বাংলাদেশ

মতামত

খেলা

বিনোদন

জীবনযাপন

তারুণ্য

কিড জোন

অন্যান্য

রেস-জেন্ডার

ফ্যাক্ট চেক

স্বাস্থ্য

আন্তর্জাতিক

শিক্ষা

অর্থ-বাণিজ্য

বিজ্ঞান-প্রযুক্তি

সিলেটে পুলিশ-শিক্ষার্থী ব্যাপক সংঘর্ষ, গুলিবিদ্ধসহ আহত অর্ধশতাধিক

  • প্রতিবেদক, সিলেট   
  • ১৮ জুলাই, ২০২৪ ১৮:০১

বৃহস্পতিবার দুপুর দেড়টার দিকে শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় গেটে সংঘর্ষের সূত্রপাত হয়। পরে তা আখালিয়া, মদিনা মার্কেটসহ আশপাশের বিভিন্ন এলাকায় ছড়িয়ে পড়ে। বিকেল প্রায় ৪ পর্যন্ত দফায় দফায় এই সংঘর্ষ ও ধাওয়া-পাল্টাধাওয়া চলে। সংঘর্ষে আহতদের মধ্যে কয়েকজন শিক্ষার্থী গুলিবিদ্ধ হয়েছেন।

সরকারি চাকরিতে কোটা সংস্কারের দাবিতে সিলেটে আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের সঙ্গে পুলিশের ব্যাপক সংঘর্ষ ও ধাওয়া-পাল্টাধাওয়ার ঘটনা ঘটেছে। এতে পুলিশ, সাংবাদিকসহ আহত হয়েছেন অর্ধশতাধিক।

আহতদের মধ্যে কয়েকজন শিক্ষার্থী গুলিবিদ্ধ হয়েছেন বলে জানা গেছে। তাদেরকে উদ্ধার করে সিলেট এম এ জি ওসমানী মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। এছাড়া অন্তত ১৫ জন আন্দোলনকারীকে আটক করেছে পুলিশ।

বৃহস্পতিবার দুপুর দেড়টার দিকে শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় গেটে সংঘর্ষের সূত্রপাত হয়। পরে তা আখালিয়া, মদিনা মার্কেটসহ আশপাশের বিভিন্ন এলাকায় ছড়িয়ে পড়ে। বিকেল প্রায় ৪ পর্যন্ত দফায় দফায় এই সংঘর্ষ ও ধাওয়া-পাল্টাধাওয়া চলে।

বৃহস্পতিবারের সংঘর্ষে শিক্ষার্থীদের সঙ্গে বহিরাগত অনেককেও অংশ নিতে দেখা যায়। বেলা সাড়ে ৩টার দিকে ছাত্রলীগ, যুবলীগ ও স্বেচ্ছাসেবক লীগের নেতাকর্মীরা অস্ত্রশস্ত্র নিয়ে মদিনা মার্কেট এলাকায় আন্দোলনকারীদের ধাওয়া দেন। এরপর মদিনা মার্কেট থেকে শাবি গেট পর্যন্ত সড়কে মহড়া দেন তারা।

সরকারি চাকরিতে কোটা ব্যবস্থা নিয়ে আন্দোলনরত শিক্ষার্থীরা বৃহস্পতিবার সারা দেশে ‘কমপ্লিট শাটডাউন’ কর্মসূচির ডাক দেন। জরুরি সেবার যানবাহন ও অফিস ছাড়া সব বন্ধ রাখার আহ্বান জানিয়েছেন তারা।

এই কর্মসূচি পালনে বৃহস্পতিবার বেলা ১১টা ২০ মিনিটের দিকে শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (শাবিপ্রবি) ফটকের সামনে সিলেট-সুনামগঞ্জ সড়ক অবরোধ করে অবস্থান নেন আন্দোলনরত শিক্ষার্থীরা। তাদের ঘিরে সতর্ক অবস্থানে থাকে আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বিভিন্ন বাহিনী। এ সময় তারা পুলিশ-বিজিবির সামনে ‘ভুয়া ভুয়া’ বলে স্লোগান দেন।

সংঘর্ষের সূত্রপাত নিয়ে প্রত্যক্ষদর্শী একাধিক ব্যক্তি জানান, দুপুর সোয়া ১টার দিকে শিক্ষার্থীদের সড়ক থেকে সরে যেতে বলে পুলিশ। এ সময় পুলিশের সঙ্গে শিক্ষার্থীদের উত্তপ্ত বাক্যবিনিময় হয়। এই বাক্যবিনিময় চলাকালে শিক্ষার্থীরা পুলিশকে লক্ষ্য করে ঢিল ছুড়তে শুরু করে। এসময় পুলিশও পাল্টা আক্রমণ চালায়। তারা টিয়ার গ্যাস, সাউন্ড গ্রেনেড ও ফাঁকা গুলি ছুঁড়ে শিক্ষার্থীদের ছত্রভঙ্গ করে দেয়। সড়ক থেকে ছত্রভঙ্গ হয়ে শিক্ষার্থীরা আশপাশের বিভিন্ন গলিতে আশ্রয় নিতে পুলিশকে লক্ষ্য করে ইট-পাটকেল নিক্ষেপ করতে থাকে। এসময় শিক্ষার্থীদের পক্ষে সংঘর্ষে বহিরাগত অনেককে অংশ নিতে দেখা যায়।

শাবি ফটক থেকে ছত্রভঙ্গ হয়ে নগরের আখালিয়া ও মদিনা মার্কেট এলাকায় জড়ো হন আন্দোলনকারীরা। এ সময় তারা রাস্তা অবরোধ করে স্লোগান দিতে থাকেন এবং পুলিশকে লক্ষ্য করে ইটপাটকেল নিক্ষেপ করেন। একপর্যায়ে পুলিশ সাঁজোয়া যান নিয়ে এসে ফাঁকা গুলি ও টিয়ারশেল ছুঁড়ে আন্দোলনকারীদের সড়ক থেকে সরিয়ে দেয়।

দফায় দফায় এই সংঘর্ষে পুরো এলাকায় আতংক ছড়িয়ে পড়ে। ভয়ে দোকানপাট বন্ধ করে দেন ব্যবসায়ীরা। যান চলাচলও বন্ধ হয়ে যায় সড়কে।

সংঘর্ষে ১০ পুলিশ সদস্য, পাঁচ সাংবাদিকসহ অর্ধশতাধিক আহত হয়েছেন। আহতদের বেশিরভাগই আন্দোলনকারী।

তবে আন্দোলনকারী একাধিক শিক্ষার্থী জানিয়েছেন, তাদের শতাধিক কর্মী আহত হয়েছেন। তাদের মধ্যে কয়েকজনের অবস্থা গুরুতর।

সিলেট মহানগর পুলিশের (এসএমপি) উপ-কমিশনার (উত্তর) আজবাহার আলী শেখ বলেন, ‘শিক্ষার্থীরা ইট-পাটকেল নিক্ষেপ করতে থাকলে পুলিশ তাদের প্রতিহত করে। তাদের হামলায় আমাদের অন্তত ১০ সদস্য আহত হয়েছেন। তাদের মধ্যে একজনের মাথায় আঘাত গুরুতর। এখন পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আছে। কয়েকজনকে আটক করা হয়েছে। তাদের প্রায় সবাই বহিরাগত।’

এর আগে সকাল ১১টা ২০ মিনিটে শাবি শিক্ষার্থীরা সড়কে অবস্থান নিয়ে বিক্ষোভ শুরু করেন। এসময় আশপাশে ব্যাপকসংখ্যক পুলিশ অবস্থান নেয়। তীব্র গরম উপেক্ষা করে শিক্ষার্থীরা রাস্তায় অবস্থান নিয়ে কোটা, সরকার ও পুলিশবিরোধী নানা স্লোগান দেন।

তারও আগে বৃহস্পতিবার সকাল ৮টা থেকে শাবিপ্রবি ক্যাম্পাসে অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়। সিলেট মহানগর পুলিশের (এসএমপি) ক্রাইসিস রেসপন্স টিম (সিআরটি) সদস্যরাও অবস্থান নেন ক্যাম্পাসে। তারা শিক্ষার্থীদের হল ছেড়ে যেতে বলেন।

এ বিভাগের আরো খবর