চাকরিতে কোটা বাতিলের পরিপত্র পুনর্বহালসহ চার দাবিতে শাহবাগ মোড় অবরোধ করেছেন শিক্ষার্থী ও চাকরি প্রত্যাশীরা। এতে চারপাশের সড়কে যান চলাচল স্থবির হয়ে পড়ে। কিছু সময় তারা সড়ক থেকে সরে যান।
মঙ্গলবার বিকেল ৩টা ৫০ মিনিটে শিক্ষার্থীরা শাহবাগ মোড় অবরোধ করেন। এর আগে পূর্বঘোষিত কর্মসূচি অনুযায়ী বেলা আড়াইটায় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় লাইব্রেরির সামনে থেকে পদযাত্রা শুরু করেন আন্দোলনকারীরা।
পদযাত্রাটি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন হল প্রদক্ষিণ শেষে নীলক্ষেত, ঢাকা কলেজ, সায়েন্স ল্যাব হয়ে শাহবাগ মোড়ে এলে শিক্ষার্থীরা সেখানে বসে পড়েন।
শাহবাগে অবরোধের আগে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাস থেকে মিছিল বের হয়। ছবি: নিউজবাংলা
এর আগে সোমবার ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের রাজু ভাস্কর্য থেকে আজকের এই কর্মসূচিসহ আরও তিনটি কর্মসূচি ঘোষণা করেন বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের অন্যতম সমন্বয়ক নাহিদ ইসলাম।
ঘোষিত কর্মসূচি অনুযায়ী, আগামী ৩ ও ৪ জুলাই জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়, অধিভুক্ত সাত সরকারি কলেজ এবং জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের অধীন ঢাকার অন্যান্য প্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীরা রাজু ভাস্কর্যে একত্র হবেন।
এর আগে পদযাত্রায় সহস্রাধিক শিক্ষার্থীর উপস্থিতি লক্ষ্য করা গেছে। এসময় শিক্ষার্থীরা ‘কোটা না মেধা?’, ‘মেধা মেধা’, ‘হাইকোর্টের রায় মানি না মানব না’, ‘কোটা বাতিল কর, বাতিল কর’, ‘ছাত্রসমাজ গড়বে দেশ, মেধাভিত্তিক বাংলাদেশ’, ‘মুক্তিযুদ্ধের বাংলায় বৈষম্যের ঠাঁই নাই’ ইত্যাদি স্লোগান দেন।
আন্দোলনের সমন্বয়ক নাহিদ ইসলাম বলেন, ৪ জুলাইয়ের মধ্যে আইনিভাবে আমাদের দাবির বিষয়ে চূড়ান্ত সুরাহা করতে হবে। আমাদের আশ্বস্ত করতে হবে, যাতে কোটাব্যবস্থার চূড়ান্ত ফয়সালা করা হয়।
আন্দোলনের আরেক সমন্বয়ক সারজিস আলম বলেন, ‘আমরা মহান মুক্তিযুদ্ধ এবং বীর মুক্তিযোদ্ধাদের বিপক্ষে না। উনাদের প্রতি সর্বোচ্চ সম্মান আমাদের আছে। আমরা মুক্তিযুদ্ধের চেতনা ধারণ করেই আন্দোলন করছি।’
কোটা বাতিলের পরিপত্র পুনর্বহালের পাশাপাশি শিক্ষার্থীদের অন্য দাবিগুলো হলো- পরবর্তী সময়ে সরকার কোটাব্যবস্থা নিয়ে কোনো পদক্ষেপ নিতে চাইলে ২০১৮ সালের পরিপত্র বহাল সাপেক্ষে কমিশন গঠন করে দ্রুত সময়ের মধ্যে সরকারি চাকরিতে সব গ্রেডে অযৌক্তিক ও বৈষম্যমূলক কোটা বাদ দেওয়া, সংবিধান অনুযায়ী অনগ্রসর জনগোষ্ঠীর কথা বিবেচনা করা, চাকরির নিয়োগ পরীক্ষায় কোটা–সুবিধা একাধিকবার ব্যবহারের সুযোগ বন্ধ করা, কোটায় যোগ্য প্রার্থী না পাওয়া গেলে শূন্য পদগুলোয় মেধা অনুযায়ী নিয়োগ দেওয়া এবং দুর্নীতিমুক্ত, নিরপেক্ষ ও মেধাভিত্তিক আমলাতন্ত্র নিশ্চিত করতে কার্যকর ব্যবস্থা নেয়া।