ক্যাম্পাসের ভেতরে দোকান থাকলেও রান্না হতো বাইরে। বাইরের সেই কিচেন থেকে প্রতিদিন বিরিয়ানি ও খিচুড়ি রান্না করে এনে বিক্রি করা হতো ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের (ইবি) জিয়া মোড়ে অবস্থিত ঢাকা বিরিয়ানী হাউজে। তবে অবিক্রীত মুরগির মাংস ও রাইস পরদিন গরম করে আবারও শিক্ষার্থীদের খাওয়ানো হতো- এমন অভিযোগ পাওয়া গেছে দোকানটির বিরুদ্ধে।
বুধবার বিকেল ৫টার দিকে পচা খাবার পরিবেশনের অভিযোগে দোকানটি প্রক্টরিয়াল বডির উপস্থিতিতে বন্ধ করে দেয়া হয়েছে। এ সময় প্রক্টরিয়াল বডির মধ্যে সহকারী প্রক্টর ড. মো. আমজাদ হোসেন, মো. ইয়ামিন মাসুম, মো. নাসির মিয়া ও নিরাপত্তা শাখার সদস্যরা উপস্থিত ছিলেন।
সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা যায়, দোকানটিতে দুপুরে খাবার খেতে বসেন ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক নাসিম আহমেদ জয়। খাবারের মেনুতে ছিল মোরগ-পোলাও। খাবার খাওয়ার সময় পরিবেশিত রোস্টটি বাসি বলে অভিযোগ তার।
দোকান কর্তৃপক্ষ বিষয়টি স্বীকার করে নিয়ে বলেন, বাবুর্চি ভুল করে দিয়ে দিয়েছেন। এতে ক্ষুব্ধ হয়ে জয় এ ঘটনার সঠিক বিচার দাবি করেন। তবে এর আগেও পচা-বাসি পরিবেশন করা হয়েছে এমন অভিযোগ অন্য অনেক সাধারণ শিক্ষার্থীর।
ইবি ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক জয় বলেন, ‘এই দোকান থেকে প্রতিদিন ক্যাম্পাসের দুই থেকে আড়াই হাজার শিক্ষার্থী খাবার নিচ্ছে। তাদের সবার সঙ্গে এই অন্যায়টা হচ্ছে। এমন অনেক শিক্ষার্থী আছে যারা খাওয়া-দাওয়া করে এ অন্যায়টুকু মেনে নিয়ে চলে যায়। কিন্তু আমি একজন সাধারণ শিক্ষার্থী হিসেবে প্রতিবাদ করছি।’
তিনি আরও বলেন, ‘আমি চাই সাংবাদিক, সাধারণ শিক্ষার্থীদের প্রতিনিধি এবং প্রশাসনসহ এ বিষয়ে বসে সবার সামনে কথা দোকানি কথা দেবে যে, তারা শিক্ষার্থীদের ভালো খাবার খাওয়াবে, শিক্ষার্থীদের ঠকাবে না। তারপর তাদের ব্যবসা পুনরায় শুরু করতে পারবে।’
ঘটনাস্থলে থাকা জাকারিয়া নামের এক শিক্ষার্থী বলেন, ‘এটি ক্যাম্পাসের ভেতরে প্রথম বিরিয়ানির দোকান। প্রথম দিকে খাবারের মান ভালো থাকায় এবং দামে সাশ্রয়ী হওয়ায় অনেকেই এখানে ভিড় করতো। তবে দিন দিন খাবারের মান কমতে থাকে, শিক্ষার্থীও আসা কমে যায়। এরপর অতিরিক্ত লাভের আশায় তারা হয়তো পচা তরকারি পুনরায় বিক্রি করত।’
এ বিষয়ে দোকানের কর্মচারী বাবুর্চির ওপর দোষ চাপিয়ে বলেন, ‘একজন শিক্ষার্থী খাবার খেতে আসলে তার প্লেটে যে খাবারটা দেয়া হয়েছিল তাতে একটু সমস্যা ছিল। কিন্তু এ ব্যাপারে আমি জানতাম না। এদিকে বাবুর্চি হয়তো আগের খাবারের সাথে নতুন খাবার মিক্স করে দিয়েছিল। বাবুর্চি ভুল করে থাকলে দোকানের কর্মচারী হিসেবে এতে আমার কিছু করার থাকে না।’
সার্বিক বিষয়ে সহকারী প্রক্টর মো. ইয়ামিন মাসুম বলেন, ‘শিক্ষার্থীদের স্বার্থে খারাপ খাবারের বিষয়টি বিবেচনা করে আমরা সাময়িক দোকানে তালা লাগিয়ে দিয়েছি। পরবর্তীতে প্রশাসনিক সিদ্ধান্ত অনুযায়ী ব্যবস্থা নেয়া হবে।’