রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের (রাবি) হোসেন শহীদ সোহরাওয়ার্দী হলে এক ছাত্রকে বেধড়ক মারধর করে হলছাড়া করার অভিযোগ উঠেছে এক ছাত্রলীগ নেতাসহ কয়েক কর্মীর বিরুদ্ধে। মারধরের পাশাপাশি হিন্দু ধর্মাবলম্বী ওই শিক্ষার্থীকে ‘শিবির’ আখ্যা দিয়ে তাকে হত্যার হুমকি দেয়ারও অভিযোগ পাওয়া গেছে।
ভুক্তভোগী শিক্ষার্থী সবুজ বিশ্বাস এ বিষয়ে বৃহস্পতিবার রাতে হল প্রাধ্যক্ষের কাছে লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন। বিশ্ববিদ্যালয়ের বাংলা বিভাগের ২০২২-২৩ শিক্ষাবর্ষের এই শিক্ষার্থী বুধবার রাতে ছাত্রলীগ নেতাকর্মীদের হাতে নির্যাতনের শিকার হন।
অন্যদিকে অভিযুক্ত ছাত্রলীগ নেতা আতিকুর রহমান আতিক হল শাখা ছাত্রলীগের সহ-সভাপতি। অভিযুক্তদের মধ্যে অজ্ঞাতনামা আরও ৮-১০ জন ছাত্রলীগ কর্মী রয়েছেন। তারা সবাই বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগের সভাপতি মোস্তাফিজুর রহমান বাবুর অনুসারী।
ভুক্তভোগী সবুজ বিশ্বাস অভিযোগপত্রে উল্লেখ করেন, ‘১৬ মে রাত আনুমানিক ২টার দিকে হোসেন শহীদ সোহরাওয়ার্দী হল শাখা ছাত্রলীগের সহ-সভাপতি আতিকুর রহমান আতিক ও তার ৮-১০ জন অনুসারী আমাকে কক্ষ থেকে বের করে হলের ছাদে নিয়ে বেধড়ক মারধর করে এবং শিবির আখ্যা দিয়ে হত্যার হুমকি দেয়।
‘পরবর্তীতে আমি সনাতন ধর্মাবলম্বী বলে জানালে আরও বেশি মারধর করে। আমি প্রাণ রক্ষার্থে দৌড়ে হল ত্যাগ করি। এ অবস্থায় নিরাপত্তা শঙ্কায় আমার পড়াশোনার সুষ্ঠু পরিবেশ ব্যাহত হচ্ছে। বর্তমানে আমি নিরাপত্তাহীনতার কারণে বাড়িতে অবস্থান করছি।’
নিউজবাংলার সঙ্গে কথোপকথনেও সবুজ বিশ্বাস অভিযোগ তুলে ঘটনার একই বর্ণনা দেন। এ সময় আবাসিক শিক্ষার্থী না হয়েও হলে অবস্থানের বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘আমার এক বড় ভাই আমাকে এই হলে তুলেছে। আমি রাজনীতির সাথে জড়িত না।’
তবে কোন বড় ভাই হলে তুলে দিয়েছেন তা জানাতে রাজি হননি এই শিক্ষার্থী।
অভিযোগের বিষয়ে ছাত্রলীগ নেতা আতিকুর রহমান নিউজবাংলাকে বলেন, ‘এসব অভিযোগ মিথ্যা ও ভিত্তিহীন। তাদের অপকর্ম লুকানোর জন্য আমার বিরুদ্ধে এই অভিযোগ। আমি তাকে চিনি না। আমার বিরুদ্ধে এই অভিযোগ প্রমাণ করতে পারলে আমি রাজনীতি ছেড়ে দেব।’
বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগের সভাপতি মোস্তাফিজুর রহমান বাবু বলেন, ‘সোহরাওয়ার্দী হলের যে ঘটনা সেটি আমি জানার সঙ্গে সঙ্গে উভয় পক্ষের সঙ্গে কথা বলি। বিষয়টির সমাধান করে দেওয়া হয়েছে।
‘লিখিত অভিযোগ পুরোপুরি সত্যি নয়। সবুজ ওই হলের আবাসিক কোনো শিক্ষার্থী নয়। আবাসিকতা ছাড়া হলে থাকার কোনো প্রশ্নই আসে না।’
এ বিষয়ে জানতে চাইলে সোহরাওয়ার্দী হলের প্রাধ্যক্ষ মো. জাহাঙ্গীর হোসেন নিউজবাংলা বলেন, ‘আমরা অভিযোগপত্র পেয়েছি। হল প্রশাসন থেকে দুই পক্ষের সঙ্গে কথা বলে তদন্তসাপেক্ষে ব্যবস্থা নেয়া হবে।’