বাংলাদেশ

মতামত

খেলা

বিনোদন

জীবনযাপন

তারুণ্য

কিড জোন

অন্যান্য

রেস-জেন্ডার

ফ্যাক্ট চেক

স্বাস্থ্য

আন্তর্জাতিক

শিক্ষা

অর্থ-বাণিজ্য

বিজ্ঞান-প্রযুক্তি

শাবিতে শিক্ষার্থীদের ওপর ছাত্রলীগের হামলা, প্রতিবাদে বিক্ষোভ

  • প্রতিবেদক, শাবি   
  • ১৫ জুলাই, ২০২৪ ১৬:৪৪

আহত হয়ে সিলেট এমএজি ওসমানী মেডিক‍্যাল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসা নেয়া শিক্ষার্থী আসাদুল্লাহ আল গালিব বলেন, ‘আমরা ক্যাম্পাসে শান্তিপূর্ণভাবে বিক্ষোভ মিছিল করছিলাম। এর মধ্যে আমরা খবর পাই যে মিছিলে আসতে আগ্রহী হলের কিছু ভাইকে ছাত্রলীগ বাধা দিচ্ছে। তাই আবাসিক ছাত্র হল অভিমুখে গেলে ছাত্রলীগের নেতা-কর্মীরা আমাদের মিছিলে বাধা দেয়। একপর্যায়ে তারা হামলা চালায়।’

সিলেটের শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে কোটা সংস্কার আন্দোলনকারীদের বিক্ষোভ মিছিলে ছাত্রলীগের হামলার প্রতিবাদে বিক্ষোভ করেছেন শিক্ষার্থীরা। তবে ছাত্রলীগের পক্ষ থেকে হামলা চালানোর অভিযোগ অস্বীকার করা হয়েছে।

আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীরা বলেছেন, রোববার রাত ১টার দিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় গ্রন্থাগার ভবনের সামনে তাদের বিক্ষোভে ছাত্রলীগ নেতাকর্মীরা হামলা চালায়। এতে কয়েকজন শিক্ষার্থী আহত হন।

এই হামলার প্রতিবাদে সোমবার ক্যাম্পাসে বিক্ষোভ করেন শিক্ষার্থীরা। দুপুর ১২টার দিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের গোলচত্বর থেকে বিক্ষোভ মিছিল শুরু করেন তারা। মিছিল নিয়ে শিক্ষার্থীরা ক্যাম্পাসের বিভিন্ন সড়ক ও হল প্রদক্ষিণ করে বিশ্ববিদ্যালয়ের ফটকের সামনে অবস্থান নিয়ে বিক্ষোভ করতে থাকেন।

এ সময় বিক্ষোভরত শিক্ষার্থীরা ‘আপস না সংগ্রাম, সংগ্রাম সংগ্রাম’, ‘কোটা না মেধা, মেধা মেধা’, ‘আমার ভাইয়ের ওপর হামলা কেন? প্রশাসন জবাব চাই’, ‘আমি নই, তুমি হও, রাজাকার রাজাকার’, ‘কে বলেরে রাজাকার, তুই রাজাকার, তুই রাজাকার’, ‘আমি কেন রাজাকার, জবাব চাই জবাব চাই’ ইত্যাদি স্লোগান দেন।

বিক্ষোভ সমাবেশে বক্তব্য দেন বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী সুইটি আক্তার, নিঝুম, ফয়সাল আহমেদ, সাত্ত্বিক ব্যানার্জি, স্বার্থক, আসাদুল্লাহ আল গালিবসহ আরও কয়েকজন।

কোটা সংস্কার আন্দোলনে শাবি শিক্ষার্থীদের সমন্বয়ক আসাদুল্লাহ আল গালি বলেন, ‘গতকাল (রোববার) প্রধানমন্ত্রীর বক্তব্যসহ সরকার পক্ষের অনেকের বক্তব্য আমাদের কাছে উদ্দেশ্যপ্রণোদিত মনে হয়েছে। তারা আমাদের যৌক্তিক এক দফা আন্দোলনকে ভিন্ন দিকে প্রবাহিত করার জন্য এ ধরনের বক্তব্য দিচ্ছেন।

‘এছাড়া ছাত্রলীগ গত রাতে আমাদের ওপর হামলা চালিয়েছে। আমরা আমাদের এক দফা আন্দোলনে শান্তিপূর্ণ কর্মসূচি পালন করছি। এরপরও যদি কেউ হামলা করে আমরা প্রতিরোধ গড়ে তুলব।’

এদিকে প্রধানমন্ত্রীর বক্তব্যের প্রতিবাদে গত রাতে শিক্ষার্থীরা মিছিল বের করেন। অন্যদিকে শিক্ষার্থীদের স্লোগানে মুক্তিযুদ্ধের চেতনাকে অপমান করা হচ্ছে- এমনটা দাবি করে এবং এর প্রতিবাদে ছাত্রলীগও ক্যাম্পাসে মিছিল বের করে অবস্থান নেয়। পরে রাত ১টার দিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় গ্রন্থাগারের সামনের দুই মিছিল মুখোমুখি হলে শিক্ষার্থীদের মিছিলে হামলা করে ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা। এতে তিন শিক্ষার্থী আহত হন।

তারা হলেন- বিশ্ববিদ্যালয়ের ইংরেজি বিভাগের শিক্ষার্থী দেলোয়ার হোসেন, রসায়ন বিভাগের শিক্ষার্থী আসাদুল্লাহ গালিব ও গণিত বিভাগের শিক্ষার্থী হাফিজুল ইসলাম। তারা রাতে সিলেট এমএজি ওসমানী মেডিক‍্যাল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসা নেন।

আসাদুল্লাহ আল গালিব বলেন, ‘আমরা ক্যাম্পাসে শান্তিপূর্ণভাবে বিক্ষোভ মিছিল করছিলাম। এর মধ্যে আমরা খবর পাই যে মিছিলে আসতে আগ্রহী হলের কিছু ভাইকে ছাত্রলীগ বাধা দিচ্ছে। তাই আবাসিক ছাত্র হল অভিমুখে গেলে পথিমধ্যে ছাত্রলীগের নেতা–কর্মীরা আমাদের মিছিলে বাধা দেয়। একপর্যায়ে তারা হামলা করে।’

তবে হামলার অভিযোগ অস্বীকার করেছেন বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগের সভাপতি খলিলুর রহমান। তিনি বলেন, ‘হামলার কোনো ঘটনা ঘটেনি। সবার কাছে ভিডিও ফুটেজ আছে, তা দেখলেই বুঝা যাবে। বরং আমরা সড়কের পাশে গিয়ে তাদের যাওয়ার ব্যবস্থা করে দিয়েছি।’

এ বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর মো. কামরুজ্জামান চৌধুরী বলেন, ‘দুপক্ষ মুখোমুখি হলে উত্তেজনা তৈরি হয়। পরে তা স্বাভাবিক হয়ে যায়। বর্তমানে ক্যাম্পাসের পরিস্থিতি শান্ত।’

গত ১ জুলাই থেকে চার দফা দাবিতে কোটা সংস্কারের দাবিতে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের ব্যানারে শিক্ষার্থীরা আন্দোলনে রয়েছেন। ২ জুলাই থেকে শাহবাগ অবরোধ কর্মসূচি, বাংলা ব্লকেড কর্মসূচি পালন করে আসছেন তারা। পরে ৪ জুলাই থেকে শিক্ষার্থীরা এক দফা দাবিতে আন্দোলন চালাতে থাকেন।

রোববার এক দফা দাবিতে পদযাত্রা নিয়ে রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিনের কাছে স্মারকলিপি দিয়েছে আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের ১২ সদস্যের একটি প্রতিনিধি দল। এরপর তারা ঘোষণা দেন, আগামী ২৪ ঘণ্টার মধ্যে কোটা সংস্কারের দাবিতে সরকারের দৃশ্যমান পদক্ষেপ না এলে তারা কঠোর কর্মসূচি দিতে বাধ্য হবেন।

এ বিভাগের আরো খবর