বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়ে (ববি) বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন কর্মসূচির প্রস্তুতি আলোচনা সভায় হামলা চালিয়েছে ছাত্রলীগের কর্মীরা। সোমবার দুপুরে ববি’র গ্রাউন্ড ফ্লোরে এই হামলার ঘটনায় আন্দোলনের সমন্বয়কসহ ১৫ শিক্ষার্থী আহত হয়েছেন।
আহতদের মধ্যে নয়জন শের-ই-বাংলা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন বলে হাসপাতালের জরুরি বিভাগ থেকে জানানো হয়েছে। তাদের মধ্যে সমন্বয়ক সুজয় শুভ, সিরাজুল ইসলাম, মাহমুদুল হাসান সজিব, সুজন মাহমুদ, ভূমিকা সরকার ও সেঁজুতি গুরুতর আহত হয়েছেন।
বৈষম্যবিরোধী আন্দোলন ববির সমন্বয়ক সুজয় শুভ বলেন, ‘কোটা সংস্কার আন্দোলনে পরবর্তী কর্মপরিকল্পনা নির্ধারণে আমরা ২০ জন শিক্ষার্থী মিটিং করছিলাম। এ সময় বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগের নেতা এ. কে আরাফাতের নেতৃত্বে ২০/৩০ জনের একটি দল লাঠি, রড ও পাইপ নিয়ে আমাদের ওপর হামলা চালায়।
‘হামলাকারীদের মধ্যে ছাত্রলীগের কর্মী মাহমুদুল হাসান তমাল, আল সামাদ শান্ত, খালেদ হাসান, শাহরিয়ার সান, সাব্বির, জাইফ, সাইফ, শরিফুল ইসলাম ও রাকিবুল ইসলামকে আমরা শনাক্ত করতে পেরেছি। তারা দু’দফায় হামলা চালিয়ে আমাদের ১৫ জনকে আহত করেছে।’
সুজয় শুভ বলেন, ‘সকাল থেকেই বিশ্ববিদ্যালয়ের সামনে বিপুলসংখ্যক পুলিশ, বিজিবি, এপিবিএন ও র্যাব সদস্যের উপস্থিতি ছিল। তাদের সামনেই আমাদের ওপর লাঠিসোটা নিয়ে হামলা চালিয়েছে ওরা। অথচ আইন-শৃঙ্খলা বাহিনী কিছুই করেনি।’
বরিশাল মেট্রোপলিটন বন্দর থানার ওসি আবদুর রহমান মুকুল বলেন, ‘কোটা সংস্কার আন্দোলনকর্মীরা ক্যাম্পাসে মিটিং করছিল। তাদের মিটিংয়ের শেষ পর্যায়ে কিছু শিক্ষার্থী গেট দিয়ে প্রবেশ করে। এ সময় উভয় পক্ষে হাতাহাতির ঘটনা ঘটেছে। পরবর্তীতে যারা ঢুকেছে তারা ছাত্রলীগ কর্মী কিনা তা বলতে পারছি না।’
এ বিষয়ে জানতে বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগ কর্মী এ.কে আরাফাতের মোবাইল নম্বরে কল দিলেও তা বন্ধ পাওয়া যায়। এর আগে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা ক্যাম্পাসে প্রতিবাদী চিত্রাঙ্কন করে কোটা সংস্কার, শিক্ষার্থী ও সাধারণ মানুষ হত্যা, গণগ্রেপ্তারের প্রতিবাদ জানান।
আন্দোলনকারী শিক্ষার্থী আরিফ বলেন, ‘শিক্ষার্থীদের ঘরবন্দি করে ন্যায্য আন্দোলনকে থামিয়ে দিতে চায়। আমাদের সমন্বয়কদের তুলে নিয়ে নির্যাতন করে আন্দোলন প্রত্যাহারের সাজানো ঘোষণা দেয়া হয়েছে।
‘সাধারণ শিক্ষার্থী আর জনগণ ডিবি অফিসের নাটক বুঝে গেছে। এভাবে ছাত্রদের রোধ করা যাবে না। কতজন ছাত্রকে তুলে নেবে? আমরা সারা দেশের ছাত্র-জনতা রাস্তায় নেমে এসেছি। আমাদের ৮ দফা দাবি বাস্তবায়ন না হওয়া পর্যন্ত ঘরে ফিরব না।’
হামলার বিষয়ে জানতে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর ড. আবদুল কাইউমকে মোবাইল ফোনে একাধিকবার কল করেও তার বক্তব্য পাওয়া যায়নি।