দেশের শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলো স্বাভাবিক নিয়মে সপ্তাহে দু’দিন শুক্র ও শনিবার ছুটি থাকছে। তবে আগামী বছর থেকে সাপ্তাহিক ছুটি কেবল শুক্রবারে সীমিত করা হতে পারে। সেক্ষেত্রে শনিবার স্কুল খোলা রাখার এই ছুটি রমজানে স্কুল বন্ধ রেখে সমন্বয় করার সিদ্ধান্ত আসতে পারে।
শিক্ষামন্ত্রী মহিবুল হাসান চৌধুরী মঙ্গলবার আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা ইনস্টিটিউটে এক আলোচনা সভায় এমন তথ্য জানান।
মহান স্বাধীনতা দিবস ও জাতীয় দিবস উপলক্ষে ‘জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ঐতিহাসিক নেতৃত্ব এবং দেশের উন্নয়ন’ শীর্ষক এই আলোচনার আয়োজন করে শিক্ষা মন্ত্রণালয়।
মঙ্গলবার আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা ইনস্টিটিউটে আলোচনা সভায় বক্তব্য দেন শিক্ষামন্ত্রী মহিবুল হাসান চৌধুরী। ছবি: সংগৃহীত
আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে শিক্ষামন্ত্রী বলেন, ‘পবিত্র রমজান মাসে বিদ্যালয় খোলা থাকা নিয়ে নানা ধরনের প্রচার-অপপ্রচার হয়েছে। যেহেতু এ বছর বিষয়টি এভাবে এসেছে, আগামীতে আমরা বিষয়টি কাঠামোর মধ্যে নিয়ে আসার চেষ্টা করব।’
তিনি বলেন, ‘বছরে ৫৩ সপ্তাহে ৫২টি শনিবার রয়েছে। সেখানে যদি বিদ্যালয় কিছুটা খোলা রাখি, তাহলে রমজানের ক্ষেত্রে বিতর্ক সৃষ্টির অপপ্রয়াস যারা করছে তাদের সেই অপপ্রয়াস বন্ধ করা যাবে।
‘সে লক্ষ্যে আমরা একটি পরিকল্পনা করব। যাতে এটা নিয়ে আবারও কেউ আদালতে গিয়ে মিথ্যা বুঝিয়ে বিভ্রান্তি সৃষ্টি করে রায় নিয়ে এসে অপচেষ্টা করতে না পারে, রাস্তায় এসে মানববন্ধন করতে না পারে। আমরা সংবেদনশীলতার জায়গায় শ্রদ্ধাশীল। আমরা আলেম-ওলামার সঙ্গেও আলোচনা করব। তাদেরও একটা অবস্থান আছে এটা নিয়ে।’
মহিবুল হাসান বলেন, ‘মুসলিম সংখ্যাগরিষ্ঠ বাংলাদেশে অন্য পাবিভিন্ন ধর্মের মানুষও রয়েছে। এদের মধ্যে এক ধরনের মানুষ রয়েছে যারা অবিশ্বাস, সহিংসতামূলক ও শ্রেষ্ঠত্বমূলক মনোভাব সৃষ্টি করে বিভিন্ন সময়ে অস্থিতিশীল অবস্থা সৃষ্টি করতে চায়। পাঠক্রম থেকে শুরু করে পাঠ্যবইকেও ওসিলা বানিয়ে তারা এসব অস্থিতিশীলতা তৈরি করে।
‘আমরা অনেক ধর্মপ্রাণ ব্যক্তি এবং ধর্মীয় নেতৃবৃন্দের সঙ্গে আলোচনা করেছি। তারা আমাদের অনেক উপদেশ দিয়েছেন, যাতে কেউ কোনো ধরনের বিতর্ক সৃষ্টির প্রয়াস না পায়। আমরা সব বিষয় আরও কেয়ারফুলি দেখব।’
শিক্ষামন্ত্রী আরও বলেন, ‘সমাজে বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি করতে পারে এমন ধরনের ইঙ্গিত পেলেও সেটার নিরসন করা হবে। এই বিশৃঙ্খলা সৃষ্টির চেষ্টা শিক্ষাব্যবস্থাকে একধরনের গোঁড়ামির দিকে নিয়ে যাওয়ার অপচেষ্টা। আর এটা দীর্ঘদিন ধরেই বিদ্যমান।’
আলোচনা সভায় বিশেষ অতিথি ছিলেন শিক্ষা প্রতিমন্ত্রী বেগম শামসুন নাহার।
সভাপতিত্ব করেন মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা বিভাগের সচিব সোলেমান খান।
অন্যদের মধ্যে বক্তব্য দেন কারিগরি ও মাদ্রাসা শিক্ষা বিভাগের সচিব ফরিদ উদ্দিন আহমদ ও বাংলাদেশ অ্যাক্রেডিটেশন কাউন্সিলের চেয়ারম্যান প্রফেসর ড. মেসবাহউদ্দিন আহমেদ।
প্রসঙ্গত, চলতি বছরে প্রাথমিক বিদ্যালয় রমজানে ১০ দিন এবং মাধ্যমিক বিদ্যালয় ১৫ দিন খোলা রাখার সিদ্ধান্ত নেয় সরকার। বিষয়টি আদালত পর্যন্তও গড়িয়েছে।