জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের (জাবি) শিক্ষার্থী ও বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন জাবি শাখার অন্যতম সমন্বয়ক আরিফ সোহেলকে ডিবি পরিচয়ে তুলে নেয়ার প্রতিবাদে বিক্ষোভ মিছিল ও সমাবেশ করেছেন বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক ও শিক্ষার্থীরা।
রোববার বিকেল ৩টার দিকে ক্যাম্পাসে বিক্ষোভ মিছিল ও সমাবেশ করেন শিক্ষার্থীরা। এর আগে দুপুর ১টার দিকে প্রতিবাদ সমাবেশ করেন বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকরা।
শিক্ষার্থীদের সমাবেশে আরিফ সোহেলের ছোট বোন উম্মে খায়ের ঈদি বলেন, ‘আমার ভাইকে জোর করে তুলে নিয়ে গেছে। সে কোথায় আছে এখনও আমরা জানি না। ন্যায়ের অধিকার আদায়ে লড়াই করার কারণে আমার ভাইকে অন্যায়ভাবে তুলে নিয়ে যাওয়া হয়েছে। এটা হতে পারে না। আমার পরিবার ভীত-সন্ত্রস্ত।’
শিক্ষার্থী আরিফ সোহেলকে তুলে নিয়ে যাওয়ার প্রতিবাদে রোববার জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে সমাবেশ করেন শিক্ষকরা। ছবি: নিউজবাংলা
বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনের জাবি শাখার সমন্বয়ক আব্দুর রশিদ জিতু বলেন, ‘আরিফ কোথায় আছে, কেমন আছে এখন অবধি আমরা তা জানি না। আমরা এর তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানাই। আমরা শিক্ষার্থীরা অনিরাপদ। হামলা-মামলার ভয় দেখানো হচ্ছে।
‘আমাদের অনেক সমন্বয়ক ও শিক্ষার্থী গ্রেপ্তার এবং পুলিশি হয়রানির শিকার হচ্ছেন। আমরা এসবের তীব্র নিন্দা জানাই। অতি দ্রুত বিশ্ববিদ্যালয়ের হল খুলে দেয়া হোক এবং শিক্ষার স্বাভাবিক পরিবেশ ফিরিয়ে আনা হোক।’
শিক্ষকদের প্রতিবাদ সমাবেশে দেশব্যাপী কোটা সংস্কার আন্দোলনে শিক্ষার্থীদের হত্যা, তাদের ওপর হামলা ও নির্যাতনের প্রতিবাদ জানানো হয়। এছাড়া বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন জাবি শাখার অন্যতম সমন্বয়ক আরিফ সোহেলকে ডিবি পরিচয়ে তুলে নেয়ার ঘটনায় উদ্বেগ প্রকাশ করেন তারা।
সমাবেশে বিশ্ববিদ্যালয়ের দর্শন বিভাগের অধ্যাপক রায়হান রাইন বলেন, ‘কোটা সংস্কার আন্দোলন ঘিরে দেশব্যাপী সাধারণ শিক্ষার্থী ও সাধারণ জনগণের ওপর হামলা হয়েছে। এখন আবার আন্দোলনের সঙ্গে যুক্ত শিক্ষার্থীদের নিরাপত্তার কথা বলে তুলে নিয়ে যাওয়া হচ্ছে।
‘তবে আমরা জানি, শিক্ষার্থীদের রিমান্ডে নিয়ে নির্যাতন করা হচ্ছে। আমরা শিক্ষার্থী ও সাধারণ জনগণের ওপর হামলার ঘটনায় তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানাচ্ছি।’
নৃবিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপক মানস চৌধুরীর সঞ্চালনায় সমাবেশে অন্যদের মধ্যে বক্তব্য দেন ফার্মেসি বিভাগের অধ্যাপক মোহাম্মদ মাফরুহী সাত্তার, ইতিহাস বিভাগের অধ্যাপক মোহাম্মদ গোলাম রব্বানী, নৃবিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপক সাঈদ ফেরদৌস, বাংলা বিভাগের অধ্যাপক শামীমা সুলতানা প্রমুখ।