোলনে বাধা সৃষ্টি করছে, যারা জনগণের শত্রু হিসেবে চিহ্নিত হয়েছে, তারা মুক্তিযুদ্ধের চেতনা বেচে খেতে চায়।

‘আমরা বলতে চাই, মুক্তিযুদ্ধের চেতনা কোনো একক দলের চেতনা নয়। স্বাধীনতার চেতনা, মুক্তিযুদ্ধের চেতনা ও সাম্যের চেতনা সারা বাংলার মানুষের চেতনা।’

সরকারকে উদ্দেশ করে তিনি বলেন, ‘দিনের পর দিন মুক্তিযুদ্ধের চেতনার নাম করে মানুষের ওপর স্বৈরশাসন চালাবেন, দুঃশাসন চালাবেন, গুলি চালাবেন, তাহলে জনগণ আপনাকে রাজাকার হিসেবে চিহ্নিত করবে। মুক্তিযুদ্ধের সময় ধর্মের নাম করে তারা জনগণের বিপক্ষে দাঁড়িয়েছিল। আর এখন আপনারা স্বাধীন দেশে মুক্তিযুদ্ধের চেতনার নাম করে জনগণের বিপক্ষে দাঁড়িয়েছেন।’

বিশ্ববিদ্যালয়ের দর্শন বিভাগের শিক্ষার্থী রিয়াজুল ইসলাম রিহানের সঞ্চালনায় সমাবেশে অন্যদের মধ্যে বক্তব্য দেন বাংলা বিভাগের সহকারী অধ্যাপক মো. শামীম হোসেন, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন জাবি শাখার সমন্বয়ক আব্দুর রশিদ জিতু, প্রত্নতত্ত্ব বিভাগের শিক্ষার্থী অমর্ত্য রায় প্রমুখ।

এ বিভাগের আরো খবর