শফিকুর রহমান ওরফে শফিক মুন্সির বিরুদ্ধে বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়ের (ববি) ছাত্রীকে উত্ত্যক্তের অভিযোগের সত্যতা পেয়েছে প্রক্টরিয়াল বডি ও বিভাগীয় তদন্ত কমিটি। এর পরিপ্রেক্ষিতে ববি’র রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগের সাবেক এই শিক্ষার্থীর ক্যাম্পাসে প্রবেশে নিষেধাজ্ঞা দিয়েছে প্রশাসন। এছাড়াও ছাত্রীর পক্ষে আইনি পদক্ষেপ গ্রহণে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন পাশে থাকবে বলে জানানো হয়েছে।
রোববার বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের পক্ষে গণমাধ্যমকে বিষয়টির সত্যতা নিশ্চিত করেছেন প্রক্টর সহযোগী অধ্যাপক ড. মো. আব্দুল কাইউম।
তিনি বলেন, ‘দুটি তদন্ত কমিটির প্রতিবেদন সমন্বয় করে একটি প্রতিবেদন আমরা উপাচার্য দপ্তরে পাঠিয়েছি। ভুক্তভোগী ছাত্রীর নিরাপত্তায় বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন সার্বিক সহযোগিতা করে আসছে এবং আগামীতেও করবে। সর্বোপরি আমরা সব শিক্ষার্থীর নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে বদ্ধপরিকর।’
জানা গেছে, প্রক্টরিয়াল বডির তদন্ত কমিটি ও বিভাগীয় তদন্ত কমিটির সমন্বিত প্রতিবেদনে তিনটি বিষয়ে সুপারিশ করা হয়েছে।
তা হলো- মো. শফিকুর রহমানকে (শফিক মুন্সী) বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে প্রবেশের ক্ষেত্রে নিষেধাজ্ঞা প্রদানে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে পারে। অভিযোগকারী শিক্ষার্থী নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছেন বলে প্রতীয়মাণ হওয়ায় তার নিরাপত্তার জন্য আইনি পদক্ষেপ গ্রহণের ক্ষেত্রে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন কর্তৃক সহযোগিতা দেয়া হবে।
এছাড়া বিশ্ববিদ্যালয়ের সব শিক্ষার্থীর নিরাপদ শিক্ষাজীবন নিশ্চিত করতে সাবেক শিক্ষার্থী/অছাত্র/বহিরাগতদের ক্যাম্পাস/হলে অবৈধভাবে অবস্থান নিষিদ্ধ করতে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহণ করা যেতে পারে।
তদন্ত প্রতিবেদন অনুযায়ী বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন ব্যবস্থা নেবে কিনা- এমন প্রশ্নে উপাচার্য অধ্যাপক ড. বদরুজ্জামান ভূঁইয়া বলেন, ‘আমরা সব সময় ভুক্তভোগী নারী শিক্ষার্থীর পাশে আছি। তার নিরাপত্তার জন্য সব ধরনের ব্যবস্থা আমরা নেব। এছাড়া আইনি পদক্ষেপ নিলে ছাত্রীকে আমরা সহায়তা করব।’
জানা যায়, এর আগেও নারী উত্ত্যক্তের ঘটনায় শফিক মুন্সি বরিশালের কোতোয়ালি থানায় দুটি মুচলেকা দেন। এর মধ্যে ২০২২ সালের ২৫ ডিসেম্বর প্রথম এবং ২০২৩ সালের ২৩ ডিসেম্বর দ্বিতীয় মুচলেকা দেন তিনি।
প্রসঙ্গত, মিথ্যা সংবাদ প্রচার ও ভয়ভীতি দেখিয়ে এক নারী শিক্ষার্থীর সঙ্গে সম্পর্ক স্থাপনের চেষ্টার অভিযোগ এনে শফিক মুন্সির বিরুদ্ধে ২৩ জানুয়ারি ভুক্তভোগী শিক্ষার্থী বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর বরাবর নিরাপত্তা শঙ্কার কথা উল্লেখ করে অভিযোগ দেন। এর ভিত্তিতে ৬ ফেব্রুয়ারি তদন্ত কমিটি গঠন করে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন৷ এতে বিভাগীয় ও প্রক্টরিয়াল বডির দুটি ভিন্ন তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়। ১২ ফেব্রুয়ারি সেই তদন্ত প্রতিবেদন জমা দেয়া হয়।
প্রসঙ্গত, বিশ্ববিদ্যালয়ের লেখাপড়া শেষ হলেও শফিক মুন্সী শেরে বাংলা হলের ৪০২১ নম্বর কক্ষ দীর্ঘদিন দখল করে রাখেন। বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগের একাংশের সঙ্গে ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক রেখে এমন কর্মকাণ্ড চালিয়ে যান তিনি। এমনকি বিভিন্ন সময় বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের সঙ্গে ছাত্রলীগের ব্যানারে শলাপরামর্শ করতেও দেখা গেছে তাকে।